জয়পুরের ট্যাঙ্কর বিস্ফোরণের ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল। —ফাইল চিত্র।
রাজস্থানের জয়পুরে সিএনজি ট্যাঙ্কার দুর্ঘটনা এবং বিস্ফোরণে নিজের বোনকে হারিয়েছেন তিনি। ঝলসে গিয়েছে তাঁর দেহ। মুখ দেখে চেনার উপায় ছিল না। ছ’ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর শেষ পর্যন্ত মৃতের পায়ের আংটি দেখে বোনকে শনাক্ত করলেন বাসরাম মীনা! বোনকে চিনতে পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি।
শুক্রবার জয়পুর-অজমের হাইওয়ের ধারে পেট্রল পাম্পের কাছে দাঁড় করানো একটি সিএনজি ট্যাঙ্কারে ধাক্কা মারে এলপিজি বোঝাই ট্রাক। সেই সংঘর্ষে সিএনজি ট্যাঙ্কার লিক হয়ে যায়। তার পরেই আগুন ধরে গিয়ে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন অনিতা মীনা। রাজস্থান পুলিশে কনস্টেবল পদে কাজ করতেন তিনি। শুক্রবার ডুডু থেকে জয়পুরে বাসে করে ডিউটির জন্য যাচ্ছিলেন। ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণের কবলে পড়ে আগুন লাগে ওই বাসটিতে।
বাসরাম জানান, শুক্রবার সকালে অনীতার স্বামী তাঁকে ফোন করে বলেন তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। বার বার ফোন করেও কোনও উত্তর মেলেনি। তখনই আশঙ্কা হয় বাসরামের। তাঁর কথায়, ‘‘সকালেই টিভিতে জয়পুরের বিস্ফোরণের খবর দেখেছি। অনীতার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না শুনেই ঘটনাস্থলে পৌঁছই। কিন্তু পুরো এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেও বোনের কোনও সন্ধান পাইনি।’’
ঘটনাস্থলে খবর নিয়ে বাসরাম জানতে পারেন হতাহতদের এসএমএস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে। হাসপাতালের বার্ন ওয়ার্ডে খোঁজাখুঁজি করেও কোনও লাভ হয়নি। হতাশ হয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সোজা শ্মশানে যান বাসরাম। সেখানেই বোনের খোঁজ পান। তাঁর কথায়, ‘‘অনীতার শরীর মারাত্মক ভাবে পুড়ে গিয়েছিল। দেখে চেনাই যাচ্ছিল না। আমার কাছে তাঁর যে ছবি ছিল তাতে অনীতার পায়ে একটি আংটি ছিল। সেই আংটি দেখেই চিনতে পারি।’’
জয়পুরে সিএনজি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণের ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৩০ জনের চিকিৎসা চলছে। ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি, মৃত এবং আহতদের পরিবারের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করেছে তারা। মৃতদের পরিবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারও মৃতদের পরিবারের জন্য আলাদা ভাবে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। তবে কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, রাজ্য সরকারের কাছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০ জানুয়ারির মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy