Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

বিশ্বাসেই প্রমাণ রাম জন্মস্থানের, যুক্তি সুপ্রিম কোর্টে

অযোধ্যার বিতর্কিত জমিই যে রামের জন্মস্থান, ভক্তদের বিশ্বাসই তার অকাট্য প্রমাণ। সুপ্রিম কোর্টে খোদ রামলালা বিরাজমানই এই দাবি করলেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৫
Share: Save:

বিশ্বাসে মিলায় বস্তু!

অযোধ্যার বিতর্কিত জমিই যে রামের জন্মস্থান, ভক্তদের বিশ্বাসই তার অকাট্য প্রমাণ। সুপ্রিম কোর্টে খোদ রামলালা বিরাজমানই এই দাবি করলেন। রামলালা বিরাজমানের আইনজীবী কে পরাশরণের যুক্তি, রাম জন্মভূমিতেই দেবতার প্রকাশ ঘটেছে। তাই তাঁর জন্মভূমি হিন্দুদের কাছে পূজনীয় হয়ে উঠেছে।

সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ প্রশ্ন তুলেছে, আর কোথাও কি কোনও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের জন্মস্থান নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে? বিচারপতি শরদ এ বোবদে বলেন, ‘‘যিশু খ্রিস্টের জন্ম বেথেলহেমে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কি দুনিয়ার কোনও আদালতে মামলা হয়েছে?’’ রামলালার আইনজীবী তার জবাব দিতে পারেননি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কিত জমির মামলাতে রামলালা বিরাজমান নিজেই এক জন মামলাকারী। রামের হয়ে রামের ভক্তরা মামলা ঠুকেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে আজ ছিল শুনানির দ্বিতীয় দিন। রামলালা বিরাজমানের হয়ে আইনজীবী পরাশরণ যুক্তি দেন, বাল্মীকি রামায়ণের তিন জায়গায় বলা রয়েছে, অযোধ্যাতেই রামের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু ওই বিতর্কিত জমিতেই যে রামের জন্ম হয়েছিল, তার

প্রমাণ কী? পরাশরণের জবাব, ‘‘এত শতক পেরিয়ে যাওয়ার পরে কী ভাবে আমরা প্রমাণ করব যে রামের জন্ম ওখানেই হয়েছিল!’’ তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ লক্ষ ভক্তের বিশ্বাস যে ওই নির্দিষ্ট স্থানেই রাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে মন্দির ছিল। এটাই প্রমাণ।’’

মুসলিমদের অভিযোগ ছিল, ১৯৪৯-এর ২২ ডিসেম্বর রাতে বাবরি মসজিদের মধ্যে রামের মূর্তি রেখে আসা হয়েছিল। পরাশরণের যুক্তি, যদি এক মূহূর্তের জন্য মেনে নেওয়া যায় ওই রাতে রামের মূর্তি সেখানে রাখা ভুল ছিল, তা হলে সরকার জমির দখল নেওয়ার পরেও মূর্তি থেকে গেল কী করে? ভুল কাজ নিশ্চয়ই চলতে দেওয়া হত না। ভুল কাজ হলে আদালত ওখানে মূর্তি রেখে দেওয়ার নির্দেশ দিত না। মন্দির থাকলে সেখানে মূর্তি থাকবেই। বিচারপতি বোবদে প্রশ্ন করেন, মূর্তি কত পুরনো, তা জানতে কার্বন

ডেটিং করানো হয়েছে কি না। পরাশরণ যুক্তি দেন, পুরাণ, ঐতিহাসিক দস্তাবেজে মন্দিরের প্রমাণ রয়েছে। বাবরি মসজিদের জমিতেই যে রামের মন্দির ছিল, তা প্রমাণ করতে পরাশরণের দাবি, ব্রিটিশ জমানায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও মেনে নিয়েছিল যে বাবরি মসজিদের জায়গায় আগে মন্দির ছিল।

মঙ্গলবার শুনানির প্রথম দিনে নির্মোহী আখড়া দাবি করেছিল, রামজন্মভূমিতে রামের মন্দিরে তারাই সেবায়েত ছিল। চিরকালই সেখানে তাঁদের দখল ছিল। তাই তাঁদেরই গোটা এলাকার দখল পাওয়া উচিত। আজ সুপ্রিম কোর্ট এর প্রমাণ চাওয়ায় নির্মোহী আখড়ার জবাব, ১৯৮২ সালে ডাকাতিতে সব নথি চুরি হয়ে গিয়েছে।

বিচারপতিদের প্রশ্ন ছিল, রাজস্ব নথি, অন্য নথি বা মৌখিক কোনও প্রমাণ কি রয়েছে? আখড়ার জবাব, ডাকাতিতে সব খোয়া গিয়েছে। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, সরকারি খতিয়ান তো থাকবে। সেটাও কি ডাকাতেরা নিয়ে গিয়েছে?

আখড়ার আইনজীবী সুশীল কুমার জৈন বলেন, ‘‘শুধু দখল নয়, আমার মন্দির ব্যবস্থাপনার অধিকারও চলে গিয়েছে। সেবায়েতরা শুধু মন্দির চালায় না। তাঁদের কিছুটা মালিকানারও অধিকার থাকে।’’ বিচারপতিরা প্রশ্ন করেন, রাজস্ব নথি ছাড়া সেবায়েত হিসেবে অধিকার প্রমাণের জন্য আর কী নথি রয়েছে? নির্মোহী আখড়া প্রমাণ জোগাড়ে বাড়তি সময় চেয়ে নিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Ram Temple Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy