দিল্লির আলোচনাসভায় নির্মলা সীতারামন। পিটিআই।
আগামী বছর কড়া মূল্যবৃদ্ধির কবলে পড়তে চলেছে গোটা বিশ্ব। ভারত যার প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। এখন থেকেই তার মোকাবিলার জন্য কোমর বাঁধতে হবে আন্তর্জাতিক কর্তাদের। আজ জি-২০ গোষ্ঠী দেশগুলির প্রতিনিধিত্বমূলক একটি আলোচনাসভায় এ ভাবেই সতর্ক করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং নীতি আয়োগের প্রাক্তন কর্তা তথা জি-২০ শেরপা অমিতাভ কান্থ। তাঁদের বক্তব্য, এমন একটি সময়ে ভারত জি ২০-র প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পেতে চলেছে (১ ডিসেম্বর থেকে এক বছর) যখন গোটা বিশ্ব বিভিন্ন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। কান্থের কথায়, “শুধু শুকনো বিবৃতি নয়, জি-২০-র কর্তাদের মানবিক ভূমিকা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে হবে।” পাশাপাশি নির্মলা মনে করেন, “ভারত জি ২০-র দায়িত্ব নিতে চলেছে এক উথালপাথাল সময়ে। কিন্তু অন্য দেশগুলির তুলনায় সম্ভবত ভারত কিছুটা স্বস্তিজনক জায়গায় থাকবে।”
অমিতাভ কান্থ তাঁর বক্তৃতায় আজ বলেন, “ভারত এমন একটা সময়ে জি ২০-র দায়িত্ব নিতে চলেছে যখন গোটা বিশ্ব বহুখণ্ডিত হয়ে রয়েছে। ঋণের ভার বাড়ছে, বাড়ছে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা। আন্তর্জাতিক অর্থনীতি বেহাল, ইউরোপে সংঘাত চলছে। এখনই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রয়োজন বহুপাক্ষিকতাকে নীতি নির্ধারণের কেন্দ্রে নিয়ে আসা। হাতে কলমে ফল আসবে এমন সব পদক্ষেপের কথা ভাবার সময় এসেছে।”
ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে ডিসেম্বরে জি-২০-এর দায়িত্ব নিচ্ছে ভারত। এক বছর পরে যা বর্তাবে ব্রাজিল এবং তার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার উপরে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ইন্দোনেশিয়া, ভারত, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা চারটি দেশেরই উন্নয়নশীল অর্থনীতি। কান্থের বক্তব্য, “আগামী এক বছরে আমাদের স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ ভাবে লক্ষ্যমুখী হয়ে কাজ এগোতে হবে। জি ২০-কে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বৃদ্ধির বাহন করে তোলা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কমে ২.৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনের যুদ্ধ, খাদ্য সঙ্কট, মুদ্রাস্ফীতির বাড়বাড়ন্ত। আমেরিকা, চিন এবং ইউরোপীয় ব্লকের অর্থনীতি ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছে। তাও সবচেয়ে খারাপ সময়টা এখনও আসেনি। ২০২৩–এ পরিস্থিতি মারাত্মক হবে বলে মনে করছেন অনেক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ।” এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জি-২০-কে খুবই শক্তিশালী বার্তা দিতে হবে বলে জানাচ্ছেন তিনি।
পাশাপাশি ওই একই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, “আন্তর্জাতিক স্তরে যা হচ্ছে ভারতের মতো মাঝারি আয়ের দেশে তার প্রভাব পড়ছে অবশ্যই। আমরা চেষ্টা করব আন্তর্জাতিক নীতি এবং কর নীতিকে এমন ভাবে রাখার যাতে ঋণের বোঝায় ভারাক্রান্ত দেশগুলির বিষয়ে একটা ঐকমত্য তৈরি করা যায়। জি ২০-এর সেই ঐকমত্য তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে। বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থার যা ভান্ডার রয়েছে তা তারা পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছে না।”
নির্মলার কথায়, ‘‘উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রগুলিকে প্রয়োজনীয় অর্থ সাহা্য্য করতে হবে এই সংস্থাগুলিকে। কিন্তু এমন ভাবে করতে হবে যাতে ঋণ নিতে গিয়ে দেশগুলি ফেঁসে না যায়।’’ তাঁর কথায়, “জি-২০ বৈঠকে অগ্রাধিকার পেতে চলেছে ক্রিপ্টোকারেন্সি-কে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে তা নিয়ে আলোচনা। কোনও একা দেশের পক্ষে এটা আলাদা ভাবে করা সম্ভব নয়। আইএমএফ-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকেও এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy