Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
National news

স্বাধীন ভারতের ৭৫৯ নম্বর, ধনঞ্জয়ের পর ধর্ষণ ও খুনে দেশে প্রথম ফাঁসি হল নির্ভয়া কাণ্ডের চার অপরাধীর

অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে প্রাণদণ্ড ভাল না খারাপ? যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তির যেন শেষ নেই।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ১০:১৮
Share: Save:
০১ ১৯
অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে প্রাণদণ্ড ভাল না খারাপ? যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তির যেন শেষ নেই। হয়তো কোনও দিনই মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে ও বিপক্ষে রকমারি তত্ত্ব আর বিস্তর তথ্যের সওয়াল-জবাব মন্থন করে কোনও শেষ উত্তর উঠে আসবে না। প্রশ্নটা থেকেই যাবে।

অপরাধের সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে প্রাণদণ্ড ভাল না খারাপ? যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তির যেন শেষ নেই। হয়তো কোনও দিনই মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে ও বিপক্ষে রকমারি তত্ত্ব আর বিস্তর তথ্যের সওয়াল-জবাব মন্থন করে কোনও শেষ উত্তর উঠে আসবে না। প্রশ্নটা থেকেই যাবে।

০২ ১৯
২০১২ সালের এক গণধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। ছয় জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের মধ্যে এক জন জেলের ভিতরে আত্মঘাতী হয়েছে। একজন নাবালক সাজার মেয়াদ শেষ করে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে।

২০১২ সালের এক গণধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। ছয় জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের মধ্যে এক জন জেলের ভিতরে আত্মঘাতী হয়েছে। একজন নাবালক সাজার মেয়াদ শেষ করে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে।

০৩ ১৯
আর বাকি চার দণ্ডিত পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা, মুকেশ কুমার ও অক্ষয়কুমার সিংহকে আজ, শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিহাড় জেলে ফাঁসি দেওয়া হল।

আর বাকি চার দণ্ডিত পবন গুপ্ত, বিনয় শর্মা, মুকেশ কুমার ও অক্ষয়কুমার সিংহকে আজ, শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় তিহাড় জেলে ফাঁসি দেওয়া হল।

০৪ ১৯
এই চার জনই প্রথম নয় যাদের মৃত্যুদণ্ড দিল ভারতীয় বিচারবিভাগ। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই ৭৩ বছরে অনেক জনকেই ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।

এই চার জনই প্রথম নয় যাদের মৃত্যুদণ্ড দিল ভারতীয় বিচারবিভাগ। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এই ৭৩ বছরে অনেক জনকেই ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।

০৫ ১৯
ঠিক কতজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকবশত তার নির্দিষ্ট কোনও সরকারি হিসাব নেই।  ২০১৬ সালে দিল্লির ন্যাশনাল ল ইউনির্ভাসিটি (এনএলইউ)-র তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৭-এর পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৭৫৫ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এ বার তার সঙ্গে আরও ৪ যোগ হয়ে দাঁড়াল ৭৫৯। এই সমীক্ষা করার সময়ই  এনএলইউ জানিয়েছিল, “খুব দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কারাকর্তা এবং সরকারি বিভিন্ন বিভাগের কাছে ফাঁসি নিয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।”

ঠিক কতজনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকবশত তার নির্দিষ্ট কোনও সরকারি হিসাব নেই। ২০১৬ সালে দিল্লির ন্যাশনাল ল ইউনির্ভাসিটি (এনএলইউ)-র তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৭-এর পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৭৫৫ জনকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। এ বার তার সঙ্গে আরও ৪ যোগ হয়ে দাঁড়াল ৭৫৯। এই সমীক্ষা করার সময়ই এনএলইউ জানিয়েছিল, “খুব দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কারাকর্তা এবং সরকারি বিভিন্ন বিভাগের কাছে ফাঁসি নিয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।”

০৬ ১৯
এর অর্ধেক সংখ্যক ফাঁসিই হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। তারপর রয়েছে হরিয়ানা। ওই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯০ জনের ফাঁসি হয়েছে। তার পর রয়েছে মধ্যেপ্রদেশ। সেখানে ৭৩ জনের ফাঁসি হয়েছে।

এর অর্ধেক সংখ্যক ফাঁসিই হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। তারপর রয়েছে হরিয়ানা। ওই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯০ জনের ফাঁসি হয়েছে। তার পর রয়েছে মধ্যেপ্রদেশ। সেখানে ৭৩ জনের ফাঁসি হয়েছে।

০৭ ১৯
স্বাধীন ভারতের প্রথম ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল নাথুরাম গডসেকে। মহাত্মা গাঁধীকে গুলি করার জন্যই ফাঁসির সাজা হয়েছিল তার। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি গাঁধীকে গুলি করা হয়েছিল।

স্বাধীন ভারতের প্রথম ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল নাথুরাম গডসেকে। মহাত্মা গাঁধীকে গুলি করার জন্যই ফাঁসির সাজা হয়েছিল তার। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি গাঁধীকে গুলি করা হয়েছিল।

০৮ ১৯
নয়াদিল্লির বিড়লা হাউসের পিছনের লনে সিঁড়ির মাথায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। বেদির দিকে এগোচ্ছিলেন। হঠাত্ই পথ আগলে দাঁড়াল বন্দুকধারী নাথুরাম গডসে। পর পর তিনটি বুলেট। লুটিয়ে পড়লেন রক্তাক্ত গাঁধী।

নয়াদিল্লির বিড়লা হাউসের পিছনের লনে সিঁড়ির মাথায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। বেদির দিকে এগোচ্ছিলেন। হঠাত্ই পথ আগলে দাঁড়াল বন্দুকধারী নাথুরাম গডসে। পর পর তিনটি বুলেট। লুটিয়ে পড়লেন রক্তাক্ত গাঁধী।

০৯ ১৯
হরিয়ানার অম্বালা সেন্ট্রাল জেলে ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর নাথুরাম গডসেকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।

হরিয়ানার অম্বালা সেন্ট্রাল জেলে ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর নাথুরাম গডসেকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।

১০ ১৯
তার পর নানা সময়ে, নানা অপরাধের শাস্তি হিসাবে ভারতীয় বিচার বিভাগ অনেক দণ্ডিতকেই ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে। তাদের মধ্যে অবশ্য সকলের ফাঁসি হয়নি। অনেকেরই শেষমেশ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

তার পর নানা সময়ে, নানা অপরাধের শাস্তি হিসাবে ভারতীয় বিচার বিভাগ অনেক দণ্ডিতকেই ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে। তাদের মধ্যে অবশ্য সকলের ফাঁসি হয়নি। অনেকেরই শেষমেশ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

১১ ১৯
আজকের আগে দেশ শেষ ফাঁসি দেখেছে ২০১৫ সালে। ১৯৯৩ সালে মুম্বই বিস্ফোরণে দোষী ইয়াকুব মেননের ফাঁসি হয় সে দিন। মহারাষ্ট্রের নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই ফাঁসি হয় তার।

আজকের আগে দেশ শেষ ফাঁসি দেখেছে ২০১৫ সালে। ১৯৯৩ সালে মুম্বই বিস্ফোরণে দোষী ইয়াকুব মেননের ফাঁসি হয় সে দিন। মহারাষ্ট্রের নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই ফাঁসি হয় তার।

১২ ১৯
ইয়াকুব মেননের আগে ২০০২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ফাঁসির সাজা শোনানো হয় মহম্মদ আফজল গুরুকে। ২০০১ সালের সংসদ হামলায় দোষী আফজল গুরু। তবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দশ বছর পর ২০১৩ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি তিহাড় সেন্ট্রাল জেলে তার ফাঁসি হয়।

ইয়াকুব মেননের আগে ২০০২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ফাঁসির সাজা শোনানো হয় মহম্মদ আফজল গুরুকে। ২০০১ সালের সংসদ হামলায় দোষী আফজল গুরু। তবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দশ বছর পর ২০১৩ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি তিহাড় সেন্ট্রাল জেলে তার ফাঁসি হয়।

১৩ ১৯
তার আগে ফাঁসি হয়েছিল আরও এক সন্ত্রাসবাদীর। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার ঘটনায় দণ্ডিত আজমল কসাবকে ২০১০ সালের ৬ মে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করার দু’বছর পর ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর তার ফাঁসি হয়।

তার আগে ফাঁসি হয়েছিল আরও এক সন্ত্রাসবাদীর। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার ঘটনায় দণ্ডিত আজমল কসাবকে ২০১০ সালের ৬ মে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করার দু’বছর পর ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর তার ফাঁসি হয়।

১৪ ১৯
কসাব এবং আজমল গুরু দু’জনকেই  খুব গোপনে ফাঁসি দেওয়া হযেছিল। ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পর তাদের ফাঁসির খবর প্রকাশ করা হয়।

কসাব এবং আজমল গুরু দু’জনকেই খুব গোপনে ফাঁসি দেওয়া হযেছিল। ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পর তাদের ফাঁসির খবর প্রকাশ করা হয়।

১৫ ১৯
কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার অটো শঙ্কর। তার প্রকৃত নাম গৌরী শঙ্কর। ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল তামিলনাড়ুর সালেম সেন্ট্রাল জেলে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। পর পর ছ’টা খুন করেছিল সে।

কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার অটো শঙ্কর। তার প্রকৃত নাম গৌরী শঙ্কর। ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল তামিলনাড়ুর সালেম সেন্ট্রাল জেলে তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। পর পর ছ’টা খুন করেছিল সে।

১৬ ১৯
ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। ১৪ বছরের নাবালিকা হেতাল পারেখকে ধর্ষণ এবং খুনের অপরাধে ধনঞ্জয়ের ফাঁসি হয়েছিল। ২০০৪ সালের ১৪ অগস্ট আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে তার ফাঁসি হয়। তার ফাঁসি বহু বিতর্কিত। তাকে নিয়ে বাংলা ফিল্মও হয়েছে।

ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। ১৪ বছরের নাবালিকা হেতাল পারেখকে ধর্ষণ এবং খুনের অপরাধে ধনঞ্জয়ের ফাঁসি হয়েছিল। ২০০৪ সালের ১৪ অগস্ট আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে তার ফাঁসি হয়। তার ফাঁসি বহু বিতর্কিত। তাকে নিয়ে বাংলা ফিল্মও হয়েছে।

১৭ ১৯
নির্ভয়ার এই চার দণ্ডিতের আগে গত ২০ বছরে ধর্ষণ এবং খুনের দায়ে একমাত্র ধনঞ্জয়েরই ফাঁসি হয়েছে। বাকিরা বেশির ভাগই ছিল সন্ত্রাসবাদী এবং খুনি।

নির্ভয়ার এই চার দণ্ডিতের আগে গত ২০ বছরে ধর্ষণ এবং খুনের দায়ে একমাত্র ধনঞ্জয়েরই ফাঁসি হয়েছে। বাকিরা বেশির ভাগই ছিল সন্ত্রাসবাদী এবং খুনি।

১৮ ১৯
স্বাধীন ভারতে এখনও পর্যন্ত একজন মহিলারই ফাঁসি হয়েছে। তিন কিশোরীকে খুনের অপরাধে ১৯৫৫ সালে রতনবাঈ জৈন নামে এক মহিলার ফাঁসি হয়। এর পর এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলার ফাঁসি দেখেনি দেশ। এই তালিকায় ঠাঁই হতে পারে সীমা মোহন গোভিত এবং তার বোন রেনুকা কিরণ শিন্ডের। দু’জনেই শিশু অপহরণ এবং খুনের আসামি। তারা ১৩টা অপহরণ এবং ৯টা খুন করেছে।

স্বাধীন ভারতে এখনও পর্যন্ত একজন মহিলারই ফাঁসি হয়েছে। তিন কিশোরীকে খুনের অপরাধে ১৯৫৫ সালে রতনবাঈ জৈন নামে এক মহিলার ফাঁসি হয়। এর পর এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলার ফাঁসি দেখেনি দেশ। এই তালিকায় ঠাঁই হতে পারে সীমা মোহন গোভিত এবং তার বোন রেনুকা কিরণ শিন্ডের। দু’জনেই শিশু অপহরণ এবং খুনের আসামি। তারা ১৩টা অপহরণ এবং ৯টা খুন করেছে।

১৯ ১৯
১৯৯৬ সালে তারা গ্রেফতার হয়। তাদের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছিল তাদের মা অঞ্জনাও। ২০০৬ সালে ৩১ অগস্ট তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয় সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৫ সালের ১৪ অগস্ট তাদের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেন তত্কালীন রাষ্ট্রপতি। এই নিয়ে এখনও আইনি লড়াই চলছে।

১৯৯৬ সালে তারা গ্রেফতার হয়। তাদের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছিল তাদের মা অঞ্জনাও। ২০০৬ সালে ৩১ অগস্ট তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয় সর্বোচ্চ আদালত। ২০১৫ সালের ১৪ অগস্ট তাদের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেন তত্কালীন রাষ্ট্রপতি। এই নিয়ে এখনও আইনি লড়াই চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE