Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
National News

এক বছরে ৩ বার বাংলাদেশে দেবেন্দ্র! নেপথ্যে অন্য কিছু, উত্তর খুঁজছে এনআইএ

প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে ২০১৯ সালের মধ্যে তিন বার দেবেন্দ্র বাংলাদেশে গিয়েছিলেন এবং প্রতিবারই বেশ কিছু দিন করে কাটিয়েছেন ঢাকায়।

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ। —ফাইল চিত্র

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৫০
Share: Save:

শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই তিন বার বাংলাদেশে গিয়েছেন। প্রতি বারই থেকেছেন বেশ কিছুদিন করে। সেখানে কি আইএসআই এজেন্টদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে ধরা পড়া ডিএসপি দেবেন্দ্র সিংহ? হিজবুল মুজাহিদিন ছাড়া অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গেও কি তার যোগাযোগ ছিল? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্ত শুরু করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ।

গত ১১ জানুয়ারি কুলগামের কাছে তিন জঙ্গির সঙ্গে একই গাড়িতে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করা হয় দেবেন্দ্র সিংহকে। তাঁর সঙ্গেই ধরা পড়ে হিজবুল জঙ্গি নাভিদ বাবু ও আতিফ এবং স্থানীয় এক আইনজীবী তথা জঙ্গিদের সাহায্যকারী ইরফান মির। উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গ্রেনেড। তার পর থেকেই পুলিশ ও গোয়েন্দা মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা, গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র), সেনা গোয়েন্দা সহ নানা বিভাগের গোয়েন্দারা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর দেবেন্দ্র ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলা রুজু করেছে এনআইএ। এ বার তাঁর সঙ্গে আইএসআই বা পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীর যোগসূত্রের খোঁজে তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করল এনআইএ। বিগত প্রায় এক দশক ধরে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং পাক জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ উঠলেও দেবেন্দ্রর উর্দিতে এ পর্যন্ত কালির দাগ পড়েনি। এ বার সেই বিষয়টিই প্রতিষ্ঠা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণরেখায় উন্নতমানের ক্যামেরা-টাওয়ার বসাচ্ছে পাকিস্তান, গোয়েন্দা রিপোর্টে উদ্বেগ

প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে ২০১৯ সালের মধ্যে তিন বার দেবেন্দ্র বাংলাদেশে গিয়েছিলেন এবং প্রতিবারই বেশ কিছু দিন করে কাটিয়েছেন ঢাকায়। সেখানে তাঁর কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য জোগাড়ের কাজ শুরু করেছেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। দেবেন্দ্রর দুই মেয়ে বাংলাদেশে এমবিবিএস পড়ছেন। কারণ হিসেবে দেবেন্দ্র সেটা দেখালেও প্রকৃত উদ্দেশ্য অন্য হতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের সন্দেহ রয়েছে, ঢাকায় আইএসআই-এর লোকজনের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ হতে পারে এবং কথা হতে পারে দেবেন্দ্রর। এ ছাড়া জঙ্গি দলের সদস্যদের সঙ্গেও তাঁর দেখা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভারত থেকে বাংলাদেশে পড়তে যাওয়ার নজির সাধারণত অত্যন্ত কম। এবং এই ধরনের ঘটনা বিরলও বলা চলে। কিন্তু দেবেন্দ্রর দুই মেয়েকেই ঢাকায় পড়তে পাঠানোর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের সূত্রে খবর। দেবেন্দ্র দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী বা আইএসআই চালাতে পারে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। সেই সূত্রেই দেবেন্দ্রর সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে ‘বিসদৃশ’ লেনদেনের খোঁজ চলছে।

আরও পডু়ন: ভারতে বোমা ফেলেছিলেন, তাঁর ছেলে আদনান সামিকে নাগরিকত্ব দিয়েছেন! সিএএ-র বিরুদ্ধে সরব রাজা মুরাদ

যে জঙ্গির সঙ্গে দেবেন্দ্র ধরা পড়েছে, সেই নাভিদ বাবুর মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ২০ লক্ষ টাকা। অন্য দিকে তদন্তকারীদের দাবি, দেবেন্দ্র জেরায় স্বীকার করেছেন, জঙ্গিদের ‘সেফ প্যাসেজ’ দিতে তাদের কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। নাভিদকে গ্রেফতার করলে যেখানে ২০ লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা, সেখানে ১২ লক্ষ টাকায় রফা করে কেন জঙ্গিদের সাহায্য করলেন দেবেন্দ্র, এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। অর্থাৎ শুধুমাত্র জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়া নয়, পিছনে আরও অনেক বড় কারণ থাকতে পারে বলেই ধরে নিচ্ছেন গোয়েন্দারা।

পাশাপাশি দেবেন্দ্র একা, নাকি আরও কোনও পুলিশ অফিসার এই চক্রে জড়িত, তা নিয়েও শুরু হয়েছে তদন্ত। ফলে উপত্যকার পুলিশকর্মী-অফিসার মহলেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Jammu And Kashmir Davinder Singh Bangladesh NIA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy