ছোট্ট একটি হৃদয়কে সচল রাখতে দিন রাত এক করে প্রাণপাত করছিলেন চিকিৎসকরা। নাওয়া খাওয়া ভুলেছিলেন বাবা-মা। চার মাসের বিদিশা জানেও না জীবনের কত কঠিন কঠিন পথগুলো পেরিয়ে যাচ্ছে সে। তবু সব বাধা কাটিয়ে নার্স দাদা-দিদির কাছে সে এখন ‘মিরাকেল বেবি’।
মুম্বইয়ের বি জে ওয়াদিয়া হাসপাতাল। ৬ বার হার্ট অ্যাটাকের পরেও জীবনের লড়াই ছাড়েনি চার মাসের বিদিশা। চলেছে টানা ১২ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার। বিদিশার মতোই অপারেশন থিয়েটারের বাইরে হাল ছাড়েননি বাবা-মা।
কল্যাণ রেসিডেন্সের বাসিন্দা বিশাখা আর বিনোদ ওয়াঘমারে। বি জে ওয়াদিয়া হাসপাতালে চার মাস আগে জন্ম হয়েছিল বিদিশার। জন্মের দু’দিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বিদিশাকে।
বিদিশার যখন দেড় মাস বয়স তখনই হঠাৎ একদিন ‘ফিড’ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে সে।
‘‘খেতে খেতে খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ও। বমি করছিল। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিল,’’ জানালেন মা বিশাখা। এই ঘটনার পরেই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বিদিশাকে। দেখা যায়, একরত্তি মেয়ের হৃদপিণ্ডে রয়েছে বড়সড় সমস্যা। আর্টারির ট্রান্সপজিশনের জন্যই সমস্যা হচ্ছে বিদিশার।
আরও পড়ুন: ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে ইউরিনাল বানাল পাঁচ বালক
ওয়াদিয়া হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক কার্ডিয়াক সার্জেন বিশ্ব পাণ্ডে জানালেন, বিদিশার হার্টের অ্যানাটমি সাধারণ হৃদপিণ্ডের একেবারে বিপরীত। এই অবস্থার জন্যই রক্তে অক্সিজেনের সরবরাহে সমস্যা হচ্ছিল। উল্টে রক্তে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল তিন গুণ। এর পরেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। টানা ১২ ঘণ্টা অস্ত্রোপচার হয় বিদিশার।
অস্ত্রোপচারের পরেও ৫১ দিন আইসিইউ-র ঠান্ডা ঘরে চলেছে যমে মানুষে টানাটানি। এই ক’দিনে ৬ বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বিদিশার। শেষ পর্যন্ত অবশ্য খুদের প্রাণ শক্তির কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে মৃত্যু।
পাঁচ লক্ষ টাকা বিল হয়েছিল হাসপাতালের। কোনও রকমে চেয়ে চিন্তে জোগাড় হয়েছিল ২৫ হাজার। অনেকেই এগিয়ে এসেছিলেন বিদিশাকে সাহায্য করতে।
কোকিলাবেন অম্বানি হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সুরেশ রাও জানালেন, ‘‘এই ঘটনা খুবই বিরল। হাই ফ্রিকোয়েন্সি ভেন্টিলেটর থেকেও যে বিদিশা ‘সার্ভাইভ’ করতে পেরেছে এটা খুবই আনন্দের খবর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy