নয়া শিক্ষানীতিতে হিন্দি আবশ্যিক করার জল্পনা ওড়ালেন প্রকাশ জাভড়েকর। —ফাইল চিত্র
সারা দেশে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি আবশ্যিক করা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। কে কস্তুরীরঙ্গন কমিটির ‘নিউ এডুকেশন পলিসি’ (এনইপি) বা শিক্ষা নীতি সামনে আসতেই সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার। বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর আশ্বাস দিয়েছেন, কোনও ভাষাই চাপিয়ে দেওয়া হবে না।
কে কস্তুরীরঙ্গন কমিটির সুপারিশে বলা হয়েছেসারা দেশে এক শিক্ষানীতির কথা। ভাষা, বিজ্ঞান ও অঙ্ক, এবং দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা-এই ত্রিমুখী নীতিতে বলা হয়েছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দির পাঠ বাধ্যতামূলক বা আবশ্যিক। বিজ্ঞান এবং অঙ্ক সারা দেশে একই রকম সিলেবাস। এছাড়াও জোর দেওয়া হয়েছে কর্মদক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষার উপর। তবে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আঞ্চলিক ভাষায় পঠনপাঠনের জন্য সিলেবাস তৈরির কথাও বলা হয়েছে কমিটির সুপারিশে।
এই রিপোর্টের বিষয়বস্তু বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য এবং রাজনৈতিক দলগুলি। বিশেষ করে দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে। আবার এনডিএ-র শরিক শিবসেনাও তীব্র বিরোধীতা করেছে। ডিএমকে নেতা এ সর্বানন বলেন, ‘‘এই সরকার সব সময় সব কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা এর বিরোধিতা করব। মাতৃভাষা ছাড়া যে কোনও ভাষাই আমাদের কাছে ভিনগ্রহের প্রাণীর মতো।’’ তেলুগু দেশম পার্টির লঙ্কা দিনাকরের বক্তব্য, ‘‘কোনও কিছু চাপিয়ে দেওয়া সমাজের পক্ষে ক্ষতিকারক।’’
আরও পড়ুন: সরলেন বিচারপতি ললিত, অযোধ্যা মামলা ফের পিছোল, শুনানি ২৯ জানুয়ারি
প্রতিবাদ এসেছে খোদ শাসক জোট এনডিএ-র শরিক শিবসেনার তরফেও। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার নেতা সন্দীপ দেশপাণ্ডে বলেন, ‘‘বিজেপি সব সময়ই হিন্দি, হিন্দু এবং হিন্দুত্ব নিয়ে বাড়াবাড়ি করে। আমরা সব সময়ই বলি, হিন্দি বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়। সমস্ত আঞ্চলিক ভাষাকে সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: অফিসের বাইরে আর ‘বস’-এর ফোন ধরতে হবে না! বেসরকারি বিল এল সংসদে
মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী অবশ্য আগে থেকেই বলে আসছেন, কমিটির রিপোর্ট বাধ্যতামূলক, এমন কিছু নয়। এটা শুধু মাত্র ২০১০ থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত একটি ‘প্রজন্ম’কে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার নীতি তৈরির চেষ্টা। আর কস্তুরীরঙ্গন কমিটির সুপারিশের রিপোর্ট সামনে আসার পর তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমের একটি অংশে বিভ্রান্তিমূলক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেই কারণেই এ কথা স্পষ্ট করা দরকার যে, নয়া শিক্ষা নীতিতে কমিটির খসড়া রিপোর্টে কোনও ভাষা আবশ্যিক করার কথা বলা হয়নি।’’
বর্তমান কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি তৈরি হয় ১৯৯২ সালে। ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর নয়া শিক্ষা নীতি তৈরির জন্য নিয়োগ করে কে কস্তুরীরঙ্গন কমিটি। প্রাক্তন ইসরো চেয়ারম্যান কস্তুরিরঙ্গন ছাড়াও কমিটিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রের আরও আট জন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। ২০১৭ সালে কমিটির রিপোর্ট পেশ করার কথা থাকলেও একাধিক বার কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছে কমিটি। কেন্দ্রের একটি সূত্রের খবর, সম্প্রতি ওই রিপোর্টের খসড়া জমা দিয়েছে কস্তুরীরঙ্গন কমিটি। তার পরই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ওই রিপোর্টের খসড়ার বিষয় সামনে আসে।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy