স্কুল বসার আগে প্রতিটি পড়ুয়াকে নিদেনপক্ষে এক গ্লাস দুধ এবং একটি ফল দিতে হবে।
মিড-ডে মিল পরিকল্পনায় দুপুরের খাওয়ার পাশাপাশি স্কুল পড়ুয়াদের প্রাতরাশ দেওয়ারও সুপারিশ করা হল জাতীয় শিক্ষা নীতির খসড়ায়। সদ্য প্রকাশিত শিক্ষা নীতির খসড়ায় বলা হয়েছে, সকালে স্কুল শুরুর সময়ে ছাত্রছাত্রীদের একদফা প্রাতরাশের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। খসড়া অনুযায়ী, স্কুল বসার আগে প্রতিটি পড়ুয়াকে নিদেনপক্ষে এক গ্লাস দুধ এবং একটি ফল দিতে হবে। কেন, সেই ব্যাখ্যায় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক বলছে, অধিকাংশ সরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের একটি বড় অংশই হতদরিদ্র পরিবারের। যাদের অধিকাংশই সকালে খালি পেটে স্কুলে আসে। স্কুলের শুরুতেই যদি সেই পড়ুয়াদের পেটে কিছু খাবার পড়ে, তা হলে পড়াশুনো অনেক বেশি ফলপ্রদ হবে। শিক্ষাবিদদের আশা, সে ক্ষেত্রে পড়াশুনোর সার্বিক মান উন্নত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
শিক্ষাকে সকলের কাছে পৌঁছে দিতে নব্বইয়ের দশকে সরকারি স্কুলগুলিতে চালু হয় মিড-ডে মিল প্রকল্প। বর্তমানে ওই পরিকল্পনায় প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য দৈনিক ৪৫০ ক্যালোরি এবং ষষ্ঠ থেকে অষ্টম
শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য দৈনিক ৭০০ ক্যালোরি খাবার হয়। দেশের কুড়ি কোটি মানুষ যেখানে প্রতি রাতে অভুক্ত থাকেন বা আধপেটা খেয়ে ঘুমোতে যান, সেখানে মিড-ডে মিলের সৌজন্যে অন্তত এক বেলা পেট ভরে খাবার পাওয়ায় আশায় সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন বলে সমীক্ষায় জানিয়েছেন প্রায় ৮০ শতাংশ বাবা-মা। তা সত্ত্বেও ভারতের এখনও প্রায় ৪২.৫ শতাংশ শিশু স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজনের। বিশেষ করে ঘাটতি রয়েছে প্রোটিনের। যা সেই শিশুর সার্বিক শারীরিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সেই কারণে খসড়া নীতিতে প্রাতরাশে পড়ুয়াদের দুধের ব্যবস্থা করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। এতে শিশু শরীরে কিছুটা হলেও প্রোটিনের অভাব দূর হবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
ইতিমধ্যেই কেরল ও গুজরাতের সরকারি স্কুলগুলিতে প্রাতরাশ দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু করেছে ওই দুই রাজ্যের সরকার। মন্ত্রকের বক্তব্য, দু’টি রাজ্য থেকেই ইতিবাচক রিপোর্ট এসেছে। কিন্তু প্রাতরাশের জন্য ওই দুই রাজ্যের খাতে বাড়তি অর্থ বরাদ্দ না করায় দুপুরের খাওয়ার বাজেট কাটছাঁট করতে হয়েছে তাদের। বিষয়টি মাথায় রেখে খসড়া নীতিতে বলা হয়েছে, প্রাতরাশের জন্য যে বাড়তি টাকার প্রয়োজন হবে, তার জোগান কেন্দ্রকেই দিতে হবে। সময়ে সময়ে মূল্যবৃদ্ধির সূচকের কথা মাথায় রেখে ওই খাতে বরাদ্দের পরিমাণও বাড়াতে হবে কেন্দ্রকে।
সমস্যা হল, গত পাঁচ বছরে মিড-ডে মিল খাতে অর্থ বরাদ্দ সেই অর্থে বাড়েইনি, উল্টে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে, ইউপিএ আমলের চেয়ে মোদী জমানায় ওই খাতে বরাদ্দ অনেকটাই কমেছে। ইউপিএ সরকারের শেষ বছরে (২০১৩-১৪) মিড-ডে মিল খাতে খরচ ছিল ১০,৯২৭ কোটি টাকা। আর মোদী সরকারের শেষ বছরের অন্তর্বর্তী বাজেটে (২০১৯-২০) ওই খাতে বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা।
অর্থাৎ পাঁচ বছরে ওই খাতে বৃদ্ধি মাত্র ৭৩ কোটি টাকা! কংগ্রেসের রণদীপ সুরজেওয়ালার মতে, ‘‘বাজেট ঘাটতি কমাতে সমস্ত সামাজিক খাতে বরাদ্দ কমিয়েছে মোদী সরকার। তা সে ১০০ দিনের কাজ হোক বা মিড-ডে মিল। ফলে ভবিষ্যতে প্রাতরাশের জন্য বাড়তি অর্থ মোদী সরকার আদৌ বাড়াবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy