ছবি: রয়টার্স।
দীর্ঘস্থায়ী কোভিডের বহুরূপী দাপটের প্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসের আরও ভয়াবহ স্ট্রেন ‘ওমিক্রন’-এর সম্ভাব্য হানার মোকাবিলায় খামতি রাখতে চাইছে না কেন্দ্র। ওমিক্রনে আক্রান্ত দেশ থেকে আসা বা ভারতে আসার পথে ওমিক্রন আক্রান্ত দেশের মাটি ছোঁয়া বিমানের সব যাত্রীর আরটিপিসিআর পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই নিয়ম চালু হয়েছে।
কেন্দ্র জানাচ্ছে, যে-সব দেশে ওমিক্রন হানা দিয়েছে বা দিচ্ছে, মূলত সেখান থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রেই এই পরীক্ষার নিয়ম বাধ্যতামূলক। সেই সঙ্গে যাত্রা পথে ওমিক্রন সংক্রমণ শুরু হয়েছে, এমন কোনও দেশে স্টপ-ওভার থাকলে ভারতে নামামাত্র সংশ্লিষ্ট বিমানের যাত্রীদের আরটিপিসিআর পরীক্ষা করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তৈরি বিপজ্জনক দেশে তালিকায় ইংল্যান্ড-সহ ইউরোপের অধিকাংশ দেশ থাকলেও আমেরিকা নেই। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পিছনে কোভিশিল্ড টিকাকে ঘিরে ইংল্যান্ডের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিবাদের ছায়াও দেখছেন রাজনৈতিক শিবিরের অনেকে। বলা হচ্ছে, ইংল্যান্ডে সে-ভাবে ওমিক্রনের প্রকোপ দেখা দেয়নি। তা সত্ত্বেও ‘হাই রিস্ক’ তালিকায় রাখা হয়েছে ওই দেশের নাম। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কেন্দ্রের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের ফলে এ দেশ থেকে ইংল্যান্ডের যাত্রী কমবে।
পাল্টা যুক্তিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রক এ দিন জানিয়েছে, বর্তমানে যে-দেশগুলিকে বিপজ্জনক তালিকায় রাখা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ইংল্যান্ড-সহ প্রায় গোটা ইউরোপ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, বটসোয়ানা, চিন, মরিশাস, নিউজ়িল্যান্ড, জিম্বাবোয়ে, সিঙ্গাপুর, হংকং ও ইজরায়েল। আমেরিকা-সহ যে-সব দেশে ওমিক্রন হানা দেয়নি, ওই তালিকায় তাদের রাখা হয়নি। কিন্তু আমেরিকা থেকে ভারতের পথে কেউ হংকং হয়ে এলে এ দেশে পা রাখা মাত্রা তাঁকেও পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার যুক্তি, সোমবারেই সেখানে আট জনের শরীরে ওমিক্রন ধরা পড়েছে। স্কটল্যান্ডে সংখ্যাটি ছয়। তাই ঝুঁকি না-নিয়ে ইংল্যান্ডকে বিপজ্জনক তালিকায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কলকাতা থেকে এই মুহূর্তে সপ্তাহে এক দিন সরাসরি লন্ডনের উড়ান চালাচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া। এর বাইরে ‘হাই রিস্ক’ তালিকায় থাকা সিঙ্গাপুর থেকে সোমবার রাতে আবার উড়ান পরিষেবা শুরু হয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সি পট্টাভি মঙ্গলবার জানান, সোমবার রাত পর্যন্ত ‘হাই রিস্ক’ তালিকায় বাংলাদেশ থাকলেও এ দিন সকালে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় নির্দেশে প্রাথমিক ভাবে কলকাতা বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক অ্যারাইভালে স্থানসঙ্কুলান নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান কর্তারা। কারণ, কলকাতায় নেমে আরটিপিসিআর করার অর্থ, সেখানেই ন্যূনতম ছ’ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে যাত্রীদের। বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বলেন, ‘‘পরপর দু’-তিনটি উড়ানের যাত্রীরা চলে এলে একসঙ্গে এত লোককে কোথায় বসানো হবে, তা নিয়ে সকলেই চিন্তিত।’’ তবে এ দিন সকালে তালিকা থেকে বাংলাদেশ বাদ যাওয়ায় সেই আশঙ্কা অনেকটাই কমেছে, জানাচ্ছেন তাঁরা।
পট্টাভি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক অ্যারাইভালে ৩৫০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সারা দিনে যত জনযাত্রীকে কলকাতায় নেমে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে, সেই সংখ্যা ৩৫০-এর বেশি হবে না বলেই মনে করছি আমরা।’’ দিল্লি বিমানবন্দরে একসঙ্গে ১৫০০ জনের পরীক্ষা করা সম্ভব। শুধু লন্ডন বা সিঙ্গাপুরের সরাসরি উড়ান নয়, বিদেশ থেকে যিনিই কলকাতায় আসবেন, তিনি কোন শহর থেকে উড়ান ধরেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি দেখা যায় যে, কেউ ইংল্যান্ড বা সিঙ্গাপুর অথবা হাই রিস্ক তালিকায় থাকা অন্য কোনও দেশ থেকে আসছেন, কলকাতায় নেমে তাঁকে আরটিরিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে বলে জানিয়েছেন অধিকর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy