সংসার চালাতে কাজ করার অধিকার নিশ্চিত করতে চান ২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হামলায় একমাত্র বেকসুর খালাস হওয়া ফাহিম আরশাদ মুহাম্মদ ইউসূফ আনসারি। অটো চালিয়ে সংসার টানতে চাইছেন তিনি। কিন্তু জঙ্গিযোগ সন্দেহে পুলিশ তাঁকে বাণিজ্যিক ভাবে অটো চালানোর ছাড়পত্র (পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট) দিচ্ছে না বলে অভিযোগ আনসারির। তাঁর দাবি, পুলিশের যুক্তি সম্পূর্ণ অন্যায্য। এই অবস্থায় কাজ করার অধিকার নিশ্চিত করতে বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
আনসারির মামলাটির শুনানিহওয়ার কথা ছিল হাই কোর্টের বিচারপতি রেবতীমোহিত দেরে এবং বিচারপতি নীলা গোখলের ডিভিশন বেঞ্চে। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, ওই ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি থেকে সরে গিয়েছে। আগামী ১৮ মার্চ বিচারপতি সারাং কোতওয়ালের ডিভিশন বেঞ্চে আনসারির মামলার শুনানি হবে।
২৬/১১ মুম্বই হামলার মামলায় ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আনসারিকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে পৃথক একটি মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। মুম্বই হামলার মামলায় ২০১০ সালের মে মাসে তাঁকে বেকসুর খালাস করে দেয় আদালত। হামলার মূল চক্রীদের মুম্বইয়ের মানচিত্র সংক্রান্ত বিষয়ে সাহায্য করার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগের কোনও ভিত্তি পায়নি আদালত। পরে ২০১১ বম্বে হাই কোর্টও তাঁকে বেকসুর খালাসের রায়ই বহাল রাখে। হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ২০১২ সালে সরকারপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে, তা খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন:
তবে উত্তরপ্রদেশের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন আনসারি। ১০ বছরের কারাদণ্ড কাটিয়ে ২০১৯ সালে জেল থেকে ছাড়া পান তিনি। জেলমুক্তির পর শুরুর দিকে একটি ছাপাখানায় কাজ করতে থাকেন তিনি। কোভিডকালের আগে পর্যন্ত সেখানেই কাজ করেন। পরে এক প্রতিষ্ঠানের খাবার সরবরাহকারী হিসাবে কাজ শুরু করেন তিনি। সেই কাজ ছেড়ে আবার অন্য একটি ছাপাখানায় যোগ দেন। কিন্তু সেখানের বেতনে সংসার চালাতে সমস্যা হওয়ায় অটো চালানোর সিদ্ধান্ত নেন আনসারি।
‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, গত বছরের জানুয়ারি মাসে তিনচাকার গাড়ি চালানোর লাইসেন্সও পেয়ে যান আনসারি। তবে সমস্যা হয় পুলিশি ছাড়পত্র পেতে। বাণিজ্যিক ভাবে অটো চালানোর জন্য পুলিশি ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। গত বছরের মে মাসে তিনি ওই ছাড়পত্রের জন্য আবেদন জানান। কিন্তু আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তথ্য জানার অধিকার (আরটিআই) আইনের আওতায় আনসারি এর কারণ জানতে চান। তাতে তিনি জানতে পারেন, লস্কর-ই-তইবার সদস্য হওয়ার অভিযোগে ওই আবেদন বাতিল হয়ে গিয়েছে। আনসারির দাবি, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। পুলিশি ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য তাই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।