কুম্ভমেলায় করোনা পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।
করোনা কালে দলে দলে কুম্ভমেলায় ভিড় করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল আগেই। কিন্তু স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ধর্মও সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছিল উত্তরাখণ্ড সরকার। কিন্তু সেই কুম্ভমেলাতেই করোনা পরীক্ষার নামে বড় দুর্নীতি সামনে এল। অভিযোগ, কুম্ভমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রায় ১ লক্ষ মানুষের কোনও করোনা পরীক্ষাই হয়নি। মনগড়া নাম, ফোন নম্বর দিয়ে পরীক্ষা হয়েছে বলে শুধু খাতায়-কলমেই দেখানো হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে বটে, তবে তাতে নাস্তানাবুদ অবস্থা তদন্তকারীদের। ওই ১ লক্ষ ফোন নম্বরে ফোন করে সত্যতা যাচাই করছেন তাঁরা। কিন্তু তাতে দেখা গিয়েছে, খাতায়-কলমে ফোন নম্বর নথিভুক্ত থাকলেও, তাঁদের কেউ কুম্ভমেলায় যোগই দেননি।
কুম্ভমেলায় ভিড় করা নিয়ে বিতর্কের মধ্যে উত্তরাখণ্ড সরকার ১১টি বেসরকারি সংস্থাকে অংশগ্রহণকারী সকলের আরটি-পিসিআর পরীক্ষার বরাত দিয়েছিল, যাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে। কিন্তু ওই ১১টি সংস্থার মধ্যে ‘ম্যাক্স কর্পোরেট সার্ভিসেস’-এর জমা দেওয়া ১ লক্ষ আরটি-পিসিআর পরীক্ষা ঘিরেই সন্দেহ দানা বাঁধে। সেই নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিবকে চিঠি লেখেন পঞ্জাবের ফরিদকোটের বাসিন্দা বিপিন মিত্তল। তাতে জানা, কুম্ভমেলায় যোগই দেননি তিনি। অথচ হরিদ্বার থেকে তাঁর আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে।
এই অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ৮ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্তকারী দল(সিট) গঠন করেছে তারা। ধরে ধরে তালিকায় উল্লেখিত প্রত্যেক নম্বের ফোন করে বিষয়টি যাচাই করছে তারা। এখনও পর্যন্ত যে রিপোর্ট এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, একের পর এক নম্বর ডায়াল করে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কুম্ভমেলায় যোগই দেননি। তাই ‘ম্যাক্স কর্পোরেট সার্ভিসেস’ এবং আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য তাদের নিয়োগ করা নলওয়া ল্যাবস এবং ডক্টর লালচন্দানি ল্যাবসের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগ উঠছে। হরিদ্বার জেলা প্রশাসনের তরফেও আলাদা করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ওই বেসরকারি সংস্থা এবং দুই গবেষণা সংস্থার বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা, ভুয়ো নথি দাখিল, ধারা ২৬৯ (বিপজ্জনক সংক্রমণ নিয়ে দায়িত্বজ্ঞাহীনতা), ১২০-বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র)-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। কুম্ভমেলা কর্তৃপক্ষও বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর। শুধু তাই নয়, আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করার জন্য যে লাইসেন্স থাকা দরকার, নলওয়া ল্যাবস-এর তা নেই বলে জানা গিয়েছে। যে ১ লক্ষ ৪ হাজার ৭৯৬টি পরীক্ষার তালিকা জমা পড়েছিল উত্তরাখণ্ড সরকারের কাছে, তার মধ্যে ৩ হাজার ৯২৫টি একই ফোন নম্বর দিয়ে নথিভুক্ত রয়েছে বলে পাওয়া গিয়েছে। এ ব্যাপারে কুম্ভমেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও ‘ম্যাক্স কর্পোরেট সার্ভিসেস’ যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর বাতিলের দাবি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy