ফাইল চিত্র।
সমুদ্রনীলের মধ্যে ঊষর লালের ইতস্তত ছিটে। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে এমন একটি ছবি। যাকে বলা যেতে পারে, রাজধানী দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকার মরীচিকা-মানচিত্র।
ইকোস্ট্রেস নামে নাসার একটি উপগ্রহ মহাকাশ থেকে মাটির তাপমাত্রা মাপে। সেটি গত ৫ থেকে ১৩ মে দিল্লি ও সংলগ্ন প্রায় সাড়ে বারো হাজার বর্গ কিলোমিটারের পরিসংখ্যান নিয়েছে। তার ভিত্তিতে লালে দাগিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘তাপ দ্বীপ’ বা ‘হিট আইল্যান্ড’। সেখানে তাপমাত্রা দিনে ৩৯ ডিগ্রি আর রাতে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে থাকছে; আশপাশের থেকে অন্তত ৪-৫ ডিগ্রি বেশি। পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, শহরে প্রাকৃতিক ভূরূপ যত কংক্রিটে ছেয়ে যায়, তত তাপ ধরে রাখতে শুরু করে। আর তার ফলে হয় এমনটা।
রবিবার দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আশু ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রির আশপাশেই থিতু হবে বলে জানানো হয়েছে। সোমবার মেঘলা সকালে দিল্লির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩০.৮ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি। আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ২২ শতাংশ। উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমে আগামী দু’দিন তাপপ্রবাহ আর পূর্বে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সোমবার রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশে পারদ পতনের প্রবণতা লক্ষ করা গিয়েছে।
ছায়া দুর্লভ। ২০১৩ সালে কেদারনাথে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয়ের পরে পরিবেশবিদেরা ভঙ্গিল হিমালয়ের জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সতর্ক করেন। সেই সময়েই উত্তর ভারতে বেপরোয়া অরণ্য ধ্বংসের দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তাঁরা। এ বছর মার্চে সর্বভারতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১২২ বছরে সর্বোচ্চ। পরিসংখ্যান বলছে, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, বিহার বা মধ্যপ্রদেশের পাশাপাশি হিমাচলপ্রদেশ, হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, উত্তরাখণ্ডের মতো তুলনায় ঠান্ডা বলে পরিচিত রাজ্যগুলিতেও এ বার গরম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
সম্প্রতি বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের এ বারের গরম জলবায়ু পরির্তনের ফল নয়, তার ইঙ্গিত বলা চলে। গত দু’দশকে পরিবেশবিদেরা বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও উন্নয়নের নামে সড়ক ও পরিকাঠামো নির্মাণ, নগরায়ন, শিল্পায়নের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলেছে অপরিনামদর্শী ও পরিকল্পনাহীন যথেচ্ছাচার। সরকারি তথ্যই বলছে, গত দু’দশকে প্রাকৃতিক শক্তির মধ্যে বজ্রপাতের পরেই সব থেকে প্রাণঘাতী গরম। অধিকাংশ মৃত্যু ৩০-৪৫ বছরের পুরুষের, যাঁরা মূলত খোলা জায়গায় কাজ করা শ্রমিক। ফলে সরকারি সক্রিয়তা এবং সদিচ্ছা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
তবে হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, সচরাচর জুনের গোড়ায় এসে থাকা বর্ষা এ বার ২৭ মে কেরলে হাজির হতে পারে। রবিবার ৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে কেরল ও লক্ষদ্বীপের কিছু এলাকায়। কেরলের পাঁচটি জেলায় জারি হয়েছে ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy