প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
হিন্দুত্বের ধ্বজা ওড়ানো, বিপুল অর্থের প্রকল্প ঘোষণা, বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার বিলির মতো খয়রাতি, জাতীয়তাবাদের আবেগকে তুঙ্গে নিয়ে যাওয়া— গুজরাতে ভোট ঘোষণার ঠিক কয়েক দিন আগে এই সব ক’টিকেই প্রচারের অস্ত্র করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীকে প্রচারের সুযোগ করে দিতেই হিমাচল প্রদেশের সঙ্গে ভোট ঘোষণা হয়নি গুজরাতে।
আগামিকাল থেকে মোদীর ঝটিকা সফরের শুরু। যা চলবে দীপাবলি পর্যন্ত। কাল গুজরাতের গান্ধীনগরে শুরু হচ্ছে ডিফেন্স এক্সপো। নিজের রাজ্যে বিনিয়োগের লক্ষ্যে ওই এক্সপোর উদ্বোধন করা ছাড়াও সব মিলিয়ে পাঁচটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শিলান্যাস করবেন ১৫,৬৭০ কোটি টাকার প্রকল্পের। দু’দিনের গুজরাত সফরে জুনাগড় ও রাজকোট, কেবড়িয়ার মতো কয়েকটি জায়গায় পরিকাঠামোগত বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা মোদীর। গুজরাতবাসীর মন জিততে দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে দু’টি করে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার। পিএনজি ও সিএনজি-তে ভ্যাট কমিয়ে খয়রাতির মাধ্যমে মন জিততে মরিয়া শাসক বিজেপি। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, গুজরাত নিয়ে বিজেপি নেতাদের যে হাঁটু কাঁপছে, তা প্রধানমন্ত্রীর একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা থেকেই স্পষ্ট। নিজের রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর ভয় পাচ্ছেন মোদী।
বিরোধীদের মতে, বিপুল অর্থের প্রকল্প ঘোষণার পরে যদি কোথাও খামতি থেকে যায় তা পূরণে দু’রাজ্যে ভোটের আগে হিন্দুত্বের অস্ত্রও ঝালিয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন কেদারনাথ ও বদ্রীনাথ। দুই ধামের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে ৩৫০০ কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস করার কথা তাঁর। আগামী ২৩ অক্টোবর উত্তর ভারতে ‘ছোটি দিওয়ালি’র দিন অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে রামলালার দর্শন ও পুজো করবেন তিনি। আর মাঝের দিনটি অর্থাৎ ২২ অক্টোবর উত্তরাখণ্ডে স্থানীয় বাসিন্দাদের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আওতায় নির্মিত বাড়ির ‘গৃহ প্রবেশম’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীরা বলছেন, ভোটমুখী হিমাচল লাগোয়া উত্তরাখণ্ডে প্রকল্পের উদ্বোধনের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী রাজ্যের ভোটারদের বার্তা দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন মোদী। আর জাতীয়তাবাদের বার্তা দিতে দীপাবলির দিন গত আট বছরের মতো এবারও সীমান্তের কোনও সেনা ছাউনিতে যেতে পারেন তিনি। যদিও নিরাপত্তার কারণে তিনি কোন সেনা শিবিরে যাবেন তা গোপন রাখা হয়েছে। অনেকের মতে, মোদীর ওই কর্মসূচি শেষ হতেই গুজরাতে ভোট ঘোষণা করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন।
কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী যাতে দীপাবলি পর্যন্ত সময়কে নানা ভাবে গুজরাতের ভোটের জন্য কাজে লাগাতে পারেন, তাই কমিশন হিমাচলের সঙ্গে গুজরাতের ভোট ঘোষণা করেনি। মোদী এতদিন খয়রাতির সমালোচনা করছিলেন। এখন গুজরাতে ভোটের আগে বিজেপি খয়রাতি শুরু করছে। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন হিমাচলের সঙ্গে গুজরাতে ভোট ঘোষণা না করে বিজেপিকে সুযোগ দিয়েছে। যাতে বিজেপি জনগণের টাকা খরচ করে ভোটারদের প্রলোভিত করতে পারে। গুজরাত বাদে গোটা দেশে আমূল দুধের দাম লিটার প্রতি ২ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গুজরাতের বিজেপি সরকার রাজকোষের ১,৬৫০ কোটি টাকা খরচ করে দু’টি বিনামূল্যে সিলিন্ডার দিতে চলেছে। সিএনজি, পিএনজি-তে ভ্যাট কমিয়েছে। বিজেপির নিয়ম ভাঙার শেষ নেই।’’ কমিশনকে নিশানা করে ইয়েচুরির অভিযোগ যাদের গণতন্ত্র রক্ষা করার দায়িত্ব, তারাও বিজেপিকে সাহায্য করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy