চিন, রাশিয়ার সঙ্গে তিক্ততা কাটিয়ে কিছুটা ক্ষত মেরামতির চেষ্টা। সেই সঙ্গেই আবার কড়া বার্তা পাকিস্তানকে।
আজ দিল্লিতে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ক একটি সম্মেলনে (রাইসিনা সংলাপ) ৬৫টি দেশের প্রতিনিধির সামনে নরম-গরমের এই কৌশলই নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান, ক্ষমতায় আসার পর প্রতিবেশী-কূটনীতিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী সেই সৌজন্যের মর্যাদা দেয়নি। ইসলামাবাদকে গোটা বিশ্বের সামনে কোণঠাসা করতে মোদী বলেন, ‘‘প্রতিবেশী দেশ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে চলি আমরা। সে জন্যই আমার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তান-সহ সার্কের দেশগুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। লাহৌরেও গিয়েছিলাম।’’ এর পরই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভারত একাই শান্তির পথে হাঁটবে, এটা হতে পারে না। পাকিস্তানকেও এগিয়ে আসতে হবে। ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হলে সন্ত্রাসের পথ ছাড়তে হবে।’’
উরি হামলার পরে পাকিস্তানকে একঘরে করার লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই প্রয়াস মুখ থুবড়ে পড়েছে। আজ তাই কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে পাকিস্তানের ‘সব রকম আবহাওয়ার সঙ্গী’ চিনকেও কিছুটা কূটনৈতিক মলম লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। মোদী বলেন, ‘‘এশিয়ার দুই বৃহৎ শক্তির সমন্বয় থাকলে শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, গোটা বিশ্বই প্রবল ভাবে উপকৃত হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দু’টি বড় দেশের মতপার্থক্য থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু আঞ্চলিক শান্তির প্রশ্নে সবারই সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন।’’ তবে অনেকে মনে করছেন, সংবেদনশীলতার প্রশ্ন তুলে মোদী বেজিং-এর বিভিন্ন পদক্ষেপে দিল্লির অস্বস্তিকে বোঝাতে চেয়েছেন।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে চিন ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক করিডর নিয়ে বারবার অভিযোগ তুলেছে দিল্লি। পাশাপাশি মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দেওয়া থেকে পরমাণু জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ হিসেবে ভারতের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব— সবেতেই বাদ সেধেছে বেজিং। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, চিন এবং পাকিস্তান—একই সঙ্গে বৈরিতার দু’টি দরজা খুলে রাখার পিছনে মূল হোতা ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। কিন্তু বিষয়টি নীতিগত ভাবে সমালোচিত হয়। দেখা যায়, এই যুগ্ম বৈরিতার ফসল তুলেছে ইসলামাবাদ, ভারত ক্রমশই আরও চাপে পড়ছে। এ ব্যাপারে বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর এবং ডোভালের মতপার্থক্যও গোপন থাকেনি সাউথ ব্লকে। ভারত এখন কৌশলী পদক্ষেপ করতে চাইছে।
একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক মহড়া নিয়ে তিক্ততাকে পাশে সরিয়ে আজ মস্কো সম্পর্কেও ইতিবাচক পথে হাঁটার কথা বলেছেন মোদী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি ও পুতিন বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছি। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা গভীর হয়েছে।’’ মোদী জানান, আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য নিরাপত্তা এবং শিল্প ক্ষেত্রে যে কৌশলগত সম্পর্ক, নতুন জমানাতেও অব্যাহত থাকার আশ্বাস তিনি পেয়েছেন ট্রাম্পের কাছ থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy