রাজকোটে নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনের আগে জাতীয়তাবাদের সুর চড়াতে ‘পাকিস্তান অস্ত্রে’ই ভরসা রাখলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ ওই রাজ্যের বনাসকাঁঠার দিসাতে বায়ুসেনা ঘাঁটির শিলান্যাস অনুষ্ঠানে নিশানা করলেন পাকিস্তানকে। ওই প্রতিবেশী দেশের নাম না-করে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘‘পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে আসা যে কোনও দুঃসাহসের জবাব দেবে গুজরাতের দিসার এই বায়ুসেনা ঘাঁটি।’’ বায়ুসেনার দাবি, পশ্চিম দিক থেকে হামলা হলে বিশেষ করে আমদাবাদ, ভাবনগরের শিল্প এলাকাকে শত্রু পক্ষের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ওই ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
গুজরাতে ভোট ঘোষণার ঠিক আগে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করতে ওই রাজ্যে দু’দিনের সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ সকালে প্রথমে গান্ধীনগরে ডিফেন্স এক্সপোর উদ্বোধন করেন তিনি। পরে ওই এক্সপো থেকেই দিসার ওই বায়ুসেনার ঘাঁটির শিলান্যাস করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে দিসার দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার। তাই পশ্চিম দিক থেকে আসা যে কোনও দুঃসাহসের জবাব দিতে পারবে ওই বায়ুসেনা ঘাঁটি।’’
বক্তৃতায় নাম না করলেও পশ্চিম দিক আসা আক্রমণ বোঝাতে প্রধানমন্ত্রী যে পাকিস্তানের কথা বোঝাতে চেয়েছেন তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, মোদী গান্ধীনগরের ডিফেন্স এক্সপোর মঞ্চ থেকে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন বলেই, বাধ্যবাধকতার কারণে আজ পাকিস্তানের নাম নেননি। ভবিষ্যতে ভোট প্রচারে সম্ভবত নাম করেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়াবেন তিনি। কারণ অতীতেও ভোটের আগে জাতীয়তাবাদকে উস্কে দিতে গুজরাতের প্রচারে পাকিস্তান তাস খেলতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। পাঁচ বছর আগে এই বনাসকাঁঠাতে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে পাকিস্তান প্রশাসনের সুসম্পর্ক নিয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার গুজরাত নির্বাচনের আগে বিজেপিকে হারাতে তৎকালীন ভারত নিযুক্ত পাক হাইকমিশনারের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছিলেন। বৈঠকের বিষয় ছিল, গুজরাতে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় আনা। এক পাক সেনাপ্রধান গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সনিয়া গান্ধীর ব্যক্তিগত সচিব অহমেদ পটেলের নাম সুপারিশ করেছিলেন। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও মোদী যে জাতীয়তাদের হাওয়াকে উস্কে দিতে পাকিস্তানের আক্রমণ শানানোর পথে হাঁটবেন, তার ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রীর আজকের বক্তৃতা থেকে মিলেছে।
প্রধানমন্ত্রী যে ডিফেন্স এক্সপোর শিলান্যাস করলেন, তাতে এ বারের অংশগ্রহণকারী প্রতিটি সংস্থাই ভারতীয়। ফলে ভারতীয় সংস্থাগুলির ব্যবসা বৃদ্ধি পাবে বলে আশাপ্রকাশ করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘আট বছর আগে বিজেপি যখন কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল, তখন ভারত সামরিক অস্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে বিশ্বে প্রথম ছিল। সেই নীতি পাল্টে দেশ এখন দেশেই সামরিক অস্ত্র, গোলাবারুদের উৎপাদন শুরু হয়েছে। গত আট বছরে বিদেশেও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও উপকরণের ক্ষেত্রে আটগুণ রফতানি বৃদ্ধি হয়েছে। ভারতে তৈরি ব্রহ্মোস এখন অন্যতম উন্নত ও বিপজ্জনক ক্ষেপণাস্ত্র। অনেক দেশ তা কিনতে আগ্রহী হয়েছে। অনেক দেশই যুদ্ধবিমান তেজস কেনার প্রশ্নে আগ্রহ দেখিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy