ফাইল চিত্র
প্রচারের ঢাক-ঢোল পুরোদস্তুর তৈরি। শুধু মঙ্গলবার সন্ধ্যার অপেক্ষা। ওই দিনই চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসের (এপ্রিল থেকে জুন) বৃদ্ধির হার প্রকাশ করবে কেন্দ্র। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং বিভিন্ন মূল্যায়ন সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এ বার তা ২০ শতাংশ ছুঁইছুঁই হওয়ার সম্ভাবনা। আর সেটি হলেই ‘নরেন্দ্র মোদী অর্থনীতির হাল ফেরালেন’ বলে প্রচারে নেমে পড়তে তৈরি মোদী সরকারের প্রায় সমস্ত মন্ত্রী তথা বিজেপির শীর্ষ নেতারা।
অর্থনীতিবিদরা অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত অর্থবর্ষের (২০২০-২১) এই একই সময়ে (এপ্রিল-জুন) দেশ জোড়া লকডাউনে কার্যত ‘তালাবন্দি’ অর্থনীতির সঙ্গে তুলনার কারণেই বৃদ্ধির হারে এমন বিশাল লাফ। আসলে ২০% বৃদ্ধির পরেও কোভিড পূর্ববর্তী সময়ের মাপে ফিরতে পারবে না দেশের অর্থনীতি। কিন্তু অর্থনীতি আর অঙ্কের এই ‘কচকচিতে’ সাধারণ মানুষ তেমন মাথা ঘামাবেন না ধরে নিয়েই প্রচারের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র ও বিজেপি।
অর্থনীতিবিদদের কথায়, এ বার এপ্রিল-জুনে দেশের অর্থনীতির বহর বা জিডিপি কী হারে বেড়েছে, তা মাপা হবে গত বছরের এপ্রিল-জুনের তুলনায়। কিন্তু ওই সময়ে কোভিড ও লকডাউনের ধাক্কায় বৃদ্ধি তো দূর, অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছিল ২৪.৪%। অর্থাৎ, গত বছরের ৩১ মার্চ জিডিপি ১০০ টাকা হলে, জুনে তা কমে হয়েছিল ৭৫.৬ টাকা। এখন তার সাপেক্ষে ২০% বৃদ্ধির মানে, জিডিপি ৯০.৭২ টাকা। সেই কারণেই বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, পাটিগণিতের সহজ হিসেবেই জিডিপি যদি ২৪.৪% কমে গিয়ে, তার পরে ২০ শতাংশও বাড়ে, তা হলেও সেটি আগের জায়গায় পৌঁছতে পারে না।
অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তাই বলছেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এপ্রিল-জুনে বৃদ্ধির হার ১৮.৫ শতাংশে পৌঁছবে। সেই পূর্বাভাস সত্যি হলেও অর্থনীতি কোভিডের আগের অবস্থা ছুঁতে পারবে না।”
বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য মনে করছে, অঙ্ক যা-ই বলুক, বাস্তবে বৃদ্ধির হার ১৮-২০ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছে শুনে আমজনতার মধ্যে বার্তা যাবে যে, অর্থনীতির মরা গাঙে ফের জোয়ার এসেছে। তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে তাঁদের মনে। এর ‘কৃতিত্ব’ যাতে পুরোটাই নরেন্দ্র মোদীর ঝুলিতে যায়, মূলত সেটিই হবে প্রচারের লক্ষ্য।
কোভিড সামলাতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে দেশে টানা ৬৮ দিন লকডাউন ছিল সারা দেশে। তার ধাক্কাতেই ২০২০-২১ সালের এপ্রিল থেকে জুনে জিডিপি-র ২৪.৪% সঙ্কোচন। তার পরে ধাপে ধাপে লকডাউন উঠতে শুরু করায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হতে থাকে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে জিডিপির সঙ্কোচন বহাল থাকলেও, তার মাত্রা ৭.৪ শতাংশে নেমে আসে। অক্টোবর-ডিসেম্বরে সামান্য মুখ তোলে অর্থনীতি। বৃদ্ধির হার মাত্র ০.৪৬%। শেষ ত্রৈমাসিক, অর্থাৎ, জানুয়ারি-মার্চে তা আরও একটু বেড়ে ১.৬৪% হয়েছিল (সঙ্গের সারণিতে)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy