নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে চোখ তুলে তাকানোর সাহস যারা দেখিয়েছিল, তাদের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চিনের সঙ্গে এই ‘লড়াই’ জেতার বিষয়ে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। কিন্তু বিরোধীরা প্রশ্ন তুলল, এত কথার পরেও চিনা সেনার সীমান্ত পেরনো কিংবা ভারতের জমি দখলের বিষয়ে সরকার অবস্থান স্পষ্ট করছে না কেন? কেনই বা আমজনতার উদ্দেশে রেডিয়ো-বার্তা ‘মন কি বাত’-এ এক বারও ওই পড়শি দেশের নাম মুখে আনলেন না প্রধানমন্ত্রী? প্রাক্তন সেনাকর্তাদের একাংশেরও জিজ্ঞাসা, যদি চিনের নাম মুখে আনতেই বাধে, তাহলে যোগ্য জবাব দেওয়ার দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা কতখানি? তা ছাড়়া, সেনাবাহিনীর বয়ান অনুযায়ী চিনা সেনারা যদি ভারতের ভূখণ্ড দখল করে বসেই থাকে, কেমন ‘যোগ্য জবাব’ দেওয়া হল, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
রবিবার রেডিয়ো-বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “(এই সঙ্কটের সময়ে) গোটা পৃথিবী ভারতের বিশ্ববন্ধুত্বের ভাবনাকে আরও বেশি করে উপলব্ধি করেছে। কিন্তু তেমনই দেখেছে যে, অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভারত কতটা শক্তিশালী এবং দায়বদ্ধ। লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে যারা চোখ তুলে তাকানোর সাহস দেখিয়েছিল, তারা যোগ্য জবাব পেয়েছে। ভারত যেমন বন্ধুত্বের মর্যাদা দিতে জানে, তেমনই চোখে চোখ রেখে তাকানো এবং জবাব দেওয়ার সাহসও তার আছে। আমাদের বীর সেনারা দেখিয়ে দিয়েছেন যে, তাঁরা কখনও ভারতমাতার গৌরবে আঁচ লাগতে দেবেন না।” সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহেরও দাবি, দেশের ভিতরে করোনা এবং লাদাখ সীমান্তে চিন— দু’টি লড়াইয়েই জয়ী হবে ভারত। অবশ্য অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, চিনের মতো প্রবল শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে হঠাৎ যুদ্ধ ঘোষণা সম্ভব নয়। বিশেষত অর্থনীতির এই টালমাটাল সময়ে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন শাহের সাক্ষাৎকারের টুইটে তাঁর নাম করে এএনআই প্রথমে লিখেছিল, দুই যুদ্ধে (ওয়ার) জেতার কথা। কিছু ক্ষণ পরেই সুর নামিয়ে লড়াই (ব্যাটল) করা হয় তাকে। বিরোধীদের কটাক্ষ, পাকিস্তানকে দিনে-রাতে ‘দুরমুশ করা’ মোদী-সরকার চিনের বেলায় কিন্তু আদ্যন্ত সাবধানি।
কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের প্রশ্ন, যে-বিষয় ঘিরে এত বিতর্ক, লাদাখ-সীমান্তে চিনের সেই জায়গা দখল করা, না-করা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল কোথায়? ‘মন কি বাত’ শুরুর আগেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর টুইট, “দেশ রক্ষা এবং সুরক্ষার কথা কবে হবে?” লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর কটাক্ষ, “এক বার অন্তত ‘মন কি বাত’-এর বদলে ‘লাদাখ কি বাত’ হোক!” তাঁর প্রশ্ন, এ দেশের মাটিতে হানা দেওয়ার চেষ্টার পরেও কেন এক বারও চিনের নাম মুখে আনছেন না প্রধানমন্ত্রী? কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালারও প্রশ্ন, “৩৩ মিনিটের ‘মন কি বাত’-এ এক বার চিনের নামও করলেন না প্রধানমন্ত্রী! তিনি কি চিনকে ভয় পান?” মোদীর মুখে চিনের নাম না-শুনে কিছুটা অবাক প্রাক্তন সেনাকর্তাদের একাংশও।
আরও পড়ুন: জোড়া নির্দেশ কাশ্মীরে, তুঙ্গে জল্পনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy