প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
গান্ধী পরিবার তথা কংগ্রেস তাঁর মৃত্যুকামনা করে চলেছে বলে দাবি করে আজ লোকসভা ভোটের প্রচারের চড়া সুর বেঁধে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রথম নয়। গত মাসে বেঙ্গালুরুর একটি জনসভাতেও কংগ্রেস তাঁর কবর খুঁড়তে চাইছে বলে সরব হয়েছিলেন তিনি। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, কংগ্রেস তাঁর মৃত্যুকামনা করছে— এই ভাষ্য পরিকল্পিত ও ধারাবাহিক ভাবে লোকসভা ভোটের আগে ছড়িয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়েছেন মোদী। লক্ষ্য আমজনতার সহানুভূতি কুড়নো।
মোদী আজ দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠা দিবসে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতা করলেন। বক্তব্যের একেবারে গোড়া থেকেই কংগ্রেস ও গান্ধী পরিবারের উদ্দেশে আক্রমণ শানাতে দেখা যায় তাঁকে। তিনি বলেন, ‘‘১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা চলে গেলেও কিছু লোক বাদশাহি মানসিকতা ছাড়তে পারেনি। তারা দেশের লোককে নিজেদের দাস বলে মনে করত।’’ তাঁর আমলে স্বচ্ছ ভারত, ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মতো নীতির সফল রূপায়ণের দাবি করে মোদী বলেন, ‘‘নিজেদের সময়ে বিরোধীরা এ সব কিছুই করতে পারেননি। তাই তাঁরা এখন এতটাই মরিয়া যে প্রকাশ্যে বলছে, মোদী তোমার কবর খুঁড়ব।’’
যদিও কংগ্রেসের দাবি, মোদীর কবর খোঁড়ার গল্প একেবারেই মনগড়া। অতি সম্প্রতি কংগ্রেসের কোনও নেতাই এ ধরনের কোনও মন্তব্য করেননি। যদিও অতীতে দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস নেতারা যখনই মোদীর বিরুদ্ধে এ ধরনের কুমন্তব্য করেছেন, মানুষ ঢেলে ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। রাজনীতির অনেকের মতে, সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এ বার নিজেই কবর খোঁড়ার কথা বলে মোদী গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে চেয়েছেন। বোঝাতে চেয়েছেন, গান্ধী পরিবারের লোকেদের বাদশাহি মানসিকতা রয়েছে। তাঁরা নিজেরা আমজনতার কথা ভাবেন না। উল্টে যিনি দেশের গরিব মানুষের কথা ভেবে জনকল্যাণমুখী প্রকল্প হাতে নিয়ে এগোচ্ছেন, বিরোধীরা সেই মোদীর মৃত্যুকামনা করে চলেছে। মোদী বোঝাতে চেয়েছেন, এদের লক্ষ্যই হল মোদীর মৃত্যু! যাতে গরিব মানুষের সামাজিক উন্নয়নমুখী প্রকল্প স্তব্ধ হয়ে যায়!
ঘটনাচক্রে আজ দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের সঙ্গেই ছিল হনুমান জয়ন্তী। কর্নাটক নির্বাচনের প্রাক্কালে দলের সঙ্গে হিন্দুত্বের মেলবন্ধনকেও তাই উস্কে দিতে ছাড়েননি মোদী। দুর্নীতির অসুর নিধনে দলীয় কর্মীদের হনুমানের মতো হয়ে ওঠার উপরে জোর দেন তিনি। দুর্নীতি ও সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ার প্রশ্নে লঙ্কাকাণ্ডের উদাহরণ তুলে ধরেন। রাক্ষসদের মোকাবিলা করার ব্যাপারে হনুমান যেমন কঠোরতা দেখিয়েছিলেন, দলীয় কর্মীদেরও তেমনই মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকার উপরে জোর দেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘হনুমান যেমন নিজের শক্তি বুঝেছিলেন, আজ ভারতও সে ভাবে নিজের ক্ষমতা বুঝতে সক্ষম হয়েছে। হনুমানের মূল মন্ত্র ছিল— আমি সব পারি, এই মানসিকতা।’’ দলীয় কর্মীদের সেই মানসিকতাকে আত্মস্থ করার উপরে জোর দিয়েছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘ওই মানসিকতা হনুমানকে সাফল্য অর্জনে সাহায্য করেছে। আমাদেরও তাই করতে হবে।’’
মোদী বক্তৃতা করার পরেই দিল্লিতে দলের সদর দফতরে দেওয়ালে পদ্মের ছবি এঁকে দলের দেওয়াল লিখন অনুষ্ঠানের সূচনা করেন দলীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। প্রাথমিক ভাবে গোটা দেশে প্রায় ১০.৭২ লক্ষ স্থানে ওই দেওয়াল লিখন হবে।
আজ দেশের প্রায় ১০ লক্ষ স্থানে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনানোর ব্যবস্থা করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy