অতিথি: ডাবের জলে আপ্যায়ন চিনা প্রেসিডেন্টকে। শুক্রবার মমল্লপুরমে। পিটিআই
‘খুবই ভাল সময় কাটিয়েছেন’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং।
মমল্লপুরমে আজ থেকে শুরু হওয়া ভারত-চিন ঘরোয়া আলোচনা নিয়ে গভীর রাতে সাংবাদিক বৈঠক করে এমন কথাই জানালেন ভারতের বিদেশসচিব বিজয় গোখলে। কাশ্মীর নিয়ে কোনও অস্বস্তি যাতে মাঝপথে তৈরি না-হয়, সে জন্য কোনও প্রশ্ন নিলেন না তিনি।
দুই রাষ্ট্রনেতার একান্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টার নৈশভোজের পরে বিদেশসচিব বললেন, ‘‘মোট পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। দুই নেতা খুবই ভাল সময় কাটিয়েছেন। কথা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারতের ঘাটতি, নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্র খুঁজে বার করা নিয়ে। দু’দেশই মৌলবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের শিকার। স্থির হয়েছে, সন্ত্রাসবাদ যাতে দু’দেশের বহুস্তরীয় সংস্কৃতি ও সমাজকে বিনষ্ট না করতে পারে সে জন্য একত্রে কাজ করা হবে।’’
বিদেশসচিবের বক্তব্য, দুই নেতাই একে অপরকে তাঁদের জাতীয় দর্শন কী তা জানিয়েছেন এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পথে কী ভাবে এগোনো যায়, তা নিয়ে কথা বলেছেন।
আগামিকাল সকাল থেকে আলোচনা গড়াবে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, শি চিনফিংয়ের জন্য যখন সবে লাল কার্পেট বিছানো শুরু হয়েছে, সেই সময়ই কাশ্মীর নিয়ে দিল্লি-বেজিং উত্তপ্ত বাগযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই গুমোট কাটিয়ে মমল্লপুরমের প্রাচীন মন্দির সৌধ মিনারের আবহে আজ নতুন অক্সিজেন জোগানোর চেষ্টা শুরু করলেন মোদী এবং শি। বিদেশসচিবের কথায়, মমল্লপুরমের ঐতিহ্যপূর্ণ সৌধগুলি ঘুরে দেখিয়ে শি-কে ভারত চিনের ঐতিহাসিক বাণিজ্যিক এবং বৌদ্ধ ধর্মের সংযোগের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মোদী।
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই বৈঠকের সবচেয়ে বড় সাফল্য হল, কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে এবং দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে যে চাপ তৈরি করা শুরু করেছিল বেজিং, তার থেকে বেরিয়ে কিছুটা খোলা বাতাস বইয়ে দেওয়া গিয়েছে সম্পর্কে। আপাতত কাশ্মীর নিয়ে কোনও বড় মাপের বিরোধিতা বেজিংয়ের পক্ষ থেকে আসবে না— এমনটাই আশা করা হচ্ছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তার মতে, ‘দ্বিপাক্ষিক স্বস্তি’ই হল মমল্লপুরমের মূল কথা। দুই শীর্ষ নেতার এই বৈঠককে চলতি পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের জন্য বার্তাবহ বলেও মনে করা হচ্ছে।
আজ মমল্লপুরমে প্রাচীন মন্দির পরিদর্শনের ফাঁকে ডাবে চুমুক দিতে দিতে অথবা মন্দিরের নৃত্যানুষ্ঠানের অবসরে দোভাষীদের সঙ্গে নিয়ে একনাগাড়ে কথা বলে গিয়েছেন মোদী এবং শি। কাল সকালে দশটা থেকে মমল্লপুরমের রিসর্টে আলোচনা আবার শুরু হবে। চলবে দুপুর পৌনে বারোটা পর্যন্ত। তার পর মধ্যাহ্নভোজ সেরে দুপুর দেড়টার সময় নেপালের বিমান ধরবেন শি। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, এই স্বল্পমেয়াদি সফরে মাইলফলক কোনও সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল না। হয়ওনি। প্রতীকী ছবিই কূটনীতিতে বার্তাবহ, যা আজ এশিয়ার দুই শক্তিশালী রাষ্ট্রনেতা অকাতরে বিলিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy