প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
অসম কি দ্বিতীয় কাশ্মীর হতে চলেছে? প্রশ্ন বিরোধীদের।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সংসদে পাশ হতেই জ্বলছে অসম। নেমেছে সেনা, চলছে কার্ফু। বন্ধ ইন্টারনেট। পরিস্থিতি দেখে বিরোধীদের প্রশ্ন, অসম কি তা হলে দ্বিতীয় কাশ্মীর হতে চলেছে! যদিও সরকারের দাবি, আমজনতাকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
অসম-সহ গোটা উত্তর-পূর্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) বিল নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরেই। ওই আইনে স্থানীয় বাসিন্দারাই সংখ্যালঘু হয়ে পড়বেন, এই আশঙ্কা থেকে লোকসভায় বিল পেশের পরে বিক্ষোভ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। আজ সকালে দফায় দফায় টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ১০টা নাগাদ অসমিয়া ও ইংরেজিতে মোদী লেখেন, ‘‘আমার অসমের বোন ও ভাইদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, সিএবি বিল নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কেউ আপনাদের অধিকার, পরিচয় বা সংস্কৃতি কেড়ে নিতে পারবে না।’’ অথচ কাল থেকেই ইন্টারনেট বন্ধ অসমে। তাই পাল্টা টুইট করে কংগ্রেসের কটাক্ষ, ‘‘অসমের ভাই-বোনেরা আপনার টুইট পড়তে পারবেন না মোদীজি। যদি আপনি ভুলে যান (তা হলে মনে করিয়ে দিই), সেখানে ইন্টারনেট বন্ধ।’’
আজ ধানবাদে ভোটের প্রচারে গিয়েও মোদী বলেন, উত্তর-পূর্বের মানুষদের রক্ষাকর্তা হিসেবে তিনি সজাগ রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মোদীর উপরে ভরসা রাখুন। আপনাদের ভাষা, সাংস্কৃতি এবং জমির অধিকার রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
অসম চুক্তিৰ ছয় নং দফা অনুসৰি অসমীয়া মানুহৰ ৰাজনৈতিক, ভাষিক, সাংস্কৃতিক আৰু ভূমিৰ অধিকাৰ সুৰক্ষিত কৰাৰ বাবে সাংবিধানিক ৰক্ষাকৱচ প্ৰদানৰ ক্ষেত্ৰত মই আৰু কেন্দ্ৰীয় চৰকাৰ সম্পূৰ্ণৰূপে দায়বদ্ধ।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 12, 2019
অসমে এ ভাবে উত্তেজনা ছড়ানোয় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। বিশেষ করে অসমে বিজেপি সরকার থাকায় কেন্দ্রের তরফে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে কেন্দ্রের অপেক্ষা, ক্ষোভ যদি নিজে থেকেই প্রশমিত হয়। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘‘বিক্ষোভকারীদের সে-ভাবে কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নেই। সেটাই আশার কথা। দিন কয়েকের মধ্যে ক্ষোভ প্রশমিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’’ তবে অসমের পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক বলে ঘরোয়া ভাবে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকেরা। আজ অসমে ১২ কলাম সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আট কলাম উজানি অসমে ও চার কলাম গুয়াহাটিতে।
অসমৰ ভাতৃ-ভগ্নীসকলক মই আশ্বাস দিছোঁ- CAB গৃহীত হোৱাৰ পিছত আপোনালোক অলপো শংকিত হ'ব নালাগে।
— Narendra Modi (@narendramodi) December 12, 2019
আপোনালোকৰ অধিকাৰ, সুকীয়া পৰিচয় আৰু বাৰেবৰণীয়া সংস্কৃতি কোনোৱেই কাঢ়ি নিব নোৱাৰে। এয়া সদায়েই জিলিকি থাকিব আৰু প্ৰসাৰিত হ'ব।
ত্রিপুরা জয়েন্ট মুভমেন্ট এগেনস্ট সিএবি-এর একটি প্রতিনিধিদল আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছিলেন আইপিএফটি সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। তাঁরা ত্রিপুরায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত জানালে ধন্যবাদ জানিয়ে শাহ বলেন, ‘‘মোদী সরকার ইতিবাচক ভাবে ত্রিপুরার সমস্যা মেটাতে চেষ্টা করছে।’’ পরে কিরীট প্রদ্যোত দেববর্মণ ও টিপিএফ দলের সভাপতি পটলকন্যা জামাতিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। গুয়াহাটিতে অশান্তির কারণে শাহের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা।
কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী লোকসভায় বলেন, ‘‘অসমে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। কাশ্মীরের ছবির যেন পুনরাবৃত্তি হচ্ছে উত্তর-পূর্বে। দু’টি (কাশ্মীর ও উত্তর-পূর্ব) এলাকার ভূকৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। এমনকি, বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীও ভারতের বক্তব্যকে খারিজ করে দিয়েছেন।’’ লোকসভায় এ নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনেন কংগ্রেসের সাংসদ মনিকম টেগোর ও আব্দুল খালেক। উত্তপ্ত হয় রাজ্যসভাও। নাগরিকত্ব বিল পাশের পরে অসম-সহ উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিতে যে অশান্তি চলেছে, তা নিয়ে আলোচনা চেয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনেন আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহ। যদিও তা খারিজ হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy