ছবি সংগৃহীত
শীতের রাতে এক মুসলিম যুবক এবং তাঁর সফর সঙ্গী এক হিন্দু মহিলাকে ট্রেনের শীতাতপ কামরা থেকে টেনেহিঁচড়ে মাঝরাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হল। তার পর মহিলার সামনেই তাঁর পুরুষ সঙ্গীকে যথেচ্ছ মারধর করার অভিযোগ উঠল এক দল লোকের বিরুদ্ধে। মারের কারণ কী? তাদের ট্রেন থেকে নামিয়েই বা দেওয়া হল কেন জানতে চাওয়া হলে ওই দলের লোকজন নিজেদের পরিচয় দেয় বজরং দলের সদস্য বলে। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেয়, ওই দুই যুবক-যুবতীর লাভ জিহাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিতেই এমনটা করেছে তারা।
ঘটনাটি ঘটে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনী রেল স্টেশনে। স্টেশনে কর্তব্যরত রেল পুলিশ বা নিরাপত্তাকর্মীরা সেই সময় কী করছিলেন, বা তাঁদের সামনে কী করে এমন ঘটনা ঘটল সে প্রশ্ন উঠেছে।
এই ঘটনার দু’দিন পর ইন্টারনেটে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। মারধরের ওই ভিডিয়োর বিবরণে লেখা ছিল ‘এক অউর লাভ জেহাদ হোনে সে পহেলে হি বজরং দল ওয়ালো নে শাদিশুদা আব্দুল কো রঙ্গে হাতো পকড় লিয়া।’ অর্থাৎ ‘আর একটি লাভ জেহাদের ঘটনা হওয়ার আগেই রুখে দিল বজরং দল। বিবাহিত আব্দুলকে হাতে নাতে ধরে ফেলল তারা।’
যে ব্যক্তিকে স্টেশন চত্বরে হেনস্তা এবং মারধর করা হয়েছে, তাঁর নাম আতিফ শেখ। তিনি ইনদওরের বাসিন্দা। পেশায় ব্যবসায়ী। ইনদওরেই একটি ইলেকট্রিক জিনিসপত্রের ছোট দোকান আছে তাঁর। সঙ্গী মহিলারও বাড়ি ইনদওরেই। তিনি পেশায় শিক্ষিকা। বেসরকারি স্কুলে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের পড়ান। দু’জনেই প্রাপ্তবয়স্ক। যদিও বজরং দল তাঁদের রাতভর থানায় বসে থাকতে বাধ্য করে একসঙ্গে ট্রেনে সফর করার ‘অপরাধে’। দু’জনের বাবা-মা থানায় এসে বয়ান দেওয়ার পরই তাঁদের বাড়ি যেতে দেওয়া হয়।
উজ্জয়িনীর পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, দু’জন একে অপরের দীর্ঘ দিনের পরিচিত। দূর সম্পর্কের আত্মীয়তাও রয়েছে দু’জনের। তবে এই ঘটনায় দু’জনের কেউই হেনস্তাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ না জানানোয় তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে পুলিশের কাছে অভিযোগ না জানালেও একটি ভিডিয়োয় এ ব্যাপারে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন ওই মহিলা। সেই ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘একটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে আমাদের হেনস্তা করা হল। আমার জীবন নষ্ট করা হল। আপনারা আমার ফোটো তুললেন, আমার ভিডিয়ো করলেন। এ সব করার আগে আপনাদের কি এক বার আমার অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল না? আমি তো একজন প্রাপ্তবয়স্ক!’’
বজরং দলের তরফে অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে একটি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, তারা ওই হেনস্থাকারীদের এক জনকে চিহ্নিত করে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের কাছে ওই দু’জনের ব্যাপারে খবর ছিল। বলা হয়েছিল, ওই মুসলমান ব্যক্তি, যাঁর বয়স ৩০ এবং যাঁর এক স্ত্রী এবং সন্তানও আছে, তিনি ওই মহিলার সঙ্গে আজমেঢ় যাচ্ছেন তাঁকে বিয়ে করবেন বলে। এর পরেই আমরা ওঁদের ধরে এনে পুলিশের হাতে তুলে দিই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy