উত্তরপ্রদেশের মেরঠে প্রাক্তন মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে খুনের ঘটনায় পুলিশের জেরার মুখে উঠে আসছে একের পর এক স্বীকারোক্তি। সৌরভের স্ত্রী মুস্কান রস্তোগী এবং তাঁর প্রেমিক সাহিল শুক্ল এখন জেলে। পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। কী ভাবে সৌরভকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা, কী ভাবে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলেন, কোথায় কোন পরিকল্পনা কাজে লাগল না— নানা বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মুস্কান এবং সাহিল দু’জনেই জানিয়েছেন, কেন তাঁরা সৌরভের দেহ টুকরো টুকরো করে কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেনই বা সৌরভের হাত দু’টি ক্ষতবিক্ষত করেছেন।
মুস্কানেরা জানিয়েছেন, সৌরভের দেহের টুকরোগুলি ড্রামে ভরে অন্যত্র ফেলে আসার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। পরে কখনও সেই ড্রাম কেউ উদ্ধার করলেও যাতে সৌরভকে শনাক্ত করা না-যায়, তার বন্দোবস্ত করেছিলেন। ইন্ডিয়া টিভির একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মুস্কান এবং সাহিল দু’জনেই সৌরভের দেহ কাটার নেপথ্যে এই উদ্দেশ্যের কথা স্বীকার করেছেন। তদন্তকারীদের তাঁরা জানিয়েছেন, সৌরভের হাতের আঙুলের ছাপ দেখে যাতে তাঁকে শনাক্ত না-করা যায়, তা নিশ্চিত করতে কব্জি কেটে ফেলেছিলেন তাঁরা। তার পর আঙুল এবং হাত ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিলেন। সৌরভের মুন্ডুও ধড় থেকে আলাদা করেছিলেন এই কারণে। তাঁরা ভেবেছিলেন, মুন্ডুটি অন্য কোথাও ফেলবেন। মুন্ডুহীন দেহ থেকে সৌরভকে শনাক্ত করা কঠিন হবে।
আরও পড়ুন:
মুস্কানদের বাড়িতে একাধিক বার গিয়েছে ফরেন্সিক দল। সেখানে বিছানার চাদর, বালিশ, মেঝের টাইল্স, শৌচাগারে জলের কল— বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে একটি সুটকেসও। তার ভিতরে রক্তের দাগ ছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, প্রথমে ওই সুটকেসেই সৌরভের দেহাংশগুলি ভরে অন্যত্র সরানোর পরিকল্পনা করেছিলেন মুস্কানেরা। সেই চেষ্টা করতে গিয়ে সুটকেসে রক্ত লাগে। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন, সুটকেসে সব দেহাংশ ধরবে না। তার পর ড্রাম কিনে আনেন মুস্কান এবং সাহিল।
গত ৪ মার্চ রাতে সৌরভের খাবারে মাদক মিশিয়ে দিয়েছিলেন মুস্কান। সৌরভ নিস্তেজ হয়ে পড়লে তিনি এবং সাহিল মিলে বুকে ছুরির কোপ মেরে সৌরভকে খুন করেন। তার পর তাঁর দেহ কেটে ১৫টি টুকরো করেন। দেহাংশগুলি ড্রামে ভরে সিমেন্ট ঢেলে দিয়েছিলেন মুস্কান, সাহিল। তার পর শিমলায় বেড়াতে চলে গিয়েছিলেন দু’জন মিলে। সেখান থেকে ফিরলে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে।