নিহত মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকি। —ফাইল চিত্র।
অজিত পওয়ার-পন্থী এনসিপি গোষ্ঠীর নেতা বাবা সিদ্দিকিকে শনিবার রাতে গুলি করে খুন করা হয়েছে। ঘটনায় দু’জনও গ্রেফতারও হয়েছেন। কিন্তু কী কারণে খুন হতে হল মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রীকে? লরেন্স বিষ্ণোইয়ের দুষ্কৃতী দলই কি এর নেপথ্যে? নিজেকে বিষ্ণোইয়ের দলের সদস্য বলে দাবি করে এই বিষয়ে একটি পোস্ট করেছেন এক সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারী। সেই পোস্ট ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ওই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে তদন্তে নেমে খুনের নেপথ্যে সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখছে মুম্বই পুলিশ। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে মুম্বই পুলিশের এক আধিকারিক এ কথা জানিয়েছেন। ভাড়াটে খুনির তত্ত্ব, ব্যবসায়িক শত্রুতা, না কি বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প? খুনের নেপথ্যের প্রতিটি সম্ভাবনাকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ।
মুম্বইয়ে বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্পে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলার তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। মামলায় নাম জড়িয়েছিল সিদ্দিকিরও। ২০০০-২০০৪ সাল পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের আবাসন ও নগরোন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। সেই সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একটি সংস্থাকে বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। মামলার তদন্তে ২০১৮ সালে সিদ্দিকির ৪৬২ কোটি টাকার সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরেই কংগ্রেস ছেড়ে অজিত পওয়ারের এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলেন সিদ্দিকি। সর্বক্ষণ পুলিশি নিরাপত্তা পেতেন। তার পরেও কী ভাবে এই ঘটনা ঘটে গেল, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষ করে সামনেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার ঠিক আগেই সিদ্দিকির খুনের ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত যে দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তাঁরা কেউই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা নন। এক জনের বাড়ি হরিয়ানায়। অপর জন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। আরও এক অভিযুক্তের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, সিদ্দিকি খুনের মামলার তদন্তে আসরে নামছে দিল্লি পুলিশও। মুম্বইয়ে পুলিশের তদন্তকারী দলকে সাহায্যের জন্য দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের একটি দলকে পাঠানো হচ্ছে মহারাষ্ট্রে। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। পার্শ্ববর্তী এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের সন্দেহ, হামলার ঘটনায় একটি ৯.৯ এমএম পিস্তল ব্যবহার করা হয়েছিল। সেটি ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আততায়ীরা চার-পাঁচ রাউন্ড গুলি চালিয়েছিলেন বলে দাবি পুলিশের। এক পুলিশ আধিকারিক পিটিআইকে জানিয়েছেন, হামলার ঘটনার সময় দুর্গাপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা চলছিল। বাজি ফাটছিল চারদিকে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই সিদ্দিকিকে গুলি করেন আততায়ীরা। বাজি ফাটার শব্দের মাঝে গুলির শব্দ কেউ টের পাননি।
মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার পুলিশকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। মুম্বই শহরে যাতে কোনও দুষ্কৃতী দল পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে, তা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন তিনি। উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশকের পর থেকে মুম্বইয়ে এমন বড় মাপের রাজনৈতিক নেতা খুন হননি। ওই দশকের শুরুর দিকে বিজেপির তৎকালীন দুই বিধায়ক রামদাস নায়েক এবং প্রেমকুমার শর্মাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। শিবসেনার দুই নেতা বিঠ্ঠল চহ্বান এবং রমেশ মোরে ওই সময়ই খুন হন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy