নিহত বাবা সিদ্দিকি। — ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা (অজিত পওয়ার গোষ্ঠী) বাবা সিদ্দিকিকে খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। শনিবার রাতে ৬৬ বছর বয়সি নেতাকে প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয়। অভিযুক্তদের দীর্ঘ আট ঘণ্টা জেরার পর চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে এল।
ঘটনায় যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নাম গুরমেল সিংহ এবং ধর্মরাজ কাশ্যপ। দু’জনেরই বয়স ২০র কোঠায়। এক জন উত্তরপ্রদেশ, আর অন্য জন হরিয়ানার বাসিন্দা। তাঁদেরকেই টানা জেরার পর জানা গিয়েছে, সিদ্দিকিকে খুনের সুপারি দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। খুনের দিনকয়েক আগেই দু’জনে হাতে পেয়ে গিয়েছিলেন আগাম এক লক্ষ টাকা। পেয়েছিলেন আগ্নেয়াস্ত্রও। খুনের মহড়া দেওয়ার জন্য কুরলায় বাড়ি ভাড়াও নিয়েছিলেন গুরমেল ও ধর্মরাজ। যেখানে নেতাকে খুন করা হয়, সেই এলাকাও একাধিক বার ‘রেকি’ করতে গিয়েছিলেন দু’জনে। আটঘাট বেঁধেই শেষমেশ নিখুঁত ভাবে কাজ সারেন তাঁরা।
সিদ্দিকি খুনে মুম্বইয়ের গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়েরও যোগ রয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে দুই ধৃতই স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁরা বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য। জল্পনা, এই খুনের জন্য মোট ২৫ লক্ষ টাকার বরাত পেয়েছিল বিষ্ণোই গ্যাং।
শনিবার রাতে নির্মল নগরে নিজের অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় এনসিপি (অজিত) নেতা সিদ্দিকিকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চলে। রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় তাঁর। ৯.৯ এমএম পিস্তল থেকে ছোড়া হয়েছিল গুলি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়ি করে তিন জন দুষ্কৃতী এসেছিল। প্রত্যেকের মুখ রুমালে ঢাকা ছিল।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতেই কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ত্যাগ করেন সিদ্দিকি। যোগ দেন অজিত শিবিরে। তবে তার আগে প্রায় পাঁচ দশক কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলেন। সত্তরের দশকে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন থেকেই মূল ধারার রাজনীতিতে এসেছিলেন সিদ্দিকি। ১৯৯৯ সালে প্রথম বিধানসভা ভোটে জয়ী হন বান্দ্রা এলাকার এই নেতা। এর পর ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিন বার ভোটে জিতেছেন। তবে ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের বিধানসভা ভোটে বান্দ্রা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে হেরে যান সিদ্দিকি। এ হেন বর্ষীয়ান নেতাকে খুনের ঘটনার নিন্দা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেও। শনিবার শিন্ডে ঘোষণা করেন, এই হত্যা মামলার বিচার ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে হবে। এনকাউন্টার বিশেষ়জ্ঞ দয়া নায়েক ঘটনার তদন্ত করবেন। সঙ্গে মুম্বই পুলিশকে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আরও সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy