ত্রাতা: ভেঙে পড়া বহুতল থেকে এক শিশুকে উদ্ধার করছেন দমকলকর্মীরা। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে। ছবি: পিটিআই
ফের মুম্বইয়ে ধসে পড়ল বহুতল। এগারো জন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের তলায় জনা চল্লিশ এখনও আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা। ফলে বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা। উদ্ধার কাজ চলছে। প্রায় ১০০ বছরের আবাসনটি ভেঙে পড়ার দায় কার সে নিয়ে ইতিমধ্যেই চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে।
মঙ্গলবার দক্ষিণ মুম্বইয়ের ডোংরি এলাকার তান্ডেল রোডে ঘটনাটি ঘটে। আবাসনে ১০-১৫টি পরিবার বাস করত। ঘটনার সময় বেশির ভাগ লোক বাড়িতেই ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১.৪০ নাগাদ কেশরবাগ নামের চারতলা বাড়িটির একাংশ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। চার দিকে তখন কংক্রিটের চাঙড়, ধুলো-কাদার আস্তরণ আর তালগোল পাকিয়ে যাওয়া ধাতব কাঠামোর স্তূপ।
এলাকাটি অত্যন্ত ঘিঞ্জি ও জনবহুল হওয়ায় উদ্ধারকাজে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। স্থানীয়েরা জানান, রাস্তা এতটাই সরু যে, ধ্বংসস্তূপ সরাতে যন্ত্র পর্যন্ত আনা যায়নি। অ্যাম্বুল্যান্সকেও ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ৫০ মিটার দূরে দাঁড় করাতে হয়। তার মধ্যেই মানবশৃঙ্খল গড়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজে হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিন বিকেল পর্যন্ত সাত জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সকাল থেকে বৃষ্টি হয়নি, তাই রক্ষে। না হলে উদ্ধারকাজ আরও কঠিন হয়ে পড়ত।’’
মঙ্গলবার দিনভর সংবাদমাধ্যমে কাপড়ে মোড়া একটি শিশুকে উদ্ধারের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসন সূত্রের খবর, শিশুটি বেঁচে আছে। আপাতত হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
এ মাসের গোড়ায় মালাডে প্রবল বৃষ্টিতে বহুতলের দেওয়াল ধসে ২৯ জনের মৃত্যু হয়। তার ১৫ দিনের মধ্যে ফের বহুতল ভাঙার ঘটনায় আঙুল উঠছে প্রশাসনের দিকেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, জরাজীর্ণ বাড়িটি সারানোর জন্য বহু বছর ধরে তাঁরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন। তবু কোনও ব্যবস্থা হয়নি। এলাকায় এমন আরও জীর্ণ বাড়ি রয়েছে। বর্ষায় যেগুলি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস এ দিন অভিযোগ মেনে নিয়ে বলেছেন, ‘‘বাড়িটি ১০০ বছরের পুরনো। কিন্তু জীর্ণ বাড়ির তালিকায় সেটির নাম ছিল না। এক নির্মাতা সংস্থাকে বাড়িটি পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।’’
বিরোধীদের অভিযোগ, বেআইনি নির্মাণের রমরমা ও শাসকের দুর্নীতির কারণেই বারবার এমন ঘটছে। মহারাষ্ট্র আবাসন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (মহাডা) চেয়ারম্যান উদয় সামন্ত মেনে নেন, ডোংরি তাঁদেরই এলাকাভুক্ত। মহাডার কোনও আধিকারিকের গাফিলতি রয়েছে প্রমাণ হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হবে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে পুনর্নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার অবহেলা প্রমাণিত হলেও।’’ রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী রাধাকৃষ্ণ ভিখে পাটিল অবশ্য বলেন, ‘‘আপাতত মতবিরোধ সরিয়ে রেখে চাপা পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধার করাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।’’
দুঃখপ্রকাশ করে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা টুইট করে বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক কালে তৃতীয় বার এই ধরনের ঘটনা ঘটল। সময় থাকতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy