বিয়ের পরে পরপুরুষের সঙ্গে স্ত্রীর ‘অশ্লীল’ মেসেজ চালাচালির ঘটনা স্বামীকে ‘মানসিক নির্যাতন’ করার শামিল। এমনটাই জানাল মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। এই মর্মে ওই দম্পতির বিচ্ছেদও মঞ্জুর করেছে আদালত। নিম্ন আদালত আগেই বিচ্ছেদ মঞ্জুর করেছিল। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন স্ত্রী। স্ত্রীর সেই আবেদনই খারিজ করেছে আদালত।
বিচারপতি বিবেক রসিয়া এবং বিচারপতি গজেন্দ্র সিংহের পর্যবেক্ষণ, ‘‘স্ত্রী মোবাইলে এই ধরনের চ্যাট করলে কোনও স্বামীই সহ্য করবে না। বিয়ের পরে স্বামী এবং স্ত্রীর বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইলে গল্প করার, চ্যাট করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু সেই কথোপকথন শালীন এবং মর্যাদাপূর্ণ হওয়া উচিত। বিশেষত, সেই গল্প যদি স্বামী বা স্ত্রী বিপরীত লিঙ্গের মানুষের সঙ্গে করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে জীবনসঙ্গী কোনও বাধা দিতে পারেন না। কিন্তু যদি স্বামী বা স্ত্রী বাধা দেওয়ার পরেও এই ধরনের চ্যাট বা গল্প চলতে থাকে, তা হলে তা মানসিক নির্যাতনই উদ্রেক করে।’’
২০১৮ সালে বিয়ে হয়েছিল উজ্জ্বয়িনীর ওই দম্পতির। স্বামী ব্যাঙ্কে চাকরি করেন। তিনি কানে কম শুনতে পান। তাঁর অভিযোগ, এ জন্য তাঁকে খোঁটা দিতেন স্ত্রী। তাঁর মাকেও অপমান করতেন। ‘কালার মা’ বলে ডাকতেন। ওই ব্যক্তির আরও অভিযোগ, বিয়ের পরেও প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে যৌন সংসর্গ নিয়ে আলোচনা করতেন তাঁর স্ত্রী। এর পরেই তিনি নিম্ন আদালতে স্ত্রীর থেকে বিচ্ছেদ চেয়ে মামলা করেন। তিনি স্ত্রীর মোবাইলের চ্যাট ট্রান্সক্রিপ্টও আদালতে জমা করেন। সেই সঙ্গে শ্বশুরের একটি জবানবন্দিও পেশ করেন আদালতে। সেখানে তাঁর স্ত্রীর বাবা জানিয়েছেন, মেয়ের কাজকর্মে তিনি লজ্জিত। ২০২৩ সালের ২৪ জুন ওই ব্যক্তির বিচ্ছেদ মঞ্জুর করে নিম্ন আদালত। কিন্তু সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন করেন মহিলা। তিনি অভিযোগ করেন, মোবাইলের চ্যাট তাঁর ব্যক্তিগত। মোবাইল থেকে সেটি ‘চুরি’ করে তাঁর গোপনীয়তার অধিকার ভঙ্গ করেছেন স্বামী। শেষ পর্যন্ত তাঁর আবেদন খারিজ করল আদালত। নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখল।