শিক্ষকদের বেত নিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে দেওয়া উচিত! সম্প্রতি এক মামলার শুনানিতে এমনটাই পর্যবেক্ষণ কেরল হাই কোর্টের। আদালত জানিয়েছে, শিক্ষকেরা চাইলে তাঁদের বেত নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে দেওয়া উচিত। এটি সব সময় ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। তবে শিক্ষকদের হাতে একটি বেত থাকলে তা পড়ুয়াদের উপর একটি মানসিক প্রভাব ফেলবে। ফলে কোনও অসামাজিক কাজ করার আগে পড়ুয়ারা ভেবে দেখবে।
কেরলের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে পড়ুয়াকে বেত্রাঘাত করার অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পড়ুয়ার অভিভাবকেরা। মামলা গড়ায় হাই কোর্ট পর্যন্ত। সম্প্রতি ওই মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষকের আগাম জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেছে কেরল হাই কোর্ট। বিচারপতি পিভি কুন্নিকৃষ্ণনের নির্দেশ, আগে পুলিশকে অভিযোগটি অনুসন্ধান করে দেখতে হবে। তিনি জানান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে পড়ুয়া বা অভিভাবক কোনও ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ তুললে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষ না-হওয়া পর্যন্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা যাবে না।
সমসাময়িক বিভিন্ন পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন বিচারপতি। তিনি জানান, পড়ুয়ারা কোথাও স্কুলে অস্ত্র নিয়ে যাচ্ছে, কোথাও মাদক বা মদ নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করছে। এমন পরিস্থিতিতে এই ধরনের নির্দেশ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্যে তরুণ প্রজন্মের আচরণ উদ্বেগজনক। তাঁরা গুরুতর অপরাধমূলক মামলায় জড়িয়ে পড়ছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ মাদক ও মদ্যপানেও আসক্ত। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে পড়ুয়ারা শিক্ষকদের হুমকি দিচ্ছে এবং শিক্ষকদের উপর শারীরিক আক্রমণ হচ্ছে, এমনকি ঘেরাও পর্যন্ত হচ্ছে। এই প্রবণতা বন্ধ হওয়া উচিত।”
আরও পড়ুন:
এই অবস্থায় কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের হাতে বেত রাখতে দেওয়ার পক্ষে আদালত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, হাতে বেত থাকা মানেই তা ব্যবহার করতে হবে, এমনটা নয়। শিক্ষকদের হাতে বেত দেখলে পড়ুয়াদের মনে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তিনি। পড়ুয়াদের শৃঙ্খলা এবং আচরণের জন্য ছোটখাটো শাস্তি দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলারও বিপক্ষে বিচারপতি। তাঁর মতে, এই সব ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ফৌজদারি মামলা থেকে রক্ষা করা উচিত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের ক্ষেত্রে পড়ুয়া বা অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ অনেক সময় পদক্ষেপ করে থাকে। এটি বন্ধ হওয়া উচিত। অন্যথায় শিক্ষকেরা নিজেদের কাজ করতে পারবেন না। এই ধরনের অভিযোগের ক্ষেত্রে আগে প্রাথমিক অনুসন্ধান করতে হবে পুলিশকে। প্রাথমিক অনুসন্ধান চলাকালীন অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা চলবে না।