মা-মেয়ে দু’জনেই শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। প্রতীকী ছবি।
২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে জর্জরিত হয়ে পড়েছিল দেশবাসী। করোনা সংক্রমণের হার কমে গেলেও তার ভয় কাটিয়ে উঠতে পারেননি বছর চুয়াল্লিশের মানি এবং তাঁর একুশ বছরের মেয়ে দুর্গা ভবানী। অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া জেলার কুয়েরু গ্রামের বাসিন্দা মানি। করোনার হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রায় তিন বছর ধরে মেয়েকে নিয়ে গৃহবন্দি রয়েছেন মানি। এক মুহূর্তের জন্য ঘর ছেড়ে বেরোননি তিনি। মঙ্গলবার ঘরের দরজা ভেঙে মা এবং মেয়েকে উদ্ধার করে অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশ এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, দরজা খুলে মা-মেয়েকে ঘরের এক কোণে কম্বলমুড়ি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করার পর তাঁদের দু’জনকে ঘর থেকে বেরনোর জন্য রাজি করানো হয়। মা এবং মেয়ে দু’জনকেই কাকিনাড়ার সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, মা-মেয়ে দু’জনেই শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিক সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। চিকিৎসক সূত্রের খবর, স্কিজ়োফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। ৭ বছর ধরেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে। আপাতত হাসপাতালের এক মনোবিদের নজরে রয়েছেন তাঁরা।
মানির স্বামী কে সুরি বাবু পেশায় সব্জি বিক্রেতা। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সুরি পুলিশকে জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার সময় তিনি মানি এবং তাঁর মেয়েকে বলেছিলেন, সব সময় মাস্ক পরে থাকতে। সাবধান থাকার জন্য ঘরের ভিতর থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন দু’জনকে। কিন্তু সেই ভয় এমন ভাবে মা-মেয়েকে গ্রাস করে যে, তাঁরা নিজেদের গৃহবন্দি করে ফেলেন। কোনও আত্মীয় দেখা করতে এলেও ঘর থেকে বেরোতেন না। প্রায় ৩ বছর ধরে সূর্যের আলো পর্যন্ত দেখেননি তাঁরা।
খাওয়ার সময় হলে সুরি নিয়মিত তাঁদের ঘরে খাবার পৌঁছে দিতেন। কিন্তু ৪ মাস ধরে সুরি এলেও তাঁকে ঘরের ভিতরে ঢুকতে দেননি মা-মেয়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, দুর্গা ঘরের ভিতর বন্দি থেকে ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতেন। তাঁর ধারণা যে কেউ জাদুবিদ্যার মাধ্যমে তাঁর পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এখন মা এবং মেয়ে দু’জনেরই চিকিৎসা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy