ফাইল চিত্র।
এখনকার দামের থেকে কমে তো বটেই। ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর আগে অশোধিত তেলের দাম যেখানে ছিল, তার থেকেও কম দামে রাশিয়া ভারতকে তেল বেচতে আগ্রহী।
রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এখন দিল্লি সফরে। আমেরিকা রাশিয়ার থেকে তেল কেনা বন্ধ করেছে। সবাই না হলেও ইউরোপের বেশ কিছু দেশও একই পথে হেঁটেছে। তার পর থেকেই রাশিয়া চিনের পাশাপাশি ভারতকেও আরও বেশি তেল বেচতে চাইছে। এখন ইঙ্গিত মিলছে, ভারত যাতে রাশিয়ার থেকে আরও বেশি তেল কেনে, তার জন্য মস্কো অনেকখানি দাম কমাতে রাজি। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি প্রায় ১৫ ডলার বেড়েছে। সূত্রের খবর, রাশিয়া যুদ্ধের আগের দামের থেকেও ৩৫ ডলার কম দামে ভারতকে তেল বেচতে আগ্রহী। যার অর্থ, এখনকার বাজারদরের তুলনায় অনেকখানি কম দামে ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কিনতে পারবে।
আমেরিকা তেল কেনা বন্ধ করা সত্ত্বেও ভারত যে ভাবে রাশিয়ার থেকে তেল কিনে চলেছে, তাতে হোয়াইট হাউস সরাসরি আপত্তি তোলেনি। তবে ভারত রাশিয়ার থেকে তেলের আমদানি বাড়ালে ঝুঁকি রয়েছে বলে হোয়াইট হাউসের মত। ঝুঁকিটা কী, তা অবশ্য হোয়াইট হাউস খোলসা করেনি। ভারতের বক্তব্য, ইউরোপের অনেক দেশই রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস কেনা বন্ধ করেনি।
আমেরিকা রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধের কথা ঘোষণার পরেই এক লাফে অশোধিত তেলের দাম ১৩৯ ডলারে পৌঁছেছিল। এখনও তা ১০০ ডলারের উপরে। রাশিয়া যে আমেরিকা-ইউরোপের দেশগুলিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চিন-ভারতকে সস্তায় তেল বেচতে চাইছে, হোয়াইট হাউস তা বুঝতে পারছে। আজ আমেরিকা ইঙ্গিত দিয়েছে, বাইডেন প্রশাসন আপৎকালীন সময়ের জন্য মজুত করা তেল থেকে আগামী কয়েক মাসে ১৮০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ছাড়তে পারে। এই ইঙ্গিত মেলার পরেই আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি প্রায় ৫ ডলার কমে এসেছে। আজ মোদী সরকারের তেল মন্ত্রকও সংসদে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমানোর জন্য সরকার মজুত করা তেলের ভান্ডার থেকে তেল বাজারে ছাড়ার পক্ষে। গত নভেম্বরেই তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত নিজের মজুত থেকে ৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
প্রশ্ন হল, আমেরিকার সতর্কতা সত্বেও ভারত এখন রাশিয়ার থেকে সস্তায় তেল কেনার চুক্তি করবে কি না। রাশিয়া কতখানি সস্তায় ভারতকে তেল বেচতে চাইছে, আজ সংসদে তেল মন্ত্রক এ বিষয়ে প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেয়নি। তেল মন্ত্রক জানিয়েছে, ভারত মূলত ইরাক, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, নাইজিরিয়া, আমেরিকা থেকে তেল আমদানি করে। মোট তেল আমদানির মাত্র ১ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করা হয়।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, মস্কো চাইছে, ভারত এখনই রাশিয়ার থেকে ১৫ মিলিয়ন ব্যারেল কেনার চুক্তি করে ফেলুক। সে ক্ষেত্রে রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তক বন্দর থেকে ভারতের পূর্ব উপকূলে জাহাজে অশোধিত তেল পাঠানো শুরু হবে। সরকারি সূত্রের খবর, গত ১৫-২০ দিন ধরেই রাশিয়া ভারতকে আরও তেল বেচার প্রস্তাব দিচ্ছে। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক কেন্দ্রীয় তেলমন্ত্রী হরদীপ পুরীর সঙ্গে আলোচনায় সে কথা জানিয়েছিলেন। তবে তেল মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, রাশিয়া যে মানের তেল রফতানি করবে, রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি তা খুব বেশি পরিমাণে কেনার আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে ১৫ মিলিয়ন না হলেও ৩.৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল কেনার চুক্তি হতে পারে। পরিবহণ ও বিমার খরচও রাশিয়াই বহন করতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy