আফ্রিকা থেকে আরও চিতা আনছে ভারত। তবে এ বার কেনিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকা নয়। বোৎসোয়ানা সরকারের সঙ্গে চিতার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। আফ্রিকার দক্ষিণাংশের এই দেশ থেকে মে মাসের মধ্যেই চারটি চিতা ভারতে এসে পৌঁছোবে। মধ্যপ্রদেশ সরকার একটি বিবৃতিতে জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষকে (এনটিসিএ) উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে। তার পরের ধাপে আরও চারটি চিতা আসবে ভারতে। তবে সেগুলি কোন আফ্রিকান দেশ থেকে আনা হবে, এখনও নিশ্চিত নয়। কেনিয়ার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। চলতি বছরের মধ্যেই আরও আটটি চিতা ভারতের জঙ্গলে ছাড়া হবে।
শুক্রবার ভোপালে চিতা প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক হয়েছিল। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব, কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব সেই বৈঠকে ছিলেন। ছিলেন এনটিসিএ-র আধিকারিকেরাও। সেখানেই স্থির হয়েছে, মে মাসের মধ্যে আরও চারটি চিনা বোৎসোয়ানা থেকে আনা হবে। মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকা, বোৎসোয়ানা, কেনিয়া থেকে আরও চিতা আনার চেষ্টা চলছে। আগামী দিনে দু’টি দফায় আটটি চিতা আনা হবে। মে মাসের মধ্যে বোৎসোয়ানা থেকে চারটি চিতা আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তার পরের ধাপে আসবে আরও চার চিতা। ভারত এবং কেনিয়ার মধ্যে এই সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে।’’
আরও পড়ুন:
বৈঠকে এনটিসিএ জানিয়েছে, ভারতে চিতা প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত ১১২ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। শুধু মধ্যপ্রদেশে চিতার পুনর্বাসনের জন্যই খরচ হয়েছে তার ৬৭ শতাংশ অর্থ। তবে আগামী দিনে চিতাদের জন্য শুধু কুনো জাতীয় উদ্যান নয়, দ্বিতীয় একটি ঠিকানার কথাও ভাবা হয়েছে।
চিতাগুলিকে কুনোর পাশাপাশি আগামী দিনে গান্ধী সাগর অভয়ারণ্যেও রাখা হতে পারে। মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের সীমান্ত এলাকায় এই অভয়ারণ্য রয়েছে। এখানে চিতার পুনর্বাসনের জন্য দুই রাজ্যের মধ্যে সমঝোতা চলছে। কুনো এবং গান্ধীসাগরে চিতাদের দেখভালের জন্য বনকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণও শুরু হয়ে গিয়েছে।
এই মুহূর্তে কুনোতে মোট ২৬টি চিতা রয়েছে। তার মধ্যে ১৬টি রয়েছে খোলা জঙ্গলে। বাকি ১০টিকে সংরক্ষিত এলাকায় রাখা হয়েছে। এগুলির মধ্যে রয়েছে ১৪টি চিতাশাবক, যাদের জন্ম ভারতে। এনটিসিএ জানিয়েছে, চিতা আসার পর কুনোয় গত দু’বছরে পর্যটকের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে এই জঙ্গলে চিতা সাফারি শুরু করতে আগ্রহী কর্তৃপক্ষ। নিয়ম অনুযায়ী, সেই মর্মে আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আটটি নামিবিয়ান চিতা কুনোর জঙ্গলে নিয়ে আসা হয়েছিল। ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয় আরও ১২টি চিতা।