ফাইল চিত্র।
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী ‘হিন্দ স্বরাজ’ লিখেছিলেন ১৯০৯ সালে। সেই লেখায় ‘হিন্দ’ শব্দটিকে তিনি ধর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছেন, প্রায়ই যাকে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম বা বিশেষ ধর্মমতের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়। জে কে বাজাজ এবং এম ডি শ্রীনিবাস এই বিষয়টিকে সবিস্তার তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তাঁদের নতুন বই ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট: ব্যাকগ্রাউন্ড অব গাঁধীজি’স হিন্দ স্বরাজ’-এ। আগামী ১ জানুয়ারি রাজঘাটের গাঁধী দর্শনে এটি প্রকাশ করবেন আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত।
কোভিড পর্বে এই প্রথম সরাসরি কোনও বই প্রকাশের অনুষ্ঠান হতে চলেছে রাজধানীতে। কোভিড-পর্বের আগে ভাগবত গাঁধীজির উপরে আর একটি বই প্রকাশ করেছিলেন এই দিল্লিতেই। সেই অনুষ্ঠান হয়েছিল গাঁধী স্মৃতি মেমরিয়ালে। এ বারের অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে কোভিড-সংক্রান্ত বিধিগুলি কঠোর ভাবে মানা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
সরসঙ্ঘচালক ভাগবতই গাঁধীজির লেখা ‘হিন্দ স্বরাজ’ বইটির একটি ‘অথেন্টিক এডিশন’ প্রকাশ করেছিলেন ২০১১ সালে। সঙ্গে ছিলেন নরেন্দ্র মোদী, গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। বাজাজ ও শ্রীনিবাস জানাচ্ছেন, তাঁরা গাঁধীর লেখা মূল পাণ্ডুলিপি ও ১৯১০ সালে প্রকাশিত তার ইংরেজি সংস্করণের ভিত্তিতে ‘হিন্দ স্বরাজ’-এর একটি প্রামাণ্য সংস্করণ প্রকাশের চেষ্টা করেছিলেন। সেই চেষ্টারই ভিতে দাঁড়িয়ে এই নতুন বই। তাঁরা এতে ‘ধর্মীয় দেশভক্তি’ কী ভাবে লিখিত ‘হিন্দ স্বরাজ’-এ বিবর্তিত হয়েছে, কী ভাবে গাঁধী হয়ে উঠেছেন ‘হিন্দু দেশপ্রেমিক’ সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজ়-এর ফাউন্ডার-চেয়ারম্যান শ্রীনিবাস ও ফাউন্ডার-ডিরেক্টর বাজাজের কথায়, “বইটিতে আমরা মুলত তাঁরই বয়ানে পুরো গল্পটা ধরতে চেয়েছি।”
লেখক-জুটির যুক্তি, গাঁধী নিজেকে সব সময় হিন্দু বলে মানতেন। সমকালীন ব্যক্তিদের চোখে, বেশির ভাগ হিন্দুর চেয়ে নিজেকে উন্নততর বা ভাল হিন্দু বলেই মনে করতেন নিজেকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনেক খ্রিস্টান ও মুসলিম শুভানুধ্যায়ী ধর্ম বদলের জন্য তাঁকে চাপ দিতেন। সে সময় থেকেই তিনি নিজের ধর্মের সম্পর্কে গভীর ভাবে ভাবতে শুরু করেন। বুঝতে চেষ্টা করেন, ভাল কী আছে নিজের ধর্মে। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম কয়েক সপ্তাহের অভিজ্ঞতার নিরিখে ভাবতে শুরু করেন অন্যান্য তথাকথিত আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে কী তফাত ভারতীয় সমাজের। এই চিন্তনের মধ্য দিয়েই হিন্দু হিসেবে নিজের দায়িত্ব অনুভব করেন তিনি। ভারত ও ভারতীয়দের মর্যাদা রক্ষার জন্য যে সংগ্রাম (সত্যাগ্রহ) তিনি করে গিয়েছেন, তাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেটা তাঁর ‘ধর্মীয় দায়িত্ববোধ’ থেকেই। যে কারণে প্রায়ই তিনি প্রত্যয়ের সঙ্গে বলতেন, দেশপ্রেম তাঁর কাছে
ধর্মেরই একটি দিক বা অংশ। গাঁধীজির বক্তব্য, তাঁর জীবনই তাঁর বাণী। সেই জীবনের নতুনতর ব্যাখ্যা নতুন কোনও বিতর্ক বা রাজনীতির জন্ম দেবে কি না, সেটা স্পষ্ট হবে নতুন বছরে বইটি প্রকাশের পর, তার হাজার পাতা ওল্টানোর পর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy