নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
লাদাখে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে বিহার রেজিমেন্টের সেনাদের সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগকে কুর্নিশ! লকডাউনের মধ্যে ভিন্ রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরতে বাধ্য হওয়া বিহারি শ্রমিকদের কষ্ট-যন্ত্রণা ভাগ করে নেওয়ার চেষ্টা! আগামী দিনে তাঁদের নিজের গ্রামেই কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি! এমনকি ওই রাজ্যের যে গ্রাম থেকে প্রকল্পের উদ্বোধন, তার মুখিয়া এবং জনাকয়েক প্রতিনিধির সঙ্গে সামান্য ‘গল্পগাছা’!
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, শনিবার ভিডিয়ো কনফারেন্স মারফত গরিব কল্যাণ রোজগার অভিযানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে আগাগোড়া আসন্ন বিহার নির্বাচনকে পাখির চোখ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিছু পরিযায়ী শ্রমিকের পায়ে হেঁটে ফেরার কথা তোলার মতো ‘খুচরো খোঁচা’ বাদ দিলে, বিজেপির সঙ্গে সুখী জোটের ছবি তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও।
এমনিতে ৫০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে দেশের ৬টি রাজ্যের ১১৬টি জেলার জন্য। দিল্লি থেকে রিমোটের বোতাম টিপেই এ দিন তার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রকল্প শুরুর জায়গা হিসেবে বাছা হয়েছে বিহারের খগড়িয়া জেলার বেলদৌর ব্লকের তেলিহার গ্রামকে। ফলে উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্য কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও, প্রধানমন্ত্রী বলার আগে করোনা-সঙ্কটে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে বিহার সরকারের চেষ্টার খতিয়ান তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছেন নীতীশ। জোর দিয়েছেন কেন্দ্র-রাজ্য হাত মিলিয়ে কাজ করার বিষয়ে।
আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় আসছে দেশীয় ওষুধ, একটি ট্যাবলেটের দাম ১০৩ টাকা
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদী বারবার ‘গুজরাতি অস্মিতার’ কথা বলতেন। এ দিন নিজের বক্তব্যের শুরুতেই ‘বিহারি গর্বকে’ চাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। বলেছেন, “লাদাখে আমাদের বীরেরা যে বলিদান দিয়েছেন…দেশ তো সেনাকে নিয়ে গর্ব করেই। কিন্তু আজ যখন আমি বিহারের মানুষের সঙ্গে কথা বলছি, তখন গর্বের সঙ্গে তাঁদের বলতে চাই যে, এই পরাক্রম বিহার রেজিমেন্টের। সমস্ত বিহারির এতে গর্ব হয়।…বিহারের যে সাথীরা শহিদ হয়েছেন, তাঁদের শ্রদ্ধা জানাই। তাঁদের পরিবারকে বলতে চাই…এই দেশ তাঁদের সঙ্গে আছে।”
প্রধানমন্ত্রী বিলক্ষণ জানেন, বছর-শেষে ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা বিহারে ক্ষমতা ধরে রাখার পথে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে পরিযায়ী শ্রমিকদের দগদগে ক্ষত। ১৫ হাজার ট্রেনে প্রায় ২০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরেছেন বিহারে। নীতীশ সরকার তথা বিজেপির আশঙ্কা, ভোট-বাক্সে সেই ক্ষোভ উগরে দিতে পারেন তাঁরা। অনেকে বলছেন, তাঁদের কথা মাথায় রেখেই এই নতুন প্রকল্প। এবং সামনে ভোটের কথা ভেবে তার উদ্বোধনও এই রাজ্য থেকে।
ক্ষোভের জল মাপার চেষ্টাও এ দিন ভিডিয়ো কনফারেন্সে করেছেন মোদী। দিল্লি, গুরুগ্রাম, অজমের থেকে কাজ হারিয়ে ফেরা শ্রমিকদের তিনি হাসিমুখে জিজ্ঞাসা করেছেন, কেন ফিরতে হল? কী ভাবে ফিরলেন? কোয়রান্টিন কেন্দ্রে সব সুবিধা মজুত ছিল কি? শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে
বসার বন্দোবস্ত ছিল কি? এমনকি হাসির ছলে সুনীতা কুমারীকে বলেছেন, “আপনাদের নিশ্চয় খুব রাগ হয়েছে আমার উপরে। ভাবছেন, মোদীজি কী সব করলেন, আর কাজ গেল আমাদের।” উত্তর না-শুনে ফের হেসে বলেছেন, “আসলে রাগ থাকলেও, আমাকে তা বলছেন না। তাই তো?” সেই সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছেন, এখন আর জোর করে বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, এই প্রকল্পের দৌলতে কাজ মিলবে ঘরে বসেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy