ফাইল ছবি
উত্তরপ্রদেশ ভোটের দিকে তাকিয়ে মেরুকরণের লক্ষ্যে ঔরঙ্গজেবের প্রসঙ্গ টেনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কাশী বিশ্বনাথ করিডরের উদ্বোধন করে বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী ঔরঙ্গজেবকে ‘অত্যাচারী’ শাসক হিসাবে তুলে ধরেছিলেন। তার দু’সপ্তাহের মধ্যে মোদী ফের ঔরঙ্গজেব প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন। এ বারে লক্ষ্য পঞ্জাব ভোট।
যদিও এ বার মঞ্চটি ভিন্ন। শনিবার গুজরাতের কচ্ছে গুরুদ্বার লখপত সাহিবের গুরুপরব অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো মাধ্যমে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে গুরু তেগ বাহাদুরের বীরত্ব দেশকে শেখায়, কী ভাবে সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়।’’ সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “শিখ গুরুদের অবদান শুধু মাত্র আধ্যাত্মিকতা এবং সমাজের মধ্যেই আবদ্ধ নয়। আজ আমাদের দেশের বিশ্বাস এবং গৌরব যে সুরক্ষিত, তার পিছনে শিখ গুরুদের অবদান রয়েছে। গুরু নানক দেবজি এবং অন্যান্য শিখ গুরু যে শুধু মাত্র ভারতের বিবেককে প্রজ্জ্বলিত রেখেছেন, তাই নয়, ভারত যাতে নিরাপদ থাকে তারও ব্যবস্থা করেছেন।”
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সামনেই কড়া নাড়ছে পঞ্জাব ভোট। তার আগে আজ মোদীর গুরু বন্দনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। আজ তাঁর ঔরঙ্গজেবের প্রসঙ্গ টানা পঞ্জাবের নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই। উত্তরপ্রদেশের ভোটে খোলাখুলি ভাবেই হিন্দুত্বকে প্রচারের মূলধন করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ব্রাহ্মণ, জাটব, দলিত, রাজপুতকে এক ছাতার তলায় আনার জন্য হিন্দুত্বের মঞ্চ তৈরি করা হচ্ছে সচেতন ভাবে। বিভিন্ন জাতপাতকে এক সুরে গাঁথতে মোদী এবং যোগী আদিত্যনাথের কাছে উন্নয়ন নয়, হিন্দুত্বই এখনও অমোঘ সুতো। তাই বারবার মুসলিম শাসকদের টেনে আনছেন তাঁরা।
আজ মোদী বলেন, “ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে গুরু তেগ বাহাদুরের শৌর্য আমাদের শেখায়, সন্ত্রাস এবং ধর্মীয় উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে কী ভাবে একটি দেশকে লড়তে হবে।” মোদী বলেন, “সম্প্রতি আমরা সফল এবং নিরাপদ ভাবে আফগানিস্তান থেকে গুরু গ্রন্থ সাহিব ভারতে এনেছি। গুরুর মহিমা ছাড়া আর কি-ই বা বলবো একে। গোটা বিশ্বে গুরু নানক দেবজির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সর্বস্তরে চেষ্টা করা হচ্ছে।”
মোদীর বক্তৃতায় বারবার মুসলমান শাসকদের টেনে আনার এই অঙ্ককে আজ খোঁচা দিয়েছে বিজেপির প্রাক্তন প্রাক্তন শরিক শিবসেনা। মোদীর অহরহ দেওয়া স্লোগান, ‘সব কা সাথ, সব কা বিশ্বাস’ উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, এটি প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মুখেই মানাতো বেশি। রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, মোদী সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে নিয়ে চলা দূর স্থান, সাম্প্রদায়িক বিভাজনেই যে বিশ্বাসী, আজ নাম না করে সে কথাটাই তুলে ধরতে চেয়েছে শিবসেনা। পাশাপাশি এটাও মনে করিয়ে দিয়েছে, সব শরিককে পাশে নিয়ে চলা বাজপেয়ীর সঙ্গে কোনও তুলনাই হয় না মোদীর। মোদী জমানাতেই একের পর এক শরিক দল বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছে।
শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউতের কথায়, “বিজেপি-শিবসেনা জোট গ়ড়ার পিছনে অটলবিহারী বাজপেয়ীর মুখ্য ভূমিকা ছিল। ‘সব কা সাথ, সব কা বিশ্বাস’ সত্যিই তাঁর মুখে মানায়।” আজ বাজপেয়ীর জন্মদিনে তাঁকে স্মরণ করে সঞ্জয় বলেছেন, “জওহরলাল নেহরুর পরে বাজপেয়ী দেশের দ্বিতীয় নেতা, যাঁকে গোটা দেশ সম্মান করেছে। পুদুচেরি হোক বা নাগাল্যান্ড— মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে থাকেন।” বাজপেয়ীর পাশাপাশি লালকৃষ্ণ আডবাণীর নামও উল্লেখ করে শিবসেনা নেতার মন্তব্য, এই দুজনই বিজেপিকে গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy