‘স্মৃতি বন মেমোরিয়াল’-এর উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার গুজরাতের ভূজে। পিটিআই
গুজরাতেও বিলকিস বানোকে নিয়ে নরেন্দ্র মোদী নীরবই রইলেন।
গুজরাতের জেল থেকে বিলকিস বানোর ধর্ষণকারীরা মুক্তি পাওয়ার পরে মোদী নিজের রাজ্যে দু’দিনের সফর করলেন। খাদি থেকে সুজ়ুকি, ভূমিকম্প থেকে তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত—অনেক প্রসঙ্গই ঘুরে-ফিরে এল প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায়। শনি-রবি দু’দিনের সফরে শনিবার রাতে মায়ের সঙ্গেও দেখা করলেন। কিন্তু বিলকিস বানোকে ধর্ষণ ও তাঁর শিশুসন্তানকে খুনের অপরাধে দোষী ১১ জনকে গোধরার জেল থেকে মুক্তি দেওয়া নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না।
প্রধানমন্ত্রীর এই নীরবতা নিয়ে আজ ফের বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শনিবার থেকে গুজরাতে ছিলেন। বিলকিস বানো একজন ভারতীয়। তাঁর জন্ম, বড় হওয়া গুজরাতে। তিনি গুজরাতের মানুষ। এ নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না।’’ উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার মতে, মোদীর উচিত ছিল বিলকিস বানোর সঙ্গে দেখা করে পাশে দাঁড়ানো।
১৫ অগস্ট লাল কেল্লা থেকে নারীদের সম্মান নিয়ে অনেক কথা বলেছিলেন মোদী। সে দিনই গুজরাতের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় ২০০২-এ গুজরাতের হিংসার সময়ে বিলকিস বানোকে ধর্ষণে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের। তার পরে তাদের বিশ্ব হিন্দু পরিষদ থেকে রীতিমতো সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বিরোধীদের মতে, এ সবই গুজরাতের ভোটের আগে মোদী তথা বিজেপির হিন্দু তোষণের রাজনীতি।
আজ উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’ প্রধানমন্ত্রী মোদীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। শিবসেনার প্রশ্ন, ধর্ষণকারীদের সংবর্ধনা জানানো কি হিন্দু সংস্কৃতি? বিলকিস বানো মুসলিম বলে তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধে দোষীদের মাফ করা যায় না। এটা কোনও হিন্দু-মুসলমানের প্রশ্ন নয়। হিন্দুত্বের আত্মার প্রশ্ন, সংস্কৃতির সম্মানের প্রশ্ন। প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল বিলকিস বানোর সঙ্গে দেখা করে তাঁর পাশে দাঁড়ানো।
২০০২-এ গণধর্ষণের শিকার হওয়ার সময়ে বিলকিস বানো পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তাঁর তিন বছরের শিশুকন্যা-সহ পরিবারের সাত জনকে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় ১১ জন অপরাধীর যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিল। তাদের মুক্তি দেওয়ার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত আমলারা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী মুখে যা বলেন, কাজে তা করেন না। শিবসেনার মতে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই পওয়ারের কথা সত্যি বলে প্রমাণ করেছেন।
খাদি এবং জাতীয় পতাকা নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর কথা ও কাজে ফারাকের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। গত কাল মোদী আমদাবাদেখাদি উৎসবে যোগ দিয়ে বলেছিলেন, ছোটবেলায় তাঁর মা চরকায় সুতো কাটতেন। খাদির গুণগানও করেছিলেন। আজ ‘মন কি বাত’-এ প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে তিরঙ্গা নিয়ে দেশের আবেগের কথা বলেছেন। স্বাধীনতা দিবসের আগেই ‘হর ঘর তিরঙ্গা’-র জন্য মোদী সরকার পলিয়েস্টারের তৈরি তিরঙ্গার অনুমতি দিয়েছিল। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কটাক্ষ, ‘‘দেশের জন্য খাদি, অথচ জাতীয় পতাকার জন্য চিনেরপলিয়েস্টার। কোনও সময়ই প্রধানমন্ত্রীর কথা ও কাজ মেলে না।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, মোদীর সিদ্ধান্তের জন্যই কর্নাটকের একমাত্র খাদির তিরঙ্গা প্রস্তুতকারী সংস্থা বন্ধ হওয়ার মুখে। এ দিকে প্রধানমন্ত্রী গুজরাতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে চরকা ঘোরাচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy