প্রতীকী ছবি।
লাদাখে গিয়ে দেশ রক্ষায় জীবনপণ করা সেনাকে উৎসাহ জুগিয়ে আসার চব্বিশ ঘণ্টাও কাটেনি। এরই মধ্যে অ্যাপ-ময়দানে জমি দখলের জন্য ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি এবং স্টার্ট-আপ শিল্পকে ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার ‘আত্মনির্ভর ভারত’ তৈরির অঙ্গ হিসেবে উদ্বোধন করলেন ‘অ্যাপ ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ’-এর। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন দেশের মাটিতেই বিশ্ব মানের অ্যাপ (মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) তৈরির। লাদাখ-সঙ্ঘর্ষের প্রেক্ষিতে সদ্য ৫৯টি চিনা অ্যাপকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরে যা অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ।
এর আগে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেছেন, বিদেশি অ্যাপের উপরে নির্ভরতা কমানোটা একান্ত জরুরি। বিশেষত সেই অ্যাপ শত্রু-ভাবাপন্ন দেশের সংস্থার হলে। কারণ, তাতে তথ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা। বিদেশি অ্যাপ এবং সফটওয়্যারের উপরে নির্ভরতা কমাতে সাইবার নিরাপত্তা অডিটে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কোঅর্ডিনেটর। রবিশঙ্করের দাবি ছিল, অ্যাপের ময়দান খালি পেলে, তা দখলে প্রাণপণ ঝাঁপানোর উৎসাহ পাবে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও স্টার্ট-আপ শিল্প। আর এ দিন টুইটে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, সেই উৎসাহ লক্ষ্য করেই এই প্রতিযোগিতা শুরুর সিদ্ধান্ত।
সম্প্রতি বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিংহ স্পষ্ট জানিয়েছেন, চিন ও পাকিস্তানের থেকে বিদ্যুৎ শিল্পের কোনও যন্ত্র কিংবা যন্ত্রাংশ আমদানি করতে দেবেন না তাঁরা। সরকারি বরাতে চিনা সংস্থার যোগদান বন্ধ করা হচ্ছে। কাঁচামালের বিষয়ে ওই পড়শি মুলুকের উপরে নির্ভরতা কমাতে বলা হচ্ছে শিল্পকে। দেশে তৈরি যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ কেনার কথা বলা হচ্ছে। চিন-নির্ভরতা কমানোর মন্ত্র ফের আওড়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গডকড়ীও। তাঁর দাবি, ভারত তার নিজের মাটিতেই সমস্ত পণ্য তৈরিতে সক্ষম। কোনও চিনা সংস্থা, তাদের প্রযুক্তি কিংবা বিনিয়োগ এ দেশে প্রয়োজন নেই। জাতীয় সড়ক তৈরি থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে দেশীয় সংস্থাগুলিই যাতে কাজ করতে পারে, তার জন্য প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক শর্ত বদল সরকারের দিক থেকেও জরুরি বলে মেনে নিয়েছেন তিনি। কথায় পাল্টা তাল ঠুকছে বেজিংও।
আরও পড়ুন: মোদী চান ই-বই
কিন্তু দিল্লি বনাম বেজিংয়ের এই স্নায়ুর লড়াইয়ে বিপদে পড়েছে ভারতে ব্যবসা করা চিনা এবং চিনের উপরে নির্ভর করা ভারতীয় সংস্থাগুলি। ভারতের গাড়ি, ওষুধ, রাসায়নিক, বৈদ্যুতিন পণ্য, বস্ত্র-সহ বিভিন্ন শিল্প ইতিমধ্যেই বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে, রাতারাতি চিনের কাঁচামাল, যন্ত্র, যন্ত্রাংশ কিংবা পণ্যের উপরে নির্ভরতা মুছে ফেলা কঠিন। কারণ, শক্ত চটজলদি সস্তা বিকল্পের খোঁজ পাওয়া। তেমনই বাতিল হওয়া চিনা অ্যাপ টিকটক গোড়া থেকেই বার্তা দিচ্ছে, ভারতের সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে তারা দায়বদ্ধ। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি, ভারত সরকারকে চিঠিতে তারা জানিয়েছে যে, চিন সরকার তাদের কাছে ভারতীয় গ্রাহকদের তথ্য
(ডেটা) কখনও চায়নি। তা সুরক্ষিত আছে সিঙ্গাপুরের সার্ভারে। এমনকি বেজিং চাইলেও, তা না-দেওয়ার দাবি করেছে তারা। দু’দেশের সেনার পারস্পরিক চোখ রাঙানিতে আপাতত সব থেকে বেশি বিপদে সম্ভবত দুই পড়শি মুলুকের শিল্প ও বাণিজ্য মহলই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy