প্রতীকী ছবি
করোনায় মৃত চিকিৎসকের দেহ সমাধি দেওয়া নিয়ে রবিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড বেধেছিল চেন্নাইয়ে। অ্যাম্বুল্যান্স চালক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। গুরুতর জখম হন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত সহকর্মীকে সমাধি দিতে এগিয়ে আসেন উপস্থিত আর এক চিকিৎসক। পুলিশের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় শেষকৃত্য।
রবিবারের সেই রাতের কথা বলতে গিয়ে এখনও শিউরে উঠছেন মৃত চিকিৎসক সিমন হারকিউলিসের সহকর্মী চিকিৎসক কে প্রদীপ কুমার। তিনি বলছেন, ‘‘দু’জন অ্যাম্বুল্যান্স চালক যাঁরা দেহটি গাড়ি থেকে মাটিতে নামাচ্ছিল তারা গুরুতর জখম হন।’’ প্রদীপ আরও বলছেন, সমাধি দেওয়ার কাজের যাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন সেই দুই স্বাস্থ্যকর্মী জখম হন। আক্রান্ত হন আরও তিন জন। প্রদীপের দাবি, আক্রমণের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করেন তাঁরা। তিনি নিজেই অ্যাম্বুল্যান্স চালাতে শুরু করেন। প্রদীপের কথায়, ‘‘ওয়ার্ড বয় ও আমি মিলে কবরে দেহটা নামিয়ে দিই। আমাদের ভয় লাগছিল যে ফের হামলা হতে পারে। এমনকি পুলিশকর্মীরাও আমাদের কাছে আসতে ভয় পাচ্ছিলেন।’’
কী ভাবে সে দিন সহকর্মীকে সমাধি দিয়েছিলেন, সে কথা বলতে গিয়ে কার্যত ভেঙে পড়েন প্রদীপ। বলেন, ‘‘একটাই মাত্র বেলচা ছিল। সেটা এক জন ওয়ার্ড বয়কে দিই। বাকি আমরা দু’জনে হাত দিয়ে কবরে মাটি ফেলতে শুরু করি। কাজটা করতে ঘণ্টাখানেক লেগেছিল। ততক্ষণে রাত আরও গভীর হয়েছে। শেষের দিকে পুলিশকর্মীরাও আমাদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন।’’
আরও পড়ুন: টানা তিন দিন হাঁটা, খিদে-তেষ্টায় বালিকার মৃত্যু গ্রামে পৌঁছনোর মুখেই
রবিবার মৃত্যু হয়েছিল সিমন হারকিউলিস নামে চেন্নাইয়ের ওই চিকিৎসকের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগী দেখতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন সিমন। হাসপাতালে ১৫ দিন ধরে ভর্তি ছিলেন তিনি। শেষর্যন্ত হার মানতে হয় তাঁকে। কিন্তু, তাঁর দেহ সমাধি দিতে গেলে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও, মৃতদেহ বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। লাঠি নিয়েও চড়াও হন তাঁরা। হামলার জেরে জখম হন চালক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এমনকি যে কফিনে দেহটি ছিল তা-ও আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পায়নি। হামলাকারীদের অভিযোগ, ওই দেহ সমাধিস্থ করলে করোনা সংক্রমণ ছড়াবে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি ভবনে করোনা, আইসোলেশনে ১২৫ পরিবার
হামলার ঘটনায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হামলা চালানো-সহ একাধিক অভিযোগও আনা হয়েছে। এই ঘটনায় তামিলনাড়ু সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। ওই ঘটনায় পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে চিকিৎসকদের সংগঠনগুলিও।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy