Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
National

৫০ হাজার টাকার ওষুধ কোথায়? টুইটারে ডাক বিভাগকে তোপ দাগতেই মিলল পার্সেল

সেটা ৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু দু’দিন পর মাঝপথে কলকাতায় পৌঁছে সেই পার্সেল ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায়। পার্সেলের কোনও খোঁজখবর না পেয়ে দিন দশেক পরে শেষমেশ টুইটারে ভারতীয় ডাক বিভাগকে ট্যাগ করে অভিযোগ জানান তুষারবাবুর বন্ধু সুমিত শূর নামে এক চিকিৎসক।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

সোমনাথ মণ্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৪৫
Share: Save:

ডাক বিভাগ কি পথ হারাইয়াছে? প্রশ্নটা উঠছে। কারণ, সম্প্রতি রাজস্থান থেকে ত্রিপুরায় রেজিস্ট্রি ডাকে পাঠানো একটি পার্সেল পৌঁছতে সময় নিল প্রায় ২০ দিন! শুধু তাই নয়, মাঝপথে সেই পার্সেল হারিয়ে যায়। দিন পনেরো নিখোঁজ থাকার পর সেই পার্সেল আজ সোমবার প্রাপকের কাছে পৌঁছেছে।

যদিও ডাক বিভাগের ওয়েবসাইট বলছে, দু’দিন আগেই তা তুলে দেওয়া হয়েছে প্রাপকের হাতে। ডাক বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়েও কিন্তু প্রাপক তুষারকান্তি মণ্ডলের দাবি, ওই পার্সেল তিনি আজকেই পেয়েছেন।

কী ছিল ওই পার্সেলে? বর্ধমানের কাটোয়ার বাসিন্দা তুষারকান্তি মণ্ডল। বর্তমানে তিনি আগরতলায় আয়ুষ মন্ত্রকের আঞ্চলিক আয়ুর্বেদ সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (সায়েন্টিস্ট-৩)। তিনি জানান, তাঁর ছেলের জন্য একটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ জয়পুরের একটি জায়গা থেকে পার্সেলে করে পাঠানো হয়েছিল আগরতলার ঠিকানায়। রেজিস্ট্রি ডাকে পার্সেলটা পাঠানো হয়েছিল।

আরও পড়ুন: সিএএ: রণক্ষেত্র দিল্লি, আগুন-ইট-সঙ্ঘর্ষ, হত পুলিশকর্মী

সেটা ৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু দু’দিন পর মাঝপথে কলকাতায় পৌঁছে সেই পার্সেল ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায়। পার্সেলের কোনও খোঁজখবর না পেয়ে দিন দশেক পরে শেষমেশ টুইটারে ভারতীয় ডাক বিভাগকে ট্যাগ করে অভিযোগ জানান তুষারবাবুর বন্ধু সুমিত শূর নামে এক চিকিৎসক। তার পর সন্ধান মেলে পার্সেলের। তত দিনে কেটে গিয়েছে প্রায় ১৫ দিন। গোটা ঘটনায় ডাক বিভাগের চূড়ান্ত গাফিলতিকেই দায়ী করছেন সুমিত।

তুষারের কথায়, ‘‘ছেলের চিকিৎসার প্রয়োজনে জয়পুরের একটি আয়ুর্বেদিক প্রতিষ্ঠান থেকে ওই ওষুধটি অর্ডার করিয়েছিলাম। ৫০০ গ্রাম ওই ওষুধের দাম ৫০ হাজার টাকারও বেশি। ডাক বিভাগের যে ওয়েবসাইটে গিয়ে পাঠানো জিনিসপত্রের হদিশ পাওয়া যায় অনলাইনে, সেখানে ‘সিআর১৬৭৮০৮৩৮৮৯ইন’ কনসাইনমেন্ট নম্বর দিয়ে দেখি ৩ তারিখ ত্রিপোলিয়া বাজার থেকে সেটি রেজিস্ট্রি করা হয়। কলকাতায় পৌঁছয় ৫ ফেব্রুয়ারি।

এর পর আর সেটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার বন্ধু সুমিত বিষয়টি জানতে পেরে টুইট করেন। ওই টুইটি দেখে নড়চড়ে বসে ভারতীয় ডাক বিভাগ। ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই টুইটের উত্তর দেয় তারা।”

ডাক বিভাগ ওই টুইটে জানায়, দ্রুত পার্সেলটি গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তার পরেও সপ্তাহখানেক কেটে যায়। সুমিত বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত। তিনি বলেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ওষুধ অর্ডার দিয়ে আনা হচ্ছে। ৭ দিনের বেশি সময় লাগার কথাই নয়। মাত্র ২ দিনের মধ্যে কলকাতায় চলে এসেছিল। তার পর থেকে ট্র্যাক করা যাচ্ছিল না। কর্মীদের গাফিলতি ছাড়া আর কি-ই বা বলব!’’

১৫ ফেব্রুয়ারি ডাক বিভাগ টুইট করে দ্রুত পৌঁছনোর বার্তা দিলেও সেই পার্সেল আগরতলা পৌঁছয় ২১ তারিখ। তাদের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, ২১ তারিখ আগরতলা পৌঁছনোর পর সেই পার্সেল তুষারের তরফে ‘রিসিভ’ হয় ২২ তারিখ সকাল সওয়া ৮টা নাগাদ। কিন্তু তুষার এ দিন বলেন, ‘’২২ তারিখ অর্থাৎ শনিবার আমি কোনও পার্সেল পাইনি। আজ সোমবার অর্থাৎ ২৪ তারিখ সকালে ওই পার্সেল আমার হাতে দিয়ে রিসিভ কপিতে সই করিয়ে নেওয়া হয়।’’

আরও পড়ুন: আমেরিকা ভারতের প্রকৃত বন্ধু, ট্রাম্পকে পাশে নিয়ে বললেন মোদী

গোটা বিষয়টিতে ডাক বিভাগের গাফিলতি দেখতে পাচ্ছেন সুমিত। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘আমি ডাক বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজ আবার টুইট করেছি। কিন্তু সরকারি সংস্থার এমন গাফিলতি এবং মিথ্যাচার দেখে অবাক হচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Medicine Postal Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy