Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Earthquake

‘মৃদু মৃদু কম্পনে কমে বড় ভূকম্পের আশঙ্কা’

ছোট ছোট কম্পন দিয়ে কোনও বড় কম্পনের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০৫:১৯
Share: Save:

বছরখানেকের মধ্যে কয়েক বার কেঁপেছে কলকাতার মাটি। আর হিমালয়ের কোলে থাকা উত্তরবঙ্গের মাটি তো মাঝেমধ্যেই কেঁপে ওঠে। বৃহস্পতিবার দেশের পাঁচ-পাঁচটি এলাকায় ভূকম্প অনুভূত হয়েছে।

এই ধরনের ছোট ছোট কম্পন কোনও বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাস কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। তবে ভূবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এ-রকম ছোট ছোট কম্পন দিয়ে কোনও বড় কম্পনের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। আসলে ভূমিকম্পের তেমন কোনও পূর্বাভাসই হয় না। বরং বিজ্ঞানীদের অনেকের মতে, ছোট ছোট কম্পনে ভূগর্ভে সঞ্চিত শক্তি বেরিয়ে যাওয়ায় বড় কম্পনের আশঙ্কা কমে যায়।

খড়্গপুর আইআইটির ভূতত্ত্ব ও ভূপদার্থবিদ্যার অধ্যাপক শঙ্করকুমার নাথ জানাচ্ছেন, কোনও এলাকা ভূমিকম্পপ্রবণ কি না, সেখানে ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষা চালিয়ে তা বলা সম্ভব। এমনকি সেখানে কত মাত্রার ভূকম্প হতে পারে, তা-ও বলা যেতে পারে। কিন্তু ঠিক কবে, কোথায়, কখন কম্পন হবে, তা বলা যায় না। দীর্ঘদিন আগে বুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস) ভূমিকম্পের আশঙ্কার ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে বিভিন্ন জ়োনে ভাগ করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাইয়ের মতো শহরের মধ্যেও বিভিন্ন অঞ্চলকে ভূকম্পপ্রবণতা অনুযায়ী ভাগ করা হয়েছে। যাকে বলা হয় ‘মাইক্রোজ়োনেশন’।

আরও পড়ুন: লাদাখের জমি কবে ছাড়বে চিন, উত্তর নেই​

ভূবিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, ভূকম্পপ্রবণ এলাকায় ছোট ছোট কম্পন বড় মাপের ভূমিকম্পের আশঙ্কাকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে দেয়। শঙ্করবাবুর ব্যাখ্যা, চ্যুতির ভিতরে যে-প্রবল শক্তি সঞ্চিত হয়, তা মৃদু ভূকম্পের ফলে কিছুটা বেরিয়ে যায়। তার ফলে আবার সেই শক্তি সঞ্চিত হতে কিছু দিন সময় লাগে। যে-সব এলাকা ভূকম্পপ্রবণ, সেখানে ভূগর্ভে সঞ্চিত প্রবল শক্তি নির্গত হয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প তৈরি করে। ফলে মাঝেমধ্যে মৃদু ভূমিকম্প হলে সেই প্রাকৃতিক প্রবণতা বড় ধরনের বিপর্যয়কে পিছিয়ে দেয়। বিজ্ঞানীদের অনেকে বলছেন,

ভূকম্পপ্রবণ হওয়া সত্ত্বেও কোনও কোনও এলাকায় যদি দীর্ঘদিন ধরে একেবারেই কোনও কম্পন অনুভূত না-হয়, তা হলে বুঝতে হবে, যে-কোনও সময়ে সেখানে বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। ২০১৩ সালে দুই ভারতীয় ভূবিজ্ঞানীর একটি গবেষণাপত্রে মধ্য হিমালয়ে এমন একটি এলাকার কথা বলা হয়েছিল।

আরও পড়ুন: চিনা গুরুর মন্ত্রে চমক দিয়েও প্রশ্নে মোদী​

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এত ঘনঘন ভূমিকম্প হচ্ছে কেন? ভূবিজ্ঞানীরা জানান, ভারতীয় পাত ইউরেশীয় পাতের তলায় প্রবেশ করার পরিণামে হিমালয় পর্বতের জন্ম। এখনও বছরে একটি নির্দিষ্ট হারে ভারতীয় পাত ইউরেশীয় পাতের তলদেশে প্রবেশ করছে এবং তার ফলে প্রচুর শক্তি ভূগর্ভের বিভিন্ন চ্যুতি ও হিঞ্জে জমা হচ্ছে। এই মহাদেশীয় পাতের চলনের ফলেই হিমালয় অঞ্চলকে ভূকম্পের নিরিখে সক্রিয় বলা হয়। শঙ্করবাবু জানাচ্ছেন, হিমালয় তো ভীষণ ভাবে ভূকম্পপ্রবণ। ফলে জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, অরুণাচল প্রদেশে ভূমিকম্প অস্বাভাবিক নয়। দিল্লিও কুমায়ুন হিমালয় থেকে ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। দক্ষিণবঙ্গের তলা থেকে ময়মনসিংহ-কলকাতা ইয়োসিন হিঞ্জ এবং গড়ময়না-খণ্ডঘোষ চ্যুতি গিয়েছে। তাই ভূকম্পের আশঙ্কা আছে কলকাতা এবং লাগোয়া অঞ্চলেও।

অন্য বিষয়গুলি:

Earthquake Tremors Delhi Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy