কুয়ো থেকে তোলা হচ্ছে মৃতদেহ। ছবি: পিটিআই
কুয়ো থেকে একসঙ্গে ন’জনের দেহ উদ্ধারের পরে মনে করা হয়েছিল লকডাউনের জেরে অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা করেছে তেলঙ্গানার ওই পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারটি। তদন্তে পুলিশ জানতে পারল, আত্মহত্যা নয়, এটি খুনের ঘটনা। ওই ন’জনকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে খুনের অভিযোগে সঞ্জয়কুমার যাদব নামে বিহারের বাসিন্দা ২৪ বছরের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার তেলঙ্গানার ওয়ারঙ্গল জেলার গোরেকুন্টা গ্রামের একটি কুয়ো থেকে চার জনের দেহ উদ্ধার হয়। পরের দিন উদ্ধার হয় আরও পাঁচ জনের দেহ। এঁদের মধ্যে ছিলেন মহম্মদ মকসুদ-সহ পরিবারের ছ’জন, যাঁরা পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছিলেন, দু’জন বিহার ও এক জন ত্রিপুরার। এঁরা প্রত্যেকেই ব্যাগের কারখানায় কাজ করতেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, মকসুদের বিবাহবিচ্ছিন্না শ্যালিকা রফিকার সঙ্গে সম্পর্ক হয় বছর ছয়েক আগে ওয়ারঙ্গলে আসা ওই একই কারখানার শ্রমিক সঞ্জয়ের। পরে রফিকা তিন সন্তানকে নিয়ে সঞ্জয়ের সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। বিয়ে না-করলেও বছর চারেক একসঙ্গে ছিল এই যুগল। সম্প্রতি রফিকা সন্দেহ করেন, তাঁর মেয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছে সঞ্জয়। থানায় অভিযোগ করার হুমকি দেন তিনি। এর পরেই রফিকাকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষতে থাকে সঞ্জয়।
সঞ্জয় আশ্বাস দেয়, পশ্চিমবঙ্গে রফিকার পরিবারের সম্মতি নিয়ে তাঁকে বিয়ে করবে সে। ৬ মার্চ দু’জন পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেয়। পথেই রফিকাকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ও গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করে দেহ লোপাট করে সঞ্জয়। ওয়ারঙ্গল ফিরে সে জানায়, রফিকা পশ্চিমবঙ্গে তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু মকসুদের স্ত্রী জানতে পারেন, সঞ্জয় মিথ্যা বলছে। তিনি সঞ্জয়কে পুলিশের ভয় দেখান। এর পরেই মকসুদের পরিবারের সবাইকে খুনের ফন্দি আঁটে অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী থেকে দোকান-অফিস, শিকেয় দূরত্ববিধি, করোনা আক্রান্ত বাড়ার শঙ্কা
পুলিশ জানিয়েছে, ২০ মে মকসুদের ছেলের জন্মদিনে সঞ্জয় তাঁদের বাড়ি যায়। সেখানে ফাঁক বুঝে সকলের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় সে। মকসুদের পরিবারের সঙ্গে থাকতেন বিহার ও ত্রিপুরার আরও তিন শ্রমিক। প্রত্যেকেই অচেতন হয়ে পড়লে সঞ্জয় টেনে এনে তাঁদের কুয়োয় ফেলে দেয়।
পুলিশের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘সিসিটিভ ফুটেজ ও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট, আত্মহত্যা নয় ওই ন’জনকে খুন করেছিল সঞ্জয়। জেরার মুখে সে দোষ কবুল করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy