মণিপুরের হিংসা দমনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে দু’সপ্তাহ আগেই বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)-র প্রধান তথা মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা এ বার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে নিশানা করলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের বহুত্ববাদী আদর্শের পরিপন্থী।’’
উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট দলগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসতে বিজেপি যে জোট গঠন করেছে, সেই নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (নেডা)-র গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এনপিপি। লোকসভা ভোটের আগে প্রয়াত পিএ সাংমার প্রতিষ্ঠিত দল ওই জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে বলে ইতিমধ্যেই জল্পনা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে এনপিপির অবস্থান ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
আসন্ন বাদল অধিবেশনের সংসদে অভিন্ন দেওয়ানি বিল আসতে চলেছে বলে দাবি করেছেন দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। এমনকি, তার দিনটিও ‘জানিয়ে’ দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার কপিল টুইট করে লেখেন, ‘‘৫ অগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার হয়েছিল। ৫ অগস্ট রাম মন্দিরের শিলান্যাস হয়েছিল। আর আগামী ৫ অগস্ট অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আসতে চলেছে।’’
শুধু বিজেপি বা তার সহযোগী দলগুলি নয়, বিরোধী শিবিরের শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) এবং আম আদমি পার্টিও ইতিমধ্যেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল সমর্থনের বার্তা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় বিল পাশ করতে সরকারপক্ষকে তেমন বেগ পেতে হবে না বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। যদিও কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ বিরোধীরা, এমনকি বিজেপির একদা সহযোগী শিরোমণি অকালি দলও বিধির বিরোধিতা করেছে।
আরও পড়ুন:
গত ১৪ জুন কেন্দ্র-নিযুক্ত ২২তম আইন কমিশনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং আমজনতার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে সাড়ে আট লক্ষ ব্যক্তি এবং সংগঠনের প্রতিক্রিয়া জমা পড়েছে বলে আইন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে।
গত মাসে আইন কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আইন প্রসঙ্গে জনগণের মতামত নেওয়া শুরু করতেই জল্পনা শুরু হয়, লোকসভার আগে হিন্দু ভোটের মেরুকরণের লক্ষ্যে কেন্দ্র ওই আইন আনতে চলেছে। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের ভোপালে দলীয় কর্মসূচির মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বিষয়টি নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও পরিবারে যদি প্রত্যেক সদস্যের জন্য আলাদা আলাদা আইন থাকে, তা হলে কি সেই সংসার চালানো যায়?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশের এক একটি সম্প্রদায়ের জন্য যদি এক এক রকম আইন থাকে, তা হলে দেশ এগোতে পারে না। সংবিধানেও সকলের জন্য সমান আইনের কথা বলা আছে।’’ কিন্তু মোদীর সেই মতে সায় দিলেন না সহযোগী সাংমা।