ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি বিদেশনীতি সংক্রান্ত এক আলোচনায় বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের কারণে যে শারীরিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কে তা কিছু অবিশ্বাস ও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করেছে। সম্পর্কের গুমোট ভাব কাটাতে করোনা আবহাওয়ার মধ্যে তিনি নিজেই গিয়েছিলেন ঢাকায়। এ বার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে চলতি অস্বস্তিগুলিকে কাটিয়ে পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে ভিডিয়ো মাধ্যমে বসছে ‘জয়েন্ট কনসাল্টেটেটিভ কমিশন’ (জেসিসি)-এর বৈঠক।
আগামিকালের বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী এবং তাঁদের প্রতিনিধিরা। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে চলতি চুক্তিগুলির পর্যালোচনা এবং ভারতীয় অর্থে সে দেশে যে প্রকল্পগুলি চলছে, সেগুলির দ্রুত রূপায়ণ নিয়ে কথা হবে দু’পক্ষে। বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমনের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠান নিয়েও আলোচনা
হওয়ার কথা।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, দু’দেশের মধ্যে থমকে থাকা যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক আবার কী ভাবে এবং কবে শুরু করা যায়, তার সূত্র খুঁজবেন দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীরা। ভারতের লাইন অব ক্রেডিটে (এলওসি) যে পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি বাংলাদেশে চলছে সেগুলিতে গতি আনার জন্য সচিব পর্যায়ের মেকানিজ়ম গড়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। আগামী বছর দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। সেই উপলক্ষে আখাউড়া-আগরতলা রেল যোগাযোগ, মৈত্রী শক্তি প্রকল্প-সহ বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন হবে।
ভারত ইতিমধ্যেই ‘হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’-এর অধীনে জল পরিবহণ, নিকাশি ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে ৪০টি আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে কাজ করছে। কোন প্রকল্প কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মত বিনিময় করবেন দু’দেশের নেতৃত্ব।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, বিদেশ মন্ত্রক বরাবরই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে তৎপর। কিন্তু সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে এ বিষয়ে তালমিলের অভাব দেখা গিয়েছে সম্প্রতি। বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের প্রশ্নে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীর অবস্থানের পার্থক্য খুবই প্রকট হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে। এ নিয়ে দু’দেশের সম্পর্কে যে জটিলতা ও তিক্ততা তৈরি হয়েছে, তার রেশ রয়েছে এখনও। লকডাউনের আগে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সহমত তৈরি হয়েছিল যে, ভবিষ্যতে ভারত যদি কোনও অত্যাবশ্যক পণ্যের উপর রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তা হলে আগে থেকে বাংলাদেশকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সম্প্রতি পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার সময় সেই শর্ত মানা হয়নি ভারতের পক্ষ থেকে। সূত্রের খবর, বিদেশ মন্ত্রক সক্রিয় হয়ে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। শেষ পর্যন্ত সীমান্তে আটকে পড়া পেঁয়াজ পাঠানোর ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ভারতের একাধিক সীমান্ত যখন উত্তপ্ত, তখন বাংলাদেশের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক সুমধুর রাখাটা যে বিদেশনীতির বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে, ঘরোয়া ভাবে তা স্বীকার করছেন বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা। আগামিকালের বৈঠকে সে দিকেই নজর থাকবে ভারতের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy