ঘুমের ওষুধ চাইতে প্রথমে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন মেরঠের মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতের স্ত্রী মুস্কান রস্তোগী। নিজের অবসাদের কথা বলেছিলেন ডাক্তারকে। কিন্তু ঘুমের ওষুধ পাননি। প্রেসক্রিপশনে অবসাদের অন্য ওষুধপত্র লিখে দিয়েছিলেন ডাক্তার। পুলিশ জানতে পেরেছে, এর পর মুস্কান নিজেই ওই প্রেসক্রিপশনে ঘুমের ওষুধের নাম লিখে নেন। দোকানে দেখিয়ে তা কিনেও আনেন। স্বামীর খাবারের সঙ্গে ওই ওষুধ মিশিয়ে দিয়ে প্রেমিক সাহিল শুক্লর সাহায্যে তাঁকে খুন করেন মুস্কান।
মার্চেন্ট নেভি অফিসার খুনের প্রধান দুই অভিযুক্ত মুস্কান এবং সাহিল আপাতত জেলে। পুলিশ বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে। ঘুমের ওষুধ পাওয়ার জন্য মুস্কান যে ক্লিনিকে গিয়েছিলেন, সেখানে গিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি আদৌ মুস্কানকে ঘুমের ওষুধ দেননি। অন্য ওষুধ দিয়েছিলেন। পুলিশের অনুমান, বাড়ি ফিরে গুগ্ল সার্চ করেন তরুণী। সেখান থেকে কড়া ঘুমের ওষুধের নাম জোগাড় করেন। তার পর তা ওই ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে নিজে লিখে ফেলেন। দোকান থেকে সেই ওষুধ কিনে আনতেও এর পর তাঁর আর অসুবিধা হয়নি। চিকিৎসকের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
-
মার্চেন্ট নেভি অফিসারের মুন্ডু, হাত প্রেমিকের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মুস্কান, বাকি দেহ খাটের নীচে রেখে ঘুমোন সেখানেই!
-
মার্চেন্ট নেভি অফিসারের দেহ টুকরো করা হয় স্নানঘরে! স্ত্রীর স্বীকারোক্তি: সব শেষ করে শিমলা পাড়ি প্রেমিকের সঙ্গে
-
ফুঁপিয়ে কান্না, কখনও চুপ! খাননি খাবারও, জেলে প্রথম রাত কেমন কাটল মুস্কানের
যে দোকান থেকে মুস্কান ওষুধ কিনেছিলেন, যেখান থেকে তিনি প্লাস্টিকের ড্রাম কিনেছিলেন, সেখানকার কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের বয়ানও নথিভুক্ত হয়েছে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। প্লাস্টিকের ড্রাম কিনে নিয়ে গিয়ে স্বামীর দেহাংশ তাতে ভরেছিলেন মুস্কান। তার পর ড্রামে সিমেন্ট ঢেলে দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীকে খুনের আগে দীর্ঘ দিন ধরে গুগ্ল সার্চ করেছিলেন মুস্কান। সাহিলও এই পরিকল্পনায় তাঁকে সঙ্গ দেন। খুনের একাধিক বিষয় গুগ্ল থেকেই জানতে পেরেছিলেন তাঁরা। মেরঠের সারদা রোডের একটি দোকান থেকে তাঁরা মুরগি কাটার দু’টি ছুরি কিনেছিলেন। তা দিয়েই মার্চেন্ট নেভি অফিসারের দেহ কেটে ১৫টি টুকরো করেন। এসপি আয়ুষ বিক্রম সিংহ জানিয়েছেন, এখন তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। সাক্ষীদের বয়ানও রেকর্ড করা হচ্ছে। শীঘ্রই এই মামলার বিচার শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। মুস্কান এবং সাহিল স্ন্যাপচ্যাটে গল্প করতেন। সেই চ্যাটের অধিকাংশই তাঁরা মুছে ফেলেছেন। সেগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
২০১৬ সালের সৌরভ এবং মুস্কানের বিয়ে হয়। স্ত্রীর জন্য চাকরি ছেড়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেছিলেন সৌরভ। তাঁদের কন্যাসন্তান জন্মানোর পর সংসারের প্রয়োজনে সৌরভ বিদেশে চাকরি করতে যান। লন্ডন থেকে কিছু দিন আগেই ফিরেছিলেন। স্ত্রী এবং কন্যার জন্মদিন পালনের পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তার আগেই প্রেমিকের সঙ্গে মিলে সৌরভকে খুন করেন মুস্কান। তাঁর বাবা-মা জানিয়েছেন, তাঁরা মেয়ের মৃত্যুদণ্ড চান।