প্রেমিকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করেছেন মুস্কান রাস্তোগী। মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতের (৩২) দেহ ১৫ টুকরো করে কেটেছেন। তার পর প্রেমিক সাহিল শুক্লর সঙ্গে সোজা চলে গিয়েছেন শিমলা। সেখান থেকে ফেরার পর উত্তরপ্রদেশ পুলিশ মুস্কান এবং সাহিলকে গ্রেফতার করে। পুলিশি জেরার মুখে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন দু’জনই। কী ভাবে কী কী করেছিলেন, বর্ণনা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তাঁদের ছ’বছরের কন্যা পিহু পাশের ঘরেই ঘুমোচ্ছিল। সৌরভকে খুনের পর শৌচালয়ে দেহ নিয়ে গিয়েছিলেন মুস্কান এবং সাহিল। সেখানেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে দেহটি টুকরো টুকরো করে কাটেন। তার পর তা প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে সিমেন্ট ঢেলে দেন। পরে ড্রামটি উদ্ধার করে সিমেন্ট কেটে সেই দেহাংশ বার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শিমলা থেকে ফেরার পর বাপের বাড়িতে প্রশ্নের মুখোমুখি হন মুস্কান। সৌরভ বেশ কিছু দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। জামাইয়ের কথা জানতে চান মুস্কানের মা। চেষ্টা করেও প্রশ্ন এড়াতে পারেননি তরুণী। তিনি স্বীকার করে নেন, সাহিলের সঙ্গে মিলে স্বামীকে খুন করেছেন। এর পরেই মেয়েকে পুলিশের হাতে তুলে দেন মুস্কানের বাবা-মা। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা মেয়ের সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড চান। জামাই সর্বস্ব দিয়ে তাঁদের মেয়েকে ভালবেসেছিলেন। কিন্তু তাঁকেই খুন করে বেঁচে থাকার অধিকার হারিয়েছেন মুস্কান, মত তাঁর বাবা-মায়ের।
আরও পড়ুন:
২০১৬ সালে মুস্কানের সঙ্গে সৌরভের বিয়ে হয়েছিল। স্ত্রীকে সময় দিতে চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন যুবক। ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। পরে মেয়ে হওয়ার পর আর্থিক চাহিদার কারণে বিদেশে চাকরি নিয়ে চলে যান। কিছু দিন আগে স্ত্রী এবং কন্যার জন্মদিন পালন করতে ফিরেছিলেন লন্ডন থেকে। তখই তাঁকে খুন করা হয়। পুলিশি জেরার মুখে মুস্কান জানিয়েছেন, গত ৪ মার্চ রাতে সৌরভের খাবারের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের মেয়ে পাশের ঘরে ঘুমোচ্ছিল। খাওয়ার পর সৌরভ ঝিমিয়ে পড়লে মুস্কান প্রেমিককে ডাকেন। দু’জন মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সৌরভের বুকে একাধিক বার কোপ মারেন। মৃত্যুর পর দেহ নিয়ে যান স্নানঘরে।
১৫ টুকরো করার পর ড্রামে দেহাংশগুলি ভরে সিমেন্ট দিয়ে এঁটে দেন মুস্কানরা। পরের দিন মেয়েকে বাপের বাড়িতে রেখে আসেন তরুণী। তার পরেই শিমলা চলে যান। সৌরভ লন্ডনে চাকরি নিয়ে চলে যাওয়ার পর প্রতিবেশী যুবক সাহিলের প্রতি তিনি আকৃষ্ট হয়েছিলেন, পুলিশকে জানিয়েছেন মুস্কান। তিনি উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন, মেনে নিয়েছেন তাঁর বাবা-মাও।