মেরঠের পুলিশ সুপার (ছবির একেবারে ডান দিকে) শাসাচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত।
বিরোধীদের উদ্দেশে প্রায়ই এ কথা বলে থাকেন বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা। এ বার সেই কথা মেরঠের পুলিশকর্তার গলাতেও। স্থানীয় মুসলিমদের পাকিস্তানে চলে যাওয়ার ধমকানি দিয়েছেন তিনি।
২০ ডিসেম্বরের এই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল। সমালোচনার মুখে এ দিন মেরঠের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অব পুলিশ (সিটি) অখিলেশ নারায়ণ সিংহ স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘‘সে দিন ওই ভাবে কথা বলা আমার ঠিক হয়নি।’’ তবে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘সে দিন আমাদের কাছে খবর ছিল, ওই গলিতে বেশ কয়েক জন যুবক জড়ো হয়েছে। পুলিশ সেখানে পৌঁছতেই তারা পাকিস্তান-পন্থী স্লোগান দিয়ে গলির মধ্যে দিয়ে ছুটে পালায়। ওই যুবকদেরই সম্পর্কেই পাকিস্তানে চলে যাওয়ার কথা বলেছিলাম।’’
অখিলেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন মেরঠের এডিজি প্রশান্ত কুমার। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘সে দিন যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকত, তা হলে অন্য ভাষায় কথা বলা যেত। কিন্তু সে দিন পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হচ্ছিল। ভারত-বিরোধী স্লোগান উঠছিল। পুলিশ যথেষ্ট সংযমের পরিচয় দিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: জেটলির অভাব বোঝা যাচ্ছে, খেদ বেঙ্কাইয়ার
ঘটনার দিন সিএএ-র বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন মেরঠের মানুষ। সেই বিক্ষোভ থেকে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। প্রাণ যায় ছ’জনের। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীর সঙ্গে একটি সরু গলিতে টহল দিচ্ছেন অখিলেশ। সেই সময় কয়েক জন মুসলিমকে দেখে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। হুমকির সুরে বলেন, ‘‘কোথায় যাবে? এই গলিকে আমি ঠিক করে দেব।’’ মুসলিমদের মধ্যে থেকে এক জন উত্তর দেন, ‘‘আমরা নমাজ পড়তে গিয়েছিলাম।’’ অখিলেশ পাল্টা বলেন, ‘‘সেটা ঠিক আছে। কিন্তু কালো আর হলুদ ব্যাজ যারা পরে আছে, তাদের বলো পাকিস্তানে চলে যেতে। যদি এই দেশে থাকতে ইচ্ছে না হয়, তা হলে চলে যাও ভাই। এখানে খাবে আর গুণগান গাইবে অন্য জায়গার, এটা চলবে না।’’ উত্তরে এক মুসলিম ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনি ঠিক বলেছেন।’’ এর পরে বেশ খানিকটা এগিয়ে যান পুলিশকর্তা অখিলেশ। ফের ফিরে এসে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এক এক ঘরের এক এক জনকে আমি জেলে ঢুকিয়ে দেব। সকলকে শেষ করে দেব।’’
এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ স্বয়ং ‘বদলা’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশেই নৃশংস বলপ্রয়োগ করছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির আরও অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পোশাক দেখে বিক্ষোভকারীদের চেনার কথা বলার পরেই পুলিশ বেছে বেছে মুসলিমদের নিশানা করছে। এই হুমকি-ভিডিয়োই তার প্রমাণ।
কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা শনিবার টুইট করেন, ‘‘ভারতের সংবিধান কোনও নাগরিকের সঙ্গেই এমন ভাষা প্রয়োগের অনুমতি দেয় না। আর যখন আপনি গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছেন, তখন আপনার দায়িত্ব আরও বেশি।’’
বিজেপির সমালোচনা করে প্রিয়ঙ্কা আরও লেখেন, ‘‘বিজেপি বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষ এমন ভাবে গুলে দিয়েছে যে, এক জন অফিসারেরর কাছেও সংবিধানের নামে শপথের কোনও কদর নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy