Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Devendra Fadnavis

ওষুধ-দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ ফডণবীস

পুলিশকে অবাক করে দিয়ে ওই পরিচালকের হয়ে তদ্বির করতে গত কাল থানায় পৌঁছে যান মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০২
Share: Save:

দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় হাহাকার দেখা দিয়েছে রেমডেসিভিয়ার ওষুধ ঘিরে। ন’শো টাকার ওষুধ বিক্রি হচ্ছে কুড়ি গুণ দামে। বাড়তি টাকা দিয়েও মরণাপন্ন আত্মীয়ের জন্য ওষুধ পাচ্ছেন না আমজনতা। তখন গুজরাতের বিজেপি রাজ্য সভাপতি সি আর পাটিলের পরে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের বিরুদ্ধে মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে রেমডেসিভিয়ার ওষুধ কালোবাজারি করার অভিযোগে সরব হলেন বিরোধীরা। সব মিলিয়ে রেমডেসিভিয়ার ওষুধ প্রশ্নে ফের এক বার অস্বস্তিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা কে বিজয় রাঘবন এক টুইটে বলেছেন, ‘‘রেমডেসিভিয়ার করোনা সারায় না। ওই ওষুধ ব্যবহার করলে অনেক সময়ে রোগীকে বেশি দিন হাসপাতালে রাখার প্রয়োজন হয় না।’’

দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা লাফ দিয়ে বাড়ায় রেমডেসিভিয়ার ওষুধ রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত কাল ওই ওষুধের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানো ও দাম কমানো নিয়ে উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্র। তার পরেই দেশের সাতটি প্রধান ওষুধ নির্মাণকারী সংস্থা ওই ওষুধের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার যখন রেমডেসিভিয়ারের জোগান স্বাভাবিক করতে চাইছে তখন ওই ওষুধ দেশে কালোবাজারি ও বিদেশে বেশি দামে বিক্রি করার চক্রের সঙ্গে মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীসের নাম জড়িয়ে গেল। গত কাল দমনের ব্রুক ফার্মা নামে এক সংস্থার গুদামে তল্লাশি চালিয়ে রেমডেসিভিয়ারের প্রায় ৬০ হাজার ফাইলের খোঁজ পায় মহারাষ্ট্র পুলিশ। অভিযোগ, রফতানি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও ওই ওষুধ বিদেশে পাঠানোর তালে ছিল ওই সংস্থা। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ওষুধ সংস্থার এক পরিচালককে ডেকে পাঠায় মহারাষ্ট্রের ভিলে পার্লে থানার পুলিশ।

পুলিশকে অবাক করে দিয়ে ওই পরিচালকের হয়ে তদ্বির করতে গত কাল থানায় পৌঁছে যান মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র। কেন তিনি ওষুধ সংস্থার হয়ে তদ্বির করতে গিয়েছিলেন তার ব্যাখ্যা দিতে দেবেন্দ্র বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল ওই ওষুধ সংস্থার দোষ কোথায়? ওই সংস্থা দমন ও মহারাষ্ট্র প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই রেমডেসিভিয়ার মজুত করেছিল।’’ কিন্তু নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কেন তারা ওই জীবনদায়ী ওষুধ বিদেশে পাচার করছিল তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি দেবেন্দ্র। উল্টে তিনি দাবি করেন, মহারাষ্ট্রের মানুষের যাতে রেমডেসিভিয়ারের ঘাটতি না হয় সে জন্য তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে ওই ওষুধ দমন থেকে এনেছিলেন। তাঁর পরিকল্পনা ছিল ওই ওষুধ মহারাষ্ট্র সরকারের হাতে তুলে দেওয়া। সমাজকর্মী সাকেত গোখলে পাল্টা প্রশ্নে জানতে চেয়েছেন, কেন ফডণবীস রাজ্য সরকারের মাধ্যমে ওই ওষুধ সংগ্রহে তৎপর হলেন না?

গত কাল এনসিপি নেতা নবাব মালিক অভিযোগ করেছিলেন বিরোধী শাসিত রাজ্য হওয়ায় নরেন্দ্র মোদী সরকার মহারাষ্ট্রে রেমডেসিভিয়ার পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। কংগ্রেস নেতা সচিন সবন্তের অভিযোগ, ওষুধ সংস্থার হয়ে যে ভাবে দেবেন্দ্র তদ্বির করেছেন, পুলিশের উপরে ‘চড়াও’ হয়েছেন তা থেকেই স্পষ্ট বিজেপি সরকার সাধারণ মানুষ নয়, কেবল শিল্পপতিদের কথা ভাবে। গুজরাতের পাটিলের মতো মহারাষ্ট্রেও দেবেন্দ্র রেমডেসিভিয়ার মজুত করে বিজেপি দফতরের মাধ্যমে ওই ওষুধ বিতরণের পরিকল্পনা নিয়েছিল বলে অভিযোগ সাকেত গোখলের। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অমিত শাহকে চিঠি লিখে অবিলম্বে রেমডেসিভিয়ার কালোবাজারির পিছনে দেবেন্দ্রের ভূমিকার তদন্ত করে দেখার দাবি তুলেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Devendra Fadnavis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy