Advertisement
১৪ অক্টোবর ২০২৪
India-Canada relation

ভারতীয় হাই কমিশনারকে ফেরানো হচ্ছে কানাডা থেকে, জঙ্গি নিজ্জরের খুন ঘিরে ফের সংঘাত কূটনীতিতে

২০২৩ সালের জুনে কানাডায় দুই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী গুলি করে খুন করেছিল খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে। এই খুনে ভারতীয় হাই কমিশনারের ‘স্বার্থ’ জড়িত বলে দাবি কানাডার।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে), কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (ডান দিকে)।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে), কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৩৪
Share: Save:

কানাডার মাটিতে খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে হত্যার অভিযোগের আবার আচমকা প্রভাব নয়াদিল্লি-অটোয়া দ্বিপাক্ষিক কূটনীতিতে। কানাডা সরকার সে দেশের নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনারের সঙ্গে ওই খুনের ‘সম্পর্কের’ অভিযোগ তুলতেই সোমবার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। এর পর প্রত্যাহার করা হল হাই কমিশনার সঞ্জয়কুমার বর্মাকে। কানাডা সরকারের নিশানায় রয়েছেন, এমন কূটনীতিকদের ফেরত আনা হচ্ছে বলেও বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

কানাডা সরকারের তদন্তকারী সংস্থা নিজ্জর হত্যায় ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জয়কুমার বর্মাকে ‘স্বার্থ সম্পর্কিত ব্যক্তি’ বলে জানিয়েছিল রবিবার। যদিও কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ করা হয়নি। সোমবার সকালে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সরকারের এই পদক্ষেপ ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অযৌক্তিক’ বলে অভিযোগ করা হয়। সেই সঙ্গে বলা হয়, ‘‘বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কানাডা সরকার নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ পেশ করেনি।’’ এর পর সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সঞ্জয়কে ফেরত আনার কথা জানানো হয়।

গত বছর নিজ্জর হত্যায় সম্পর্ক আছে অভিযোগ তুলে এক ভারতীয় কূটনীতিকে বহিষ্কার করেছিল কানাডা। সে সময় কানাডার বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি জানিয়েছিলেন, ওই ভারতীয় কূটনীতিক গুপ্তচর সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ (আরএডব্লিউ)-এর কানাডার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব সামলাতেন। ট্রুডো সরকারের ওই পদক্ষেপের জবাবে ভারতে নিযুক্ত কানাডার এক সিনিয়র কূটনীতিককে বহিষ্কার করে পাঁচ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সোমবার ট্রুডো সরকারের অভিযোগকে, ‘রাজনৈতিক লাভের জন্য ভারতকে অপমান করার একটি ইচ্ছাকৃত অপপ্রচার’ বলেও জানিয়েছে সাউথ ব্লক।

প্রসঙ্গত, রবিবার কানাডা সরকারের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে যাঁদের স্বার্থ জড়িত, সেই তালিকায় ভারতীয় হাই কমিশনারও রয়েছেন। বিদেশ মন্ত্রকের পাল্টা অভিযোগ, কানাডার আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টরপন্থী খলিস্তানি গোষ্ঠীগুলির সমর্থন পাওয়ার জন্য ট্রুডো সরকার নতুন করে নিজ্জর বিতর্ক সামনে নিয়ে আসছে। খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে ২০২০ সালে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করেছিল ভারত। তিন বছর পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে তাঁকে হত্যা করা হয়। এর পরে নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো।

বস্তুত, তার পর থেকেই দু’দেশের সম্পর্কে চিড় ধরে। ট্রুডোর ওই অভিযোগের পর, প্রধানমন্ত্রী মোদী অভিযোগ করেছিলেন, ভারত ভাগ করতে চাওয়া মৌলবাদী শক্তি খলিস্তানপন্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে কানাডা। নিজ্জর খুনে জড়িত সন্দেহে কয়েক জন ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে গত বছর গ্রেফতার করেছিল কানাডা পুলিশের ইন্টিগ্রেটেড হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন টিম (আইএইচআইটি)। এর পরে চলতি বছরের এপ্রিলে কানাডার নিরাপত্তা বিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা (সিএসআইএস) সম্প্রতি তদন্ত রিপোর্টের নির্যাস প্রকাশ করে। তাতে দাবি করা হয়, ২০১৯ এবং ২০২১-এর সাধারণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পাকিস্তান এবং ভারত গোপনে সক্রিয় ছিল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE