—নিজস্ব চিত্র।
ভরসন্ধ্যায় মুখোশ পরে, লাঠিসোঁটা নিয়ে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এ হামলা চালাল এক দল দুষ্কৃতী। দুষ্কৃতী হামলায় জখম হয়েছেন ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ঐশী ঘোষ-সহ বহু পড়ুয়া ও শিক্ষক। তবে ওই ঘটনায় ঠিক কত জন আহত, সে সংখ্যা সঠিক ভাবে জানা যায়নি। পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, এবিভিপি-র সদস্যরাই এই হামলা চালিয়েছেন। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। তাদের পাল্টা দাবি, বামপন্থীরাই তাঁদের হস্টেলে এ দিন প্রায় আট ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আচমকাই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে পড়েন জনা পঞ্চাশেক দুষ্কৃতী। তাঁদের প্রায় প্রত্যেকের মুখেই মুখোশ ছিল। হাতে বড় বড় লাঠি-পাথর নিয়ে একের পর এক হস্টেলে তাণ্ডব চালায় তাঁরা। মুহূর্তের মধ্যে গোটা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছ়ড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ছোটাছুটি করতে থাকেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তাঁদের তাড়া করছেন এক দল মুখোশ পরা দুষ্কৃতী।
আরও পড়ুন: সিএএ নিয়ে যুবসমাজকে বোঝাতে আগ্রহী মোদী সরকার, জানালেন রবিশঙ্কর
এই হামলায় জখম হয়েছেন ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ঐশী ঘোষ। তাঁকে এ দিন সন্ধ্যাতেই এমস-তে ভর্তি করানো হয়েছে। হামলার ফলে দৃশ্যত আতঙ্কিত ঐশীর বলেন, ‘‘মুখোশপরা গুন্ডারা আমাকে নৃশংস ভাবে আক্রমণ করে। আমাকে বেদম পিটিয়েছে। আমার রক্ত ঝরছে।’’
ভাঙচুরের পর জেএনইউ ক্যাম্পাস।—ছবি টুইটার থেকে সংগৃহীত।
সংবাদমাধ্যমের কাছে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক অতুল সুদ বলেন, ‘‘কারা হামলা করেছে, তাঁদের আমি চিনতে পারিনি। তবে হাতে লাঠি-পাথর নিয়ে একের পর এক হস্টেলে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে ওরা। ওদের হাতে বড় বড় পাথর ছিল, যাতে আমাদের অনেকেরই মাথা ফেটে যেতে পারত। এক বার আমি পড়ে যাই। এর পর যখন বাইরে বার হই, দেখলাম আমার গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে ওরা।’’
BREAKING NEWS from #JNU#Media, civil society people move quickly to Jawaharlal Nehru University in Delhi right now.
— Natasha Badhwar (@natashabadhwar) January 5, 2020
There are masked, armed persons entering hostels and attacking students.
Video of Aishe Ghosh, President, JNUSU injured in attack. pic.twitter.com/JmAKobWRji
এই হামলার পিছনে অভিযোগ উঠেছে এবিভিপি-র বিরুদ্ধে। তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করে এবিভিপি-র সভাপতি দুর্গেশ কুমারের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘গত দু’মাস ধরে কারা ক্যাম্পাসে অশান্তি ছড়াচ্ছে? ৫০-৬০ জন কি হাজার জনকে মারতে পারে?’’
আরও পড়ুন: দেশে প্রথম! সিএএ-এর আওতায় শরণার্থীদের চিহ্নিত করা শুরু উত্তরপ্রদেশে
যদিও ওই হিন্দুত্ববাদী ছাত্র সংগঠনের তরফে হামলার কথা অস্বীকার করলেও তা মানতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প়়ড়ুয়াদের একাংশ। এই হামলায় জেএনইউ ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। একের পর এক হস্টেলে ঢুকে ভাঙচুর চালালেও সে সময় ক্যাম্পাসে কোনও পুলিশকর্মী চোখে পড়েনি। ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রমোদ কুমার ক্যাম্পাসে শান্তি বজায় রাখার পাশাপাশি সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। একটি বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সমস্ত জেএনইউ সম্প্রদায়ের প্রতি এই বার্তা। মুখোশধারী দুষ্কৃতীরা লাঠি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ভাঙচুর ও হামলা চালাচ্ছে। জেএনইউ কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকা ডেকেছেন। এই সময়ে শান্তি বজার রাখার পাশাপাশি সতর্ক থাকাটা জরুরি। দুষ্কৃতীদের ধরার জন্য প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।’’
I am so shocked to know abt the violence at JNU. Students attacked brutally. Police shud immediately stop violence and restore peace. How will the country progress if our students will not be safe inside univ campus?
— Arvind Kejriwal (@ArvindKejriwal) January 5, 2020
জেএনইউ-এর ঘটনায় রীতিমতো হতবাক দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘জেএনইউ-তে হিংসার ঘটনায় আমি শক্ড। পড়ুয়াদের নৃশংস ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। পুলিশের উচিত অবিলম্বে এই হিংসা থামিয়ে শান্তির ফিরিয়ে আনা। নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই যদি পড়ুয়ারা সুরক্ষিত না থাকতে পারেন, তবে দেশের উন্নতি হবে কী করে?’’
JNU में जिस तरह नक़ाबपोश अपराधियों ने छात्रों और अध्यापकों पर हिंसक हमला किया है वो बेहद निंदनीय है. इस विषय में तत्काल उच्च स्तरीय न्यायिक जाँच होनी चाहिए.
— Akhilesh Yadav (@yadavakhilesh) January 5, 2020
কেজরীবালের মতোই এই ঘটনার নিন্দা করেছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। টুইট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘জেএনইউ-তে যে ভাবে মুখোশধারী অপরাধীরা পড়ুয়া ও অধ্যাপকদের উপর হামলা চালিয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy