রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খড়্গে ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খড়্গের ডাকা বৈঠকে আজ তৃণমূল কংগ্রেস যে যাবে না সেটা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল, ওই বৈঠকে গরহাজির সমাজবাদী পার্টি (এসপি), শিবসেনা, আম আদমি পার্টি (আপ), জেডিএস-এর মতো দলগুলি। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের তরফে বিরোধী বৈঠকের ডাক দেওয়ার পরে ওই দলগুলির সঙ্গে ‘ব্যাক চ্যানেল’ কথা শুরু করেন তৃণমূলের রাজনৈতিক ‘ম্যানেজারেরা’। শেষ পর্যন্ত ওই দলগুলি জানিয়ে দেয়, কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে তারা হাজির হবে না।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, সনিয়া গাঁধীর দলের সঙ্গে শুধু কক্ষ সমন্বয়ের ক্ষেত্রে দূরত্ব তৈরিই নয়, এ বারের শীতকালীন অধিবেশনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে বেশ কিছু বিরোধী দলের সঙ্গে ‘ব্যাক চ্যানেল’ আলোচনা চালাতেও দেখা যাবে। উদ্দেশ্য, অকংগ্রেসি আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে জোট তৈরি করা। সূত্রের বক্তব্য, আজকের কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে এসপি এবং জেডিএস-এর না যাওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। উত্তরপ্রদেশের এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রশ্নই নেই। অন্য দিকে, মমতা উত্তরপ্রদেশে নিজেদের সংগঠন বাড়ানোর কথা বলেও স্পষ্ট জানিয়েছেন, অখিলেশ যদি চান, তা হলে তাঁর দল পাশে থেকে সমর্থন করবে। আবার অখিলেশও সম্প্রতি বেশ কয়েকবার বলেছেন, বিরোধী জোটের নেত্রী হিসাবে মমতাকে চান তাঁরা।
নিয়মিত হাজির না হলেও আপ এবং জেডি(এস) রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার ডাকা বৈঠকে এর আগে মাঝে মধ্যেই থেকেছে। এখন অবশ্য আপ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। তারা পঞ্জাবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়ছে। উত্তরপ্রদেশে এসপি-র সঙ্গে যোগ দিয়ে লড়বে অরবিন্দ কেজরীবালের দল।
আজ কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে যায়, রাজ্যসভার ১২ জন বিরোধী সাংসদ সাসপেন্ড হওয়ার পরে। ওই সাংসদদের মধ্যে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ অন্যান্য দলের সাংসদও ছিলেন। কংগ্রেস প্রতিবাদে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে বিভিন্ন বিরোধী দলের সই থাকলেও, তাতে নেই তৃণমূল। কংগ্রেস পৃথক ভাবে একই বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছে, অন্য দিকে আলাদা করে সাংবাদিক বৈঠক করেছে তৃণমূল। এ বিষয়ে রাজ্যসভায় তৃণমূলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কংগ্রেস কী করছে না করছে তা আমাদের জানায়নি। আমরা আমাদের অবস্থান নিয়ে চলব।” আগামিকাল এই বিষয়ে সকালে আবার বৈঠক ডেকেছে কংগ্রেস। কিন্তু সেখানে উপস্থিত থাকবে না তৃণমূল।
আজ সকাল থেকেই সংসদের দু’টি কক্ষে বিরোধীরা সরব হয়েছেন, আলোচনা না করে কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পাশ করানোর প্রতিবাদে। কিন্তু কখনই কংগ্রেসের সঙ্গে একযোগে বিক্ষোভে দেখা যায়নি তৃণমূলকে। সকালে কংগ্রেস সংসদ ভবন চত্বরে গাঁধী মূর্তির সামনে বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। পরে তৃণমূল গিয়ে তাদের মতো বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূলের তৎপরতা দেখে অনেক সময়ই প্রশ্ন উঠেছে, মমতার দল কি ‘কংগ্রেস মুক্ত ভারত’ চাইছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশের মতে, তৃণমূল কংগ্রেস মুক্ত ভারত চাইছে না। তাদের লক্ষ্য, ভোটের আগে আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে মমতার নেতৃত্বে একটি জোট তৈরি করা। সেই জোট যদি আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভাল সংখ্যক আসন পায়, তা হলে বিজেপি-কে রুখতে কংগ্রেস ওই জোটের সরকারকে সমর্থনে বাধ্য হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আর একটি অংশের যুক্তি, কংগ্রেসকে দুর্বল করে বিজেপির সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে তৃণমূল। বিভিন্ন রাজ্যে মমতা যে ভাবে কংগ্রেস ভাঙিয়ে নিজের দলকে বাড়াচ্ছেন, তাতে আখেরে লাভ হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদেরই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy