Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Medical Studies

মেলেনি সুযোগ, তাই ফের ইউক্রেনের পথে

ইউক্রেন থেকে দেশে ফেরা সহজ ছিল না। দেশ থেকে ফের ইউক্রেন যেতেও রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে। প্রচেত জানিয়েছেন, আগে দিল্লি থেকে কিভে বিমান চলাচল করত। বর্তমানে তা বন্ধ।

An image of Doctor

—প্রতীকী চিত্র।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৭
Share: Save:

যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়া ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন ওঁরা। কিন্তু এ দেশে ডাক্তারি পড়ার কোনও সুরাহা হয়নি। তাই যুদ্ধ শেষ না হলেও ডাক্তারি পড়া শেষ করতে ঝুঁকি নিয়েই ইউক্রেনে ফিরে যাচ্ছেন বহু ভারতীয় পড়ুয়া। সেই তালিকায় আছেন পশ্চিমবঙ্গের কয়েক জনও। তাঁরা জানিয়েছেন, এ দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে হাতেকলমে শিক্ষা কিংবা অবজ়ারভারশিপ-এর সুযোগ মেলেনি। তাই ইউক্রেন যেতে হচ্ছে। সেখানে মেডিক্যাল কলেজগুলি ইতিমধ্যে খুলেও গিয়েছে। এত দিন অনলাইনে ক্লাস চলছিল। কিন্তু নেট মাধ্যমে তো হাতেকলমে শিক্ষার সুযোগ নেই।

বস্তুত, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে ডাক্তারি পড়ুয়ারা দেশে ফেরার পর সাহায্য করেছিল কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার। নানা আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন যে যারা এ দেশে ফিরে এসেছে, তাদের এ রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস বা অবজ়ারভেশনের সুযোগ করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই সুযোগ মিলল না।’’ তবে মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করতে নারাজ তাঁরা। বরং
দুষছেন কেন্দ্রকে।

ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে যাওয়া প্রচেত বন্দ্যোপাধ্যায় বাবা প্রেমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করেছিলেন অনেক। কিন্তু ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল অনুমতি দিল না। আমার ছেলের ষষ্ঠ বছর চলছে। প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস না করতে পারলে ডাক্তারি পাশ করবে কী ভাবে?’’

আর এক পড়ুয়া বিতস্তা গুপ্তর বাবা দেবাশিস গুপ্ত বলছেন, ‘‘ইউক্রেন থেকে ডাক্তারি পাশ করে আসার পরে এ দেশে ডাক্তারি করতে গেলে রেজিস্ট্রেশনের জন্য পরীক্ষা দিতে হয়। সেখানে লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষাও হবে। পড়ার সময়ে হাতেকলমে কাজ না শিখলে এখানে ফিরে তো ডাক্তারি করতে পারবে না।’’

ইউক্রেন থেকে দেশে ফেরা সহজ ছিল না। দেশ থেকে ফের ইউক্রেন যেতেও রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে। প্রচেত জানিয়েছেন, আগে দিল্লি থেকে কিভে বিমান চলাচল করত। বর্তমানে তা বন্ধ। তাই পোল্যান্ড, মলডোভা বা হাঙ্গেরির মতো দেশ হয়ে যেতে হচ্ছে। এ দিকে ভারত থেকে ওই দেশগুলির ট্রানজ়িট ভিসা মিলছে না। তাই প্রথমে কাতার বা দুবাই গিয়ে সেখান থেকে পোল্যান্ড, মলডোভা বা হাঙ্গেরির ট্রানজ়িট ভিসা করতে হচ্ছে। প্রচেত নিজেই মলডোভার ট্রানজ়িট ভিসা পেতে পাঁচ দিন ধরে আবু ধাবির হোটেলে ছিলেন। সেই ভিসা পেলে মলডোভা থেকে বাসে চেপে ইউক্রেনে ঢুকবেন।

এমনই নানা হাঙ্গামা সয়ে কয়েক মাস আগে ইউক্রেনে পৌঁছেছেন বিতস্তা। তাঁর বাবা দেবাশিস বলেন, ‘‘মেয়ে রোজই ফোন করে। ও যেখানে আছে সেখানে যুদ্ধ না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে মাঝে মধ্যেই আলোর ঝলকানি দেখতে পায়। মাঝে মধ্যে সতর্কীকরণের সাইরেন বাজলেই ওদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হস্টেলে চলে যেতে বলা হয়।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE