দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে মনুস্মৃতি যোগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। —ফাইল চিত্র।
মনুস্মৃতি পড়ানো হচ্ছে না দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে। জানিয়ে দিলেন সেখানকার উপাচার্য যোগেশ সিংহ। তিনি জানিয়েছেন, মনুস্মৃতির কিছু অংশ আইনের পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা নাকচ করে দিয়েছেন। শুক্রবার একটি ভিডিয়ো বার্তার মাধ্যমে এই বক্তব্য জানিয়েছেন যোগেশ।
ভিডিয়োয় উপাচার্য বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রস্তাব আনা হয়েছিল। পাঠ্যক্রমে কিছু পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁরা। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, মনুস্মৃতি পাঠ্যক্রমে যোগ করা। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তাবটি খারিজ করে দিয়েছে। অন্য যে পরিবর্তের সুপারিশ করা হয়েছিল, তা-ও খারিজ হয়ে গিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের মনুস্মৃতি পড়ানো হবে না।’’
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষকমণ্ডলীর কোর্স কমিটিতে সম্প্রতি প্রাচীন গ্রন্থ মনুস্মৃতি পড়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। সেই প্রস্তাব যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের কাছে। সে বিষয়ে শুক্রবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বোর্ডের বৈঠক হওয়ার কথা। তার মাঝেই এসেছে উপাচার্যের বিবৃতি।
মনুস্মৃতি পড়ানোর প্রস্তাব কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছে শুনে বিরোধিতায় সরব হয়েছিল দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক টিচার্স ফ্রন্ট (এসডিটিএফ)। তারা এ বিষয়ে উপাচার্যের কাছে চিঠিও লেখে। তাদের বক্তব্য ছিল, মনুস্মৃতি মহিলাদের অধিকারের বিরুদ্ধে সঙ্কীর্ণ এবং দমনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করে। সমাজে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারও স্বীকার করে না। তাই আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার অঙ্গ হতে পারে না এই গ্রন্থ।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন অঞ্জু ওয়ালি টিকু বলেন, ‘‘গ্রন্থটি মহিলাদের এবং তাঁদের শিক্ষার বিরুদ্ধে বলে একটি মতামত ছড়াচ্ছে। তা সঠিক নয়। গ্রন্থটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে— এ কথাও ভুল। এ বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের আলোকপাত করানোর জন্য পাঠ্যক্রম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমরা যদি আমাদের প্রাচীন সাহিত্য না বুঝি, তবে এই কোর্স বিশ্লেষণ করব কী ভাবে?’’
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে মনুস্মৃতি পড়ানোর যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তাতে বলা হয় এলএলবি কোর্সের প্রথম এবং ষষ্ঠ সেমিস্টারে মনুস্মৃতির কিছু অংশ যুক্ত করা হবে। অর্থাৎ, প্রথম বর্ষ এবং তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা তা পড়বেন। জিএন ঝা-এর ‘মনুস্মৃতি উইথ দ্য মনুভাষ্য অফ মেধাতিথি’ এবং টি কৃষ্ণস্বামী আইয়ারের ‘কমেন্টারি অফ মনুস্মৃতি— স্মৃতিচন্দ্রিকা’ পাঠ্যক্রমে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছিল। প্রস্তাব নাকচ করেছেন উপাচার্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy